আন্তর্জাতিক রুটে বাংলাদেশের কনটেইনার জাহাজ নেই
আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশি মালিকানাধীন ৫৭টি সাধারণ কর্গো জাহাজ থাকলেও কোনো কনটেইনার জাহাজ নেই। দেশীয় মালিকানাধীন যে পাঁচটি কনটেইনার জাহাজ ছিল সেগুলোও প্রত্যাহার করা হয়েছে বিভিন্ন রুট থেকে। গত আড়াই বছরে দেশীয় মালিকানাধীন ৩৩টি জাহাজ পণ্য পরিবহনে যুক্ত হলেও কোনো নতুন কনটেইনার জাহাজ এই বহরে আসেনি।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও কলম্বো রুটে কোনো দেশীয় কনটেইনার জাহাজ না থাকায় বিদেশি জাহাজ মালিকদের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে দেশীয় আমদানি ও রপ্তানিকারকদের।
পণ্য পরিবহন খাতে ডলারে জাহাজ ভাড়া পরিশোধ করতে গিয়ে কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশে।
দেশীয় ব্যবসায়ীদের এই ব্যবসায় সফল হওয়ার ব্যাপক সুযোগ থাকলেও কনটেইনার জাহাজ কেনার প্রতি কোনো ঝোঁক দেখা যায়নি। অথচ দেশীয় শিপিং ব্যবসায়ীরা বিদেশিদের সঙ্গে যৌথভাবে ৪০টি কনটেইনার জাহাজ দিয়ে ফিডার সার্ভিস অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে চালাচ্ছেন।
সরকারি সংস্থা নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ২০০৫ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত জাহাজের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪টি। আর ২০০৯ থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ৩৩টি জাহাজের। অর্থাৎ জাহাজ ব্যবসায় অনেক বাংলাদেশি বিনিয়োগ করছেন। তা সত্ত্বেও কোনো কনটেইনার জাহাজ এই বহরে যুক্ত হয়নি।
জানতে চাইলে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫৭টি দেশি জাহাজের মধ্যে একটিও কনটেইনার জাহাজ নেই। সরকারিভাবে এ ব্যবসাকে প্রসারিত করতে সহায়তা দেওয়া হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
জানা যায়, গত অর্থবছরে পণ্য পরিবহন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। নৌ-বাণিজ্য ফি আদায় হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। বছরে প্রতিটি জাহাজ থেকে বিভিন্ন ধরনের ফি বাবদ আয় হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা করে। কর্মসংস্থান হয়েছে ৭৫০-এরও বেশি ক্যাপ্টেন, অফিসার ও নাবিকের।
দেশীয় মালিকানাধীন একমাত্র এইচআরসি শিপিং কম্পানির পাঁচটি কনটেইনার জাহাজ ফিডার সার্ভিস হিসেবে বিভিন্ন সময়ে চলাচল করলেও বর্তমানে এগুলো বিভিন্ন জটিলতার কারণে সচল নেই। বেশ কয়েকটি জাহাজের মেরামত কাজ চলছে। এ বিষয়ে এইচআরসি শিপিং কম্পানির কর্মকর্তা আবদুল মোমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'লজিস্টিক সাপোর্ট, জাহাজ পরিচালনার লোকবলসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে আমরা এই ব্যবসায় ভালো নেই। তবে চাইলে এ ব্যবসায় সফল হওয়া যায় এর প্রমাণ এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি।' কনটেইনার ব্যবসার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নতুনভাবে কাজ শুরু করছেন বলে জানান তিনি।
দেশে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ১৩টি জাহাজের মালিক ব্রেভ রয়েল শিপ ম্যানেজমেন্ট কম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মেহরুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে কার্গো জাহাজ কেনার প্রতি কম্পানির ঝোঁক বেশি। এ জন্য কনটেইনার জাহাজ কেনার প্রতি আমাদের খুব একটা আগ্রহ নেই।' তবে তিনি নিশ্চিত করে বলেন, কনটেইনার পরিবহন ব্যবসায়ও বাংলাদেশিরা খুব ভালো করবেন। কেননা বিদেশি মালিকানাধীন জাহাজ মালিকদের সঙ্গে যৌথভাবে বেশ ভালো ব্যবসা করছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে যে ১৪ লাখ ৭০ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে সেগুলো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশের বন্দরে পেঁৗছার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম বন্দরের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বড় জাহাজ বা মাদার ভ্যাসেল জেটিতে ভিড়ে না, আর মাদার ভ্যাসেলগুলো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে চলাচল করে। এ কারণে চট্টগ্রাম থেকে মাঝারি মানের জাহাজ বা ফিডার ভ্যাসেলে করে কনটেইনার মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে জাহাজ মালিকরা কনটেইনার পরিবহন করে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আটটি ফিডার অপারেটর ৪০টি ফিডার ভ্যাসেল দিয়ে এই কনটেইনার পরিবহন করায় পরিবহন ভাড়া বাবদ কোটি কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এখন প্রতিবছর প্রায় চার কোটি টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ। দেশের এই বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য এখন ১৪ লাখ ১২ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৫৭টি জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজের সংখ্যা ১৩। এই ১৩টি জাহাজের ধারণক্ষমতা এক লাখ ৯৬ হাজার টন। বাকি ১২ লাখ ১৬ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৪৪টি জাহাজ হলো বেসরকারি মালিকানাধীন।
দেশীয় ব্যবসায়ীদের এই ব্যবসায় সফল হওয়ার ব্যাপক সুযোগ থাকলেও কনটেইনার জাহাজ কেনার প্রতি কোনো ঝোঁক দেখা যায়নি। অথচ দেশীয় শিপিং ব্যবসায়ীরা বিদেশিদের সঙ্গে যৌথভাবে ৪০টি কনটেইনার জাহাজ দিয়ে ফিডার সার্ভিস অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে চালাচ্ছেন।
সরকারি সংস্থা নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ২০০৫ সাল পর্যন্ত নিবন্ধিত জাহাজের সংখ্যা ছিল মাত্র ২৪টি। আর ২০০৯ থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে ৩৩টি জাহাজের। অর্থাৎ জাহাজ ব্যবসায় অনেক বাংলাদেশি বিনিয়োগ করছেন। তা সত্ত্বেও কোনো কনটেইনার জাহাজ এই বহরে যুক্ত হয়নি।
জানতে চাইলে নৌ-বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ৫৭টি দেশি জাহাজের মধ্যে একটিও কনটেইনার জাহাজ নেই। সরকারিভাবে এ ব্যবসাকে প্রসারিত করতে সহায়তা দেওয়া হলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
জানা যায়, গত অর্থবছরে পণ্য পরিবহন খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। নৌ-বাণিজ্য ফি আদায় হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। বছরে প্রতিটি জাহাজ থেকে বিভিন্ন ধরনের ফি বাবদ আয় হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা করে। কর্মসংস্থান হয়েছে ৭৫০-এরও বেশি ক্যাপ্টেন, অফিসার ও নাবিকের।
দেশীয় মালিকানাধীন একমাত্র এইচআরসি শিপিং কম্পানির পাঁচটি কনটেইনার জাহাজ ফিডার সার্ভিস হিসেবে বিভিন্ন সময়ে চলাচল করলেও বর্তমানে এগুলো বিভিন্ন জটিলতার কারণে সচল নেই। বেশ কয়েকটি জাহাজের মেরামত কাজ চলছে। এ বিষয়ে এইচআরসি শিপিং কম্পানির কর্মকর্তা আবদুল মোমিন কালের কণ্ঠকে বলেন, 'লজিস্টিক সাপোর্ট, জাহাজ পরিচালনার লোকবলসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে আমরা এই ব্যবসায় ভালো নেই। তবে চাইলে এ ব্যবসায় সফল হওয়া যায় এর প্রমাণ এরই মধ্যে আমরা পেয়েছি।' কনটেইনার ব্যবসার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে নতুনভাবে কাজ শুরু করছেন বলে জানান তিনি।
দেশে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ১৩টি জাহাজের মালিক ব্রেভ রয়েল শিপ ম্যানেজমেন্ট কম্পানি। এ প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন মেহরুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সিমেন্ট উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে কার্গো জাহাজ কেনার প্রতি কম্পানির ঝোঁক বেশি। এ জন্য কনটেইনার জাহাজ কেনার প্রতি আমাদের খুব একটা আগ্রহ নেই।' তবে তিনি নিশ্চিত করে বলেন, কনটেইনার পরিবহন ব্যবসায়ও বাংলাদেশিরা খুব ভালো করবেন। কেননা বিদেশি মালিকানাধীন জাহাজ মালিকদের সঙ্গে যৌথভাবে বেশ ভালো ব্যবসা করছেন দেশের ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে বছরে যে ১৪ লাখ ৭০ হাজার কনটেইনার পরিবহন হয়েছে সেগুলো চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশের বন্দরে পেঁৗছার কোনো সুযোগ নেই। চট্টগ্রাম বন্দরের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বড় জাহাজ বা মাদার ভ্যাসেল জেটিতে ভিড়ে না, আর মাদার ভ্যাসেলগুলো মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে চলাচল করে। এ কারণে চট্টগ্রাম থেকে মাঝারি মানের জাহাজ বা ফিডার ভ্যাসেলে করে কনটেইনার মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কার বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সরাসরি বিভিন্ন দেশে জাহাজ মালিকরা কনটেইনার পরিবহন করে থাকে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আটটি ফিডার অপারেটর ৪০টি ফিডার ভ্যাসেল দিয়ে এই কনটেইনার পরিবহন করায় পরিবহন ভাড়া বাবদ কোটি কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এখন প্রতিবছর প্রায় চার কোটি টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ। দেশের এই বিপুল পরিমাণ পণ্যসামগ্রী পরিবহনের জন্য এখন ১৪ লাখ ১২ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৫৭টি জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজের সংখ্যা ১৩। এই ১৩টি জাহাজের ধারণক্ষমতা এক লাখ ৯৬ হাজার টন। বাকি ১২ লাখ ১৬ হাজার টন ধারণক্ষমতার ৪৪টি জাহাজ হলো বেসরকারি মালিকানাধীন।
No comments