সরকারি দলের নোটিশ দিতে কার্পণ্য কেন-স্পিকারের ভর্ৎসনা
বাংলাদেশের জনগণের দুঃখ, তাঁদের নির্বাচিত সংসদে চার-পাঁচ মিনিটে বিল পাস হয়। এ জন্য সম্পাদকীয় কিংবা টক শোতে যদি সত্যিই স্পিকারকে দায়ী করা হয়, তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। স্পিকার আবদুল হামিদ ১৫ ফেব্রুয়ারি এ প্রসঙ্গে যেভাবে আক্ষেপ করেছেন, তা সহজে বোধগম্য। সত্যিই তো, কোরাম সংকটের কারণে স্পিকার ঘণ্টা বাজাতে থাকেন।
তবে আসল প্রশ্ন হলো, নোটিশ কারা দেন? সরকারি দল পারতপক্ষে নোটিশ দেয় না। বিরোধী দল লোকদেখানো নোটিশ দেয়। কিন্তু তাঁরা সংসদে আসেন না।
গত বুধবার সংসদে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন বিল, ২০১২ উত্থাপিত হয়েছিল। এ সময় এ বিলের ওপর আলোচনা করবেন বলে যাঁরা নোটিশ দিয়েছিলেন, তাঁদের কাউকেই স্পিকার খুঁজে পাননি। এমন নয় যে এ রকমের দৃশ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ব্যতিক্রম বাদে এটাই আসলে বর্তমান সংসদের প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্র।
সরকার ও বিরোধী দলের হুটহাট বিল পাস করার সংস্কৃতির সঙ্গে আমরা সুপরিচিত। সে কারণেই পাঁচ মিনিটে কি ৫০ মিনিটে বিল পাস হলো, তা নিয়ে বিরোধী দলের সামান্য শিরঃপীড়া থাকে বা থাকে না। বিরোধী দল ধরেই নিয়েছে, সংসদে যেসব কাজ হয়, বিশেষ করে, যে আইন সৃষ্টি করা হয়, তার দায় শুধু সরকারি দলেরই। বহু ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের বিষয়টি একান্তভাবেই একটি আমলাতান্ত্রিক কর্মযজ্ঞ। মুলতবি নোটিশ দিতে বর্তমান সংসদে বিএনপি ধূর্ততার সঙ্গে একটি গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে ছয় শতাধিক মুলতবি প্রস্তাব দিয়েছেন। অথচ সংসদের ২৫৪ কার্যদিবসে তাঁরা ২০০ দিনই অনুপস্থিত। বুধবারও বিএনপির দুজন ও অপর একজন স্বতন্ত্র সাংসদ বিলের ওপর ২৫টির ওপর নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
তবে সমস্যা হলো, এর দায়দায়িত্ব শুধু বিরোধী দলের ওপর চাপালে অর্ধসত্য বলা হবে। কারণ, সরকারি দলের সাংসদেরা কোরাসের সুরে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত করার যে রেওয়াজ গড়ে তুলেছেন, তাতে সংসদের যে ঐতিহ্যগত ভূমিকা তার কোনো স্বীকৃতি মিলছে না। স্পিকারের কারণে না হলেও সংসদের সময় যে নষ্ট হচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্পিকার অস্বীকার করতে পারবেন না যে কখনো তাঁর চোখের সামনে, কখনো তাঁর পৌরোহিত্যে সংসদে আইন প্রণয়নের নামে এমন সব কাণ্ডকীর্তি চলে, যাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের অনুষঙ্গ বলা যায় না। স্পিকারের ভর্ৎসনা তত দিনই হয়তো হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে থাকবে, যত দিন না জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিরা সংসদে প্রবেশাধিকার পান।
তবে এ মুহূর্তে এ নোটিশ প্রশ্নে স্পিকারের কাছে আমাদের একটি রুলিং পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আছে। বিরোধী দলের প্রসঙ্গ বাদ থাক কিন্তু সরকারি দলের সদস্যরা কেন বিলের ওপর নোটিশ দেন না? আমরা তো আশঙ্কা করি, এটা ৭০ অনুচ্ছেদের কুফল। ৭০-এর একটা অপপ্রয়োগও ঘটছে। কারণ, ৭০ অনুচ্ছেদ ভোটাভুটিতে, বাক্স্বাধীনতায় বাগড়া দেয়নি। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে স্পিকারের একটি উপযুক্ত রুলিং সুফল বয়ে আনতে পারে।
গত বুধবার সংসদে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন বিল, ২০১২ উত্থাপিত হয়েছিল। এ সময় এ বিলের ওপর আলোচনা করবেন বলে যাঁরা নোটিশ দিয়েছিলেন, তাঁদের কাউকেই স্পিকার খুঁজে পাননি। এমন নয় যে এ রকমের দৃশ্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ব্যতিক্রম বাদে এটাই আসলে বর্তমান সংসদের প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্র।
সরকার ও বিরোধী দলের হুটহাট বিল পাস করার সংস্কৃতির সঙ্গে আমরা সুপরিচিত। সে কারণেই পাঁচ মিনিটে কি ৫০ মিনিটে বিল পাস হলো, তা নিয়ে বিরোধী দলের সামান্য শিরঃপীড়া থাকে বা থাকে না। বিরোধী দল ধরেই নিয়েছে, সংসদে যেসব কাজ হয়, বিশেষ করে, যে আইন সৃষ্টি করা হয়, তার দায় শুধু সরকারি দলেরই। বহু ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের বিষয়টি একান্তভাবেই একটি আমলাতান্ত্রিক কর্মযজ্ঞ। মুলতবি নোটিশ দিতে বর্তমান সংসদে বিএনপি ধূর্ততার সঙ্গে একটি গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। তাঁরা বিভিন্ন বিষয়ে ছয় শতাধিক মুলতবি প্রস্তাব দিয়েছেন। অথচ সংসদের ২৫৪ কার্যদিবসে তাঁরা ২০০ দিনই অনুপস্থিত। বুধবারও বিএনপির দুজন ও অপর একজন স্বতন্ত্র সাংসদ বিলের ওপর ২৫টির ওপর নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
তবে সমস্যা হলো, এর দায়দায়িত্ব শুধু বিরোধী দলের ওপর চাপালে অর্ধসত্য বলা হবে। কারণ, সরকারি দলের সাংসদেরা কোরাসের সুরে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত করার যে রেওয়াজ গড়ে তুলেছেন, তাতে সংসদের যে ঐতিহ্যগত ভূমিকা তার কোনো স্বীকৃতি মিলছে না। স্পিকারের কারণে না হলেও সংসদের সময় যে নষ্ট হচ্ছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্পিকার অস্বীকার করতে পারবেন না যে কখনো তাঁর চোখের সামনে, কখনো তাঁর পৌরোহিত্যে সংসদে আইন প্রণয়নের নামে এমন সব কাণ্ডকীর্তি চলে, যাকে সংসদীয় গণতন্ত্রের অনুষঙ্গ বলা যায় না। স্পিকারের ভর্ৎসনা তত দিনই হয়তো হাওয়ায় মিলিয়ে যেতে থাকবে, যত দিন না জনগণের সত্যিকারের প্রতিনিধিরা সংসদে প্রবেশাধিকার পান।
তবে এ মুহূর্তে এ নোটিশ প্রশ্নে স্পিকারের কাছে আমাদের একটি রুলিং পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আছে। বিরোধী দলের প্রসঙ্গ বাদ থাক কিন্তু সরকারি দলের সদস্যরা কেন বিলের ওপর নোটিশ দেন না? আমরা তো আশঙ্কা করি, এটা ৭০ অনুচ্ছেদের কুফল। ৭০-এর একটা অপপ্রয়োগও ঘটছে। কারণ, ৭০ অনুচ্ছেদ ভোটাভুটিতে, বাক্স্বাধীনতায় বাগড়া দেয়নি। আমরা মনে করি, এ বিষয়ে স্পিকারের একটি উপযুক্ত রুলিং সুফল বয়ে আনতে পারে।
No comments