পবিত্র কোরআনের আলো-প্রমাণিত মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হলো
৮৭. আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া; লাইয়াজমাআ'ন্নাকুম ইলা ইয়াওমিল কি্বয়ামাতি লা রাইবা ফীহি; ওয়া মান আসদাক্বু মিনাল্লাহি হাদীছা। ৮৮. ফামা লাকুম ফিল মুনাফিক্বীনা ফিআতাইনি ওয়াল্লাহু আরকাছাহুম্ বিমা কাছাবূ; আতুরীদূনা আন তাহ্দূ মান আদ্বাল্লাল্লাহু; ওয়া মান ইয়ুদ্ব্লিলিল্লাহু ফালান তাজিদা লাহু ছাবীলা।
৮৯. ওয়াদ্দূ লাও তাকফুরূনা কামা কাফারূ ফাতাকূনূনা ছাওয়া-আন ফালা তাত্তাখিযূ মিনহুম আওলিইয়া-আ হাত্তা ইউহা-জিরূ ফী ছাবীলিল্লাহি; ফাইন তাওয়াল্লাও ফাখুযূহুম ওয়াক্বতুলূহুম হাইছু ওয়াজাদতুমূহুম; ওয়ালা তাত্তাখিযূ মিনহুম ওয়ালিয়্যান ওয়ালা-নাসীরা।
[সুরা : আন নিসা, আয়াত : ৮৭-৮৯]
অনুবাদ
৮৭. আল্লাহ এক মহান সত্তা, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই। অবশ্যই তিনি রোজ কিয়ামতে তোমাদের একত্রিত করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এমন কে আছে যে আল্লাহর চেয়ে বেশি সত্য কথা বলতে পারে।
৮৮. এ কী হলো তোমাদের! তোমরা মুনাফিকদের ব্যাপারে দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেলে? স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই তো তাদের কৃতকর্মের পরিণতি হিসেবে তাদের ওপর অভিশাপ নাজিল করেছেন। তোমরা কি মনে করো আল্লাহ তায়ালা নিজে যাদের পথভ্রষ্ট করে দিয়েছেন তাদের তোমরা সঠিক পথে আনতে পারবে? আল্লাহ যাদের পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি কোনো পথ খুঁজে পাবে না।
৮৯. তারা চায় তারা যেভাবে অবাধ্য হয়ে গেছে তোমরাও সেভাবে অবাধ্য হয়ে যাও, তাতে উভয়ে একরকম হয়ে যাবে। সুতরাং তোমরা তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করে। যদি তারা সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, তবে তাদের বন্দি করো এবং (তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে) তাদের যেখানেই পাও সেখানেই হত্যা করো। আর কোনো অবস্থায়ই তাদের কাউকে বন্ধু বা সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করবে না।
ব্যাখ্যা
৮৭. নম্বর আয়াতে আল্লাহর পরিচয় ব্যক্ত করে মুসলমানদের বিশ্বাসের মৌলিক জায়গাগুলো মজবুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহ এক এবং মানুষকে শেষ বিচারের দিনে অবশ্যই তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
৮৮ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, একদল মুনাফিকের প্রসঙ্গ। আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম : মক্কাবাসী কিছু মুশরিক কাফির মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মদিনায় এসে বলল যে আমরা মুসলিম মুহাজির। আমরা কোরাইশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মদিনায় আশ্রয় গ্রহণের জন্য এসেছি। এরপর তারা বাণিজ্যের ভান করে মক্কায় ফিরে যায়। এসব লোকের আসল পরিচয় নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কেউ বলছিল এরা মুনাফিক, আবার কেউ বলছিল এরা মুসলমান। এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিলেন যে এরা মুসলমান নয়, বরং মুনাফিক এবং কাফিরদের সহায়তাকারী মুনাফিক। এ আয়াতে তাদের বন্দি করার এবং যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আয়াতে আরো বলা হয়েছে, বিপথগামীদের সুপথে ফিরে আসার আশা যতই করা হোক, কৃতকর্মের নিয়তি যাদের বিপথগামী করেছে, তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনা যাবে না।
৮৯ নম্বর আয়াতে কাফিরদের নেতিবাচক মনমানসিকতার কথা বলা হয়েছে। কাফিররা চায় যারা ইসলামের আলোর সন্ধান পেয়েছে, তারা আবার কাফের হয়ে যাক। তারা চায় অন্যদেরও তাদের সমান বানাতে। কাফিরদের এ ধরনের মনমানসিকতার কথা জানিয়ে দিয়ে তাদের সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। এদের সঙ্গে কোনো রকম বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে না তোলার এবং এদের কাছ থেকে কোনো রকম সাহায্য-সহযোগিতা না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মুসলমানদের। কথিত আছে, এদের একদল লোক সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে রাসুলের কাছে এসে হাজির হয়েছিল। এদের সঙ্গে সন্ধি হয়েছিল এই শর্তে যে তারা মুসলমানদের প্রতিপক্ষকে সাহায্য করবে না এবং কোরাইশরা ইসলাম গ্রহণ করলে তারাও ইসলাম গ্রহণ করবে। এ পরিস্থিতিতেই আয়াতটি নাজিল হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আন নিসা, আয়াত : ৮৭-৮৯]
অনুবাদ
৮৭. আল্লাহ এক মহান সত্তা, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই। অবশ্যই তিনি রোজ কিয়ামতে তোমাদের একত্রিত করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এমন কে আছে যে আল্লাহর চেয়ে বেশি সত্য কথা বলতে পারে।
৮৮. এ কী হলো তোমাদের! তোমরা মুনাফিকদের ব্যাপারে দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেলে? স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই তো তাদের কৃতকর্মের পরিণতি হিসেবে তাদের ওপর অভিশাপ নাজিল করেছেন। তোমরা কি মনে করো আল্লাহ তায়ালা নিজে যাদের পথভ্রষ্ট করে দিয়েছেন তাদের তোমরা সঠিক পথে আনতে পারবে? আল্লাহ যাদের পথভ্রষ্ট করেন তাদের জন্য তুমি কোনো পথ খুঁজে পাবে না।
৮৯. তারা চায় তারা যেভাবে অবাধ্য হয়ে গেছে তোমরাও সেভাবে অবাধ্য হয়ে যাও, তাতে উভয়ে একরকম হয়ে যাবে। সুতরাং তোমরা তাদের মধ্য থেকে কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করে। যদি তারা সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, তবে তাদের বন্দি করো এবং (তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে) তাদের যেখানেই পাও সেখানেই হত্যা করো। আর কোনো অবস্থায়ই তাদের কাউকে বন্ধু বা সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করবে না।
ব্যাখ্যা
৮৭. নম্বর আয়াতে আল্লাহর পরিচয় ব্যক্ত করে মুসলমানদের বিশ্বাসের মৌলিক জায়গাগুলো মজবুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহ এক এবং মানুষকে শেষ বিচারের দিনে অবশ্যই তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
৮৮ নম্বর আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, একদল মুনাফিকের প্রসঙ্গ। আয়াতটির শানেনুজুল এ রকম : মক্কাবাসী কিছু মুশরিক কাফির মুসলমানদের ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মদিনায় এসে বলল যে আমরা মুসলিম মুহাজির। আমরা কোরাইশদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মদিনায় আশ্রয় গ্রহণের জন্য এসেছি। এরপর তারা বাণিজ্যের ভান করে মক্কায় ফিরে যায়। এসব লোকের আসল পরিচয় নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। কেউ বলছিল এরা মুনাফিক, আবার কেউ বলছিল এরা মুসলমান। এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দিলেন যে এরা মুসলমান নয়, বরং মুনাফিক এবং কাফিরদের সহায়তাকারী মুনাফিক। এ আয়াতে তাদের বন্দি করার এবং যেখানে পাওয়া যায় সেখানেই হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ আয়াতে আরো বলা হয়েছে, বিপথগামীদের সুপথে ফিরে আসার আশা যতই করা হোক, কৃতকর্মের নিয়তি যাদের বিপথগামী করেছে, তাদের সুপথে ফিরিয়ে আনা যাবে না।
৮৯ নম্বর আয়াতে কাফিরদের নেতিবাচক মনমানসিকতার কথা বলা হয়েছে। কাফিররা চায় যারা ইসলামের আলোর সন্ধান পেয়েছে, তারা আবার কাফের হয়ে যাক। তারা চায় অন্যদেরও তাদের সমান বানাতে। কাফিরদের এ ধরনের মনমানসিকতার কথা জানিয়ে দিয়ে তাদের সম্পর্কে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে। এদের সঙ্গে কোনো রকম বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে না তোলার এবং এদের কাছ থেকে কোনো রকম সাহায্য-সহযোগিতা না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মুসলমানদের। কথিত আছে, এদের একদল লোক সন্ধির প্রস্তাব নিয়ে রাসুলের কাছে এসে হাজির হয়েছিল। এদের সঙ্গে সন্ধি হয়েছিল এই শর্তে যে তারা মুসলমানদের প্রতিপক্ষকে সাহায্য করবে না এবং কোরাইশরা ইসলাম গ্রহণ করলে তারাও ইসলাম গ্রহণ করবে। এ পরিস্থিতিতেই আয়াতটি নাজিল হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments