চার চিকিৎসক বরখাস্ত-অনুপস্থিতদের জন্য সতর্কবার্তা
মাঠপর্যায়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির দায়ে চারজন চিকিৎসককে চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। তাদের তিনজন উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, অন্যজন স্বাস্থ্য অধিদফতরে ছিলেন ওএসডি হিসেবে। শেষোক্তজনের পদবি প্রকৃতপক্ষে ছিল অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি, যার সংক্ষিপ্ত রূপ ওএসডি।
এ পদবিধারীদের প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজ বা দায়িত্ব পালন করতে হয় না, তাদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়া হয়। সাধারণত কোনো সরকারি কর্মকর্তা সম্পর্কে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে কিংবা তিনি ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক রোষের শিকার হলে তাকে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি পদ দেওয়ার রেওয়াজ বহু বছর ধরে চলছে। এমন হতে পারে যে, তিনিও উপজেলা কিংবা অন্য কোনো পদে দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি বলেই ওএসডি হয়েছিলেন। এখন শাস্তি পেলেন, তবে তা শাপে বর হয়েছে কি-না_ সেটা স্পষ্ট নয়। উপজেলার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে যাদের বরখাস্ত করা হয়েছে তাদেরও যথাযথ শাস্তি হয়েছে কি? এমনও হতে পারে যে, তাদের সবাই কিংবা এক বা দু'জন অন্য চাকরি নিয়ে চলে গেছেন। এমনকি দেশের বাইরেও থাকতে পারেন। এ অবস্থায় বরখাস্তের আদেশের কোনো প্রভাব তাদের ওপর পড়বে না। এমন যদি হয়ে থাকে যে কর্মস্থলে অনুপস্থিতির ঘটনা ধরা পড়ার পরপরই তাদের শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, তাহলে এ সংবাদকে ইতিবাচক হিসেবে ধরে নেওয়া যেতেই পারে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসকদের স্বল্প সময়ের জন্য নয়, বরং দিনের পর দিন টানা অনুপস্থিতির আরও ঘটনা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চারজনকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত তাদের জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে। আর যদি অনুপস্থিতির ঘটনা ধরা পড়ার অনেক পড়ে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে হাসি-তামাশা তো করবেই এবং আরও যারা একই ধরনের অন্যায় করে চলেছে তারা বার্তা পাবে যে সরকারি হাসপাতালে নিয়ম লঙ্ঘন করলে কার্যত কোনো শাস্তি হয় না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের নিয়মিত হাজির করাতে প্রকৃতই আগ্রহী থাকেন, তাহলে তাদের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে এবং এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যার প্রতিক্রিয়া হয় তাৎক্ষণিক।
No comments