বাজেট ও প্রতিরক্ষা খাত by লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান (অব.)

২০১১-১২ সালের জাতীয় বাজেট আর কয়েক দিন পর জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, এবারের বাজেট গত বছরের জাতীয় ইতিহাসের সর্বোচ্চ বাজেটের আয়তনও ছাড়িয়ে যাবে। এক কোটি ৬৫ লাখ কোটি টাকার বিশাল বাজেট নাকি আসছে। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে দেখছি, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক (Macro Economics) অবস্থা ভঙ্গুর।


কৃষি ও রপ্তানি খাত বাদে অন্যান্য খাতে আশাপ্রদ এমন কিছু দেখা যাচ্ছে না। জাতীয় প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) আশানুরূপ হবে না, অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ক্ষেত্রেও আশার বাণী অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় কতটুকু জোরালো থাকবে, তা নিয়েও সন্দেহ আছে। জাতীয় বাজেটের জন্য আজ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, আমি মনে করি, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি। এ কথা অনস্বীকার্য, মূল্যস্ফীতির বল্গাহীন অশ্ব দ্রুতবেগে ধাবমান। ইতিমধ্যে তা দুই ডিজিটে পেঁৗছে গেছে। সাধারণ সূচক ১০ শতাংশ হলেও খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩.১৪ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি সাধারণ মানুষ, দরিদ্র, মধ্যবিত্ত, চাকরিজীবী ও বেকারদের জীবন দুর্বিষহ করে ফেলেছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডলার ও ভারতীয় রুপির বিপরীতে টাকার মান ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। দেশের শেয়ারবাজারে ক্রমাগত ধস নেমেই চলেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। সরকার গঠিত শেয়ার ধসসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, সাম্প্রতিক শেয়ার কেলেঙ্কারিতে ২০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্যাংকের তারল্য সংকট। ব্যাংকগুলো থেকে প্রচুর অতিরিক্ত ঋণ গ্যাস ও বিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে দেওয়া হয়েছে। এসব ঋণ বহুলাংশেই স্থানান্তরিত (diverted) হয়েছে। ঋণের বাজারে এখন এক ভীষণ বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারল্য সংকট এত ভয়াবহ যে ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা নিজেদের গচ্ছিত অর্থও অনেক সময় তুলতে পারছেন না। বিদেশি বিনিয়োগ অনেক আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের কাজে অত্যন্ত মন্থর গতি। রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমতে কমতে থেমে গেছে। উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অস্থিরতা আমাদের প্রবাসী রেমিট্যান্সের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এত প্রতিকূল পরিবেশের বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সর্বকালের সর্ববৃহৎ বাজেট অর্থমন্ত্রী মহান সংসদে উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন।
সরকারের উচিত হবে বাজেটকে বাস্তবসম্মত রাখা, শূন্যে অট্টালিকা তৈরি না করে স্বীয় অর্থনীতির ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে তাকে শক্তিশালী করা। সরকারের উচিত হবে, তার নির্বাচনী ইশতেহারে উলি্লখিত দুর্নীতির মূলোৎপাটনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তৎপর হওয়া। উচিত হবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকাণ্ড বেগবান করা, দুদককে কার্যকর ও শক্তিশালী করা। বিস্মিত হই, যখন দেখি দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বারবার অসহায়ভাবে খেদোক্তি করে বলেন, 'দুদক ইতিমধ্যে দন্তহীন ব্যাঘ্রে পরিণত হয়েছে। তার থাবার নখরগুলোও ছেঁটে ফেলা হয়েছে।' সরকারের প্রয়োজন, জাতীয় ও সমাজজীবনে আজ যে ভোগবাদী সংস্কৃতির বিস্তার ঘটছে, বিলাস ও জৌলুসপূর্ণ জীবনে বিত্তবানরা আসক্ত হয়ে গোটা জাতিকে সংক্রমিত করছে, তাকে রোধ করা, সাধারণ জীবনযাপন ও কৃচ্ছ্রসাধনে উৎসাহী করা, জাতীয় পর্যায়ের বিশাল অপচয়গুলো বন্ধ করা। আর এর সূচনা হতে হবে রাষ্ট্রীয় ও সমাজের নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায় থেকে। কয়েক শ মাইল দূরে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকালে দেখি, নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অথবা তাঁর সদ্য পূর্বসূরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তাঁদের নিজ নিজ দলীয় রাজনৈতিক সহকর্মীরা অতি সাধারণ জনগণের মধ্যে থেকেই তাদের মতোই অতি সাধারণ জীবনযাপন করেন। সততা ও integrity-র মানদণ্ডে প্রশ্নাতীত ও সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকেন।
শোনা যায়, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবারকার বাজেটেও থাকছে। কালো টাকার দৌরাত্ম্য ও তার বৈধকরণের সংসদীয় স্বীকৃতি জাতির জন্য অত্যন্ত ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনবে। এর সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রতিক্রিয়া জাতীয় অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিতে বাধ্য। আজ জাতীয় ও সমাজজীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আমরা দুর্নীতি বিস্তারিত হতে দেখছি। প্রবহমান কালো টাকার বিষাক্ত কালোস্রোত আজকের মৃতপ্রায় বুড়িগঙ্গা নদীর মতো গোটা জাতীয় অর্থনীতিকে হত্যা করছে এবং তা জাতীয় সংসদের স্বীকৃতি নিয়ে, বৈধতা নিয়ে। এটা অনৈতিক, এটা মহা অন্যায়।
জাতীয় বাজেটে অগ্রাধিকার খাতগুলো, আমার মতে, প্রথম কৃষি, দ্বিতীয় শিক্ষা। ১৬ কোটি মানুষ আমাদের দেশে। আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষক। কৃষক বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে। কৃষিতে আমাদের অনেক অর্জন আছে, কিন্তু এখনো অনেক কিছু করার আছে। সম্ভাবনা অনেক। আমাদের কৃষি উৎপাদন চীন, কোরিয়া, ভিয়েতনামসহ আশপাশের দেশগুলোর চেয়ে অনেক কম। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষককে উৎসাহী করতে হবে। কৃষিতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখতে হবে। আরো বাড়াতে হবে। সার, বীজ, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে এবং তার মূল্যে অনেক সাশ্রয় আনতে হবে, সহজলভ্য করতে হবে। উৎপাদিত খাদ্যপণ্যের বিক্রয়মূল্য কৃষক-স্বার্থের অনুকূল হতে হবে। কৃষকের যথেষ্ট রহপবহঃরাব থাকতে হবে।
শিক্ষা : শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাকে আরো ব্যাপক করা আজ জাতীয় প্রয়োজন। আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির সংযোজন অত্যন্ত জরুরি। শ্রীলঙ্কা সার্কভুক্ত একটি দেশ। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের ভীষণ অস্থিরতার মধ্যে থেকেও সেখানে শিক্ষার হার ৯৭ শতাংশ। আমাদের সহস্রাব্দ উন্নয়ন গন্তব্যে ২০১৫ সালের মধ্যে পৌঁছতে হলে সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে। দুর্বার গতির সঞ্চার করতে হবে। দুর্বৃত্তায়িত ও কলুষিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ধুয়ে-মুছে সাফ করতে হবে, পবিত্র করতে হবে। থাকবে না সেখানে সংকীর্ণ রাজনীতির বিষাক্ত পরিবেশ, থাকবে না হানাহানি, সংঘাত আর অস্ত্রের ঝনঝনানি। এটা একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। সুশিক্ষিত, সভ্য ও প্রগতিশীল একটি জাতি নির্মাণে স্পষ্ট এবং দৃঢ় প্রতিশ্রুতি এ বাজেটে আমরা দেখতে চাই।
জাতীয় নিরাপত্তা : বাংলাদেশের ভূগোল, তার ভূ-অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত অবস্থান বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ড তিন দিকেই প্রতিবেশী ভারতবেষ্টিত। চার হাজার ৯৮ কিলোমিটার আমাদের দীর্ঘ সীমান্ত। দেশের মোট আয়তনের বিপরীতে এত দীর্ঘ সীমান্তের দেশ পৃথিবীতে বিরল। সাম্প্রতিক এক মহাদুর্যোগে সীমান্তের অতন্দ্রপ্রহরী ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী বিডিআরের সমগ্র সংগঠন তছনছ হয়ে গেছে। পরিবর্তিত সীমান্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বিজিবি সংগঠিত হচ্ছে। এই নতুন বাহিনীকে একটি পেশাদক্ষ আধা-সামরিক বাহিনীর উৎকর্ষ ও পূর্ণতায় গড়ে তুলতে তাকে লোকবল, আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র এবং সমর সম্ভারে সুসজ্জিত ও সুপ্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে সরকারের বিশেষ মনোযোগ, উদ্যোগ ও তৎপরতার প্রয়োজন। প্রয়োজন বিশাল অঙ্কের রাষ্ট্রীয় বাজেট। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিষয়টি জাতীয় নিরাপত্তার। ভুলে গেলে চলবে না, সীমান্তে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের মানুষ বিএসএফের গুলি খেয়ে নিহত হচ্ছে। সীমান্তে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। অরক্ষিত সীমান্তবাসী নিরাপত্তাহীনতায় বিনিদ্র রজনী যাপন করছে। আশা করি, বিজিবির পুনর্গঠনের বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যে যথাযথ গুরুত্ব পাবে।
বাংলাদেশের মানচিত্রের পুরো দক্ষিণ দিক বিস্তীর্ণ সীমাহীন বঙ্গোপসাগর। আমাদের সমুদ্রসীমা এখনো অনির্ধারিত। ২০১১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘ সমুদ্র আইন সনদ (UNCLOS) বাস্তবায়নের কথা থাকলেও আমরা এখনো গন্তব্যে বেশি দূর অগ্রসর হতে পারিনি। আমাদের প্রতিবেশী দুই উপকূলীয় রাষ্ট্র ভারত ও মিয়ানমার এরই মধ্যে আমাদের সমুদ্রসীমার এক বৃহৎ অংশ অযৌক্তিক ও অন্যায়ভাবে দাবি করে আধিপত্য বিস্তার করছে। আমাদের ২০০ নটিক্যাল মাইল বিস্তৃত বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা (Special Economic Zone, SEZ) ও ৪৫০ নটিক্যাল মাইল বিস্তৃত মহিসোপান (Continental Shelf) এলাকায় আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আমাদের সমুদ্রসম্পদ ইতিমধ্যে লুণ্ঠিত, অরক্ষিত; সামুদ্রিক সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি লঙ্ঘিত। দেশের অবিচ্ছেদ্য তালপট্টি দ্বীপ ভারত কর্তৃক বহু আগেই অধিকৃত। এসবের প্রতিকারে আমাদের প্রয়োজন একটি শক্তিশালী আধুনিক নৌবাহিনী। নৌবাহিনীকে হতে হবে ত্রৈমাত্রিক (three dimensional)। সেখানে থাকবে আপন বিমান শাখায় উড্ডীয়মান বিমান, থাকবে পানিতে ভাসমান আধুনিক যুদ্ধজাহাজের বহর, আর গভীর সমুদ্রে থাকবে সাবমেরিন। দীর্ঘদিন ধরে সব দলেরই সরকারপ্রধানরা বারবার পৌনঃপুনিকভাবে ত্রৈমাত্রিক নৌবাহিনীর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এতটুকুও কর্মকাণ্ড কেউ কোথাও দেখছে না। আমাদের নৌবাহিনী আজ মাত্র উপকূলীয় নৌবাহিনী, সুবিস্তীর্ণ সাগরের নীল জলের নৌবাহিনী (Blue water Navy) নয়। সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব যদি নিশ্চিত করতে হয়, আমাদের মূল্যবান সমুদ্রসম্পদ সুরক্ষিত রাখতে হয় তাহলে আমাদের গোটা বঙ্গোপসাগর দাপিয়ে রাখা, সবাইকে জানান দেওয়া দৃশ্যমান একটি ত্রৈমাত্রিক আধুনিক শক্তিশালী নৌবাহিনী অপরিহার্য। এ বছরের বাজেটে সরকারের এ বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ও দিকনির্দেশনা থাকতে হবে এবং বাজেট বরাদ্দে তা প্রতিফলিত হতে হবে। আমাদের সামরিক বাহিনীর অপর দুই অঙ্গ বাহিনী সেনা ও বিমানকেও যুগোপযোগী, আধুনিক ও শক্তিশালী করা আজ সময়ের দাবি। বাজেটে তারও প্রতিফলন প্রয়োজন। এখানে উল্লেখ করতে চাই, অনেকে সামরিক খাতকে অনুন্নয়ন খাত বলে মিথ্যা প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। এখানে বলা প্রয়োজন, আমাদের সামরিক বাহিনী জাতীয় উন্নয়ন ও উৎপাদনে এক বৃহৎ ভূমিকা পালন করে চলেছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিশ্বের সর্ববৃহৎ সৈন্য প্রদানকারী দেশ হিসেবে নিয়োজিত থেকে বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে চলেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগব্যবস্থা, রাস্তা, সেতু, বাঁধ ইত্যাদি নির্মাণ করছে। এখানে আরো উল্লেখ করতে চাই, গোটা দক্ষিণ এশিয়া তথা এই পুরো অঞ্চলে, তথা বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যার প্রতিরক্ষা ব্যয় সবচেয়ে নিম্ন। জিডিপির মাত্র ১.৫ শতাংশ এবং সমগ্র জাতীয় বাজেটের মাত্র ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীকে বলা যায় বিশ্বের নূন্যতম ব্যয়বহুল (least costly) সামরিক বাহিনী। আশা করি অর্থমন্ত্রী বিষয়টি মনে রাখবেন।

লেখক : সাবেক সেনাপ্রধান

No comments

Powered by Blogger.