রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পের উদ্বৃত্ত জমি-বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠায় সহায়ক

প্রাইভেটাইজেশন কমিশন রাষ্ট্রায়ত্ত ৩৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত প্রায় ১৩ হাজার একর জমি বেসরকারি খাতে লিজ দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। বৃহস্পতিবার এ সম্পর্কে সমকালের তৃতীয় পৃষ্ঠায় 'রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত জমি বেসরকারি খাতে দেওয়ার প্রস্তাব' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে এসব উদ্বৃত্ত জমি দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের লিজ দিয়ে রাষ্ট্র দু'ভাবে উপকৃত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


৩৫ বছর মেয়াদি লিজ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে হাজার কোটি টাকার বেশি সরকারি কোষাগারে জমা পড়তে পারে। আর এসব জমিতে শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণ, প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান ও শিল্প উৎপাদনে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। এসব জমি যেসব বেসরকারি বিনিয়োগকারী লিজ নেবেন তাদের নতুন করে গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইনের জন্য ধরনা দিতে হবে না বিধায় এগুলোতে বিনিয়োগ আকর্ষণীয়। তবে জমিগুলো যারা লিজ নেবেন তারা যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেগুলোতে অঙ্গীকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট শিল্প স্থাপন করেন সে বিষয়টা নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে যারা বেসরকারিকরণের সুযোগ নিয়ে সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়েছেন তাদের কেউ কেউ সেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান চালাননি, এমনকি শিল্পের জমিও অনেকে বিক্রি করে দিয়ে বিত্ত-বৈভব গড়েছেন। এবার নিশ্চয়ই প্রাইভেটাইজেশন কমিশন রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত জমি বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাবের সঙ্গে এ জমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে কী করে সে বিষয়টিও হিসাবে নিয়েছেন। তবে প্রতিযোগিতামূলক বাজারদরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এসব জমির দাম নির্ধারণ করে লিজ দিতে হবে। যারা এসব জমি লিজের জন্য আবেদন করবেন তারা শিল্প গড়ার মতো আর্থিকভাবে সক্ষম কি-না অথবা তাদের সে ধরনের কর্ম অভিজ্ঞতা রয়েছে কি-না, এসব বিষয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত প্রায় ১৩ হাজার একর জমি দেশি-বিদেশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের লিজ দেওয়ার যে সুপারিশ প্রাইভেটাইজেশন কমিশন করেছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। এসব জমি লিজ দেওয়ার পর যাতে সেখানে দ্রুত শিল্প স্থাপন করা হয় সেটা অবশ্যই সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.