রেহনুমা আহমেদের রক্ত রাজপথে by লুৎফর রহমান রনো
রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলেই ক্ষমতামদমত্ত হয়ে ওঠে যে কেউ; থাকে না হিতাহিত বিবেচনাবোধ_এ কথাটা কি ১৪ জুন প্রমাণ করল বা দেশবাসীকে পুনর্বার মনে করিয়ে দিল মহাজোট সরকার! আমরা মর্মাহত, আমরা হতবাক! পুলিশ কি জানে না, যাঁদের লাঠিপেটা করছে তাঁরা সরকারি দলের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতালোভী বিরোধী রাজনৈতিক কোনো দলের নেতা-কর্মী নন?
তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক ও সচেতন ছাত্রসমাজ। যাঁরা কখনো আত্মস্বার্থ রক্ষা বা অবৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য, টেন্ডার-চাঁদাবাজি প্রভৃতির সুবিধালাভের জন্য মিছিলে শামিল হননি। গণতান্ত্রিক অধিকারের সুবিধায় শুধু কি রাজনৈতিক দলগুলো মিছিল-মিটিং করবে? মূলত রাজনৈতিক দলগুলো যেসব ইস্যু নিয়ে রাস্তায় মিছিল করে, ভাঙচুর করে এবং গাড়ি-বাড়ি পোড়ায়, তারা দেশের স্বার্থে কিছুই করে না, তারা গণতান্ত্রিক অধিকারের সুযোগে যে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, তা নিতান্তই অগণতান্ত্রিক ও দলতান্ত্রিক গুণ্ডামি। তারা তাদের দলকে যেকোনো কিছুর বিনিময়ে, এমনকি প্রয়োজনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের নেতা-কর্মীদের লাশের ওপর দিয়ে হলেও ক্ষমতার কেন্দ্রে পেঁৗছতে চায়। কারণ এ দেশে ক্ষমতায় আরোহণ করা আর আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া প্রায় সমার্থক। যা খুশি চাই সবই পাই...। দেশের মানুষও রাজনীতির এই ক্ষমতা কাড়াকাড়ির নোংরা সংস্কৃতি, লুটপাটের উৎসব দেখতে দেখতে আজ অন্ধ। দেশ ও জাতির সম্পদ, মর্যাদা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়ে নানা ধরনের কালো ধান্ধা করে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করে, দেশে-বিদেশে ভোগবিলাসী জীবন যাপন করে তথাকথিত রাজনীতিকরা_এসব জনগণ খুব জানে আজকাল। তাই বিএনপি হরতাল ডাকে, মধ্যবর্তী নির্বাচন চায়, যুক্তিহীন-ভিত্তিহীন কারণে-অকারণে আন্দোলনের ভয় দেখায়, সংসদে বসে না কখনো (এত দীর্ঘ সময় বিনা স্বার্থে কোথাও বসে থাকাই তাদের জন্য কষ্টকর)। সবাই বোঝে তারা ক্ষমতাছাড়া হওয়ার পর অর্থনৈতিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। 'রাজা-রানি-শাহজাদা'র মর্যাদা পাচ্ছে না ১৬ কোটি 'প্রজা'র কাছে। তাই ভালো লাগছে না জীবনটা। আর তাই তাদের এই 'অহেতুক' হরতাল-মার্চ-আন্দোলন চলতে থাকবে।
বিএনপি আন্দোলন করছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের বিরুদ্ধে। তা তো করবেই, কারণ কোনো সরকারের নির্বাচন কমিশনের আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিরোধী দলকে 'কারচুপি'র মাধ্যমে পরাজিত করে দেওয়ার দুর্ভাবনা থাকা স্বাভাবিক। তারা যে করেই হোক ক্ষমতা চায়...।
দেশের মানুষের কথা, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং এর সদ্ব্যবহারের নিশ্চয়তা, খনিজ সম্পদের বিনিময়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভাবনা উলি্লখিত রাজনৈতিক দলগুলো করে না। এসব দলীয় সরকারও করে না। সরকার গঠন করে যে দল, যেকোনো কিছুর বিনিময়ে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশক্তির সমর্থন নিয়ে বাধা-বিপত্তিহীনভাবে ক্ষমতা চর্চা করে যেতে চায়। মার্কিন বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টিও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়াও নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব নয়। আর আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয় রপ্তানিমুখী মডেল পিএসসি ২০০৮ চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে মার্কিন দুই কম্পানি কনোকো ও ফিলিপসকে ৮০ শতাংশ মালিকানা ও রপ্তানি বিধানসহ বঙ্গোপসাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লক ইজারা দিতে। অল্প কথায় বলা যায়, এ দুই কম্পানির কাছে প্রায় বিনা মূল্যে গ্যাস-তেলের খনিগুলো (ওই এলাকার) বিক্রি করে দেওয়া। এই চুক্তির ফলে আমাদের দেশের কোনো আয়-উন্নতি হবে না_বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরং ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সে দেশের কম্পানি ইজারা নেবে, তার স্বার্থে তার দেশের যেকোনো নৌযান, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি আসবে। তাতে তেল যাবে, খনি শূন্য হবে, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘি্নতও হতে পারে। সচেতন ছাত্র-শিক্ষক ও জনগণের কথা_বিনা কারণে, জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কেন তাহলে এই চুক্তি হবে? আর এ বিষয়টি সরকারকে বুঝিয়ে শুধরিয়ে দেওয়ার সৎ সাহস ও নাগরিক দায়িত্ববোধ নিয়ে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকারবলে শান্তিপূর্ণভাবে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ করতে যাচ্ছিলেন বরেণ্য অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ ও বিশিষ্ট শিক্ষক, গবেষক রেহনুমা আহমেদ। তাঁরা খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃত্বে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে পথ ধরে যাচ্ছিলেন। যদিও কোনো রাজনৈতিক দল নয়, কিন্তু তাঁদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পেছনে শান্তিকামী ১৬ কোটি মানুষের স্বার্থ নিহিত।
আমরা বিস্মিত সরকারের এমন অপরিণামদর্শী পুলিশি প্রতিরোধ ও নির্যাতনের স্পর্ধা দেখে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বরাবরই জ্ঞানীগুণীর কদর করেন, জানি এবং অনেকের কাছে এমন কথা শুনেছিও। কিন্তু তিনি কি জানেন না রাজধানীর রাজপথে শিক্ষকদের পেটানো হলো নির্মমভাবে। তাঁরা ক্ষমতা দখলের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো দল নয়। তাহলে এ আচরণ কেন?
লেখক : সাংবাদিক
বিএনপি আন্দোলন করছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের বিরুদ্ধে। তা তো করবেই, কারণ কোনো সরকারের নির্বাচন কমিশনের আওতায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিরোধী দলকে 'কারচুপি'র মাধ্যমে পরাজিত করে দেওয়ার দুর্ভাবনা থাকা স্বাভাবিক। তারা যে করেই হোক ক্ষমতা চায়...।
দেশের মানুষের কথা, দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা এবং এর সদ্ব্যবহারের নিশ্চয়তা, খনিজ সম্পদের বিনিময়ে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভাবনা উলি্লখিত রাজনৈতিক দলগুলো করে না। এসব দলীয় সরকারও করে না। সরকার গঠন করে যে দল, যেকোনো কিছুর বিনিময়ে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশক্তির সমর্থন নিয়ে বাধা-বিপত্তিহীনভাবে ক্ষমতা চর্চা করে যেতে চায়। মার্কিন বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টিও বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়াও নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব নয়। আর আমাদের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয় রপ্তানিমুখী মডেল পিএসসি ২০০৮ চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে মার্কিন দুই কম্পানি কনোকো ও ফিলিপসকে ৮০ শতাংশ মালিকানা ও রপ্তানি বিধানসহ বঙ্গোপসাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লক ইজারা দিতে। অল্প কথায় বলা যায়, এ দুই কম্পানির কাছে প্রায় বিনা মূল্যে গ্যাস-তেলের খনিগুলো (ওই এলাকার) বিক্রি করে দেওয়া। এই চুক্তির ফলে আমাদের দেশের কোনো আয়-উন্নতি হবে না_বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরং ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সে দেশের কম্পানি ইজারা নেবে, তার স্বার্থে তার দেশের যেকোনো নৌযান, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি আসবে। তাতে তেল যাবে, খনি শূন্য হবে, জাতীয় নিরাপত্তা বিঘি্নতও হতে পারে। সচেতন ছাত্র-শিক্ষক ও জনগণের কথা_বিনা কারণে, জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে কেন তাহলে এই চুক্তি হবে? আর এ বিষয়টি সরকারকে বুঝিয়ে শুধরিয়ে দেওয়ার সৎ সাহস ও নাগরিক দায়িত্ববোধ নিয়ে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকারবলে শান্তিপূর্ণভাবে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ করতে যাচ্ছিলেন বরেণ্য অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ ও বিশিষ্ট শিক্ষক, গবেষক রেহনুমা আহমেদ। তাঁরা খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃত্বে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে পথ ধরে যাচ্ছিলেন। যদিও কোনো রাজনৈতিক দল নয়, কিন্তু তাঁদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পেছনে শান্তিকামী ১৬ কোটি মানুষের স্বার্থ নিহিত।
আমরা বিস্মিত সরকারের এমন অপরিণামদর্শী পুলিশি প্রতিরোধ ও নির্যাতনের স্পর্ধা দেখে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বরাবরই জ্ঞানীগুণীর কদর করেন, জানি এবং অনেকের কাছে এমন কথা শুনেছিও। কিন্তু তিনি কি জানেন না রাজধানীর রাজপথে শিক্ষকদের পেটানো হলো নির্মমভাবে। তাঁরা ক্ষমতা দখলের প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো দল নয়। তাহলে এ আচরণ কেন?
লেখক : সাংবাদিক
No comments