ছাত্রলীগ নেতা সাজু হত্যার নেপথ্যে
সিরাজুল ইসলাম: ছাত্রলীগ নেতা সাজেদুর রহমান সাজু হত্যাকাণ্ডে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান খোকন এবং স্থানীয় গডফাদার কাইল্যা আমিরসহ ৫টি গ্রুপ জড়িত। ৬ মাস আগে যারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যা করেছে তারই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সাজুর পিতা স্থানীয় বিচার কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান সাঈদসহ পরবারের অন্য সদস্যরা এমনটাই অভিযোগ করেছেন। সরেজমিন সাজুর পূর্ব পৃষ্ঠা ১৭ কলাম ১
জুরাইনের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত লোকের ভিড়। পুত্রশোকে কাতর পিতা সাঈদ। নির্বাক স্ত্রী মনি। ৩ বছরের কন্যাশিশু জেরিনের করুণ আর্তি- বাবা কোথায়। সাজুর পিতা জানান, আওয়ামী লীগ ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের কারাবন্দি সাধারণ সম্পাদক রায়হান খোকনের ভাড়াটে কিলার কাইল্যা আমীর, অনিক, তানভীর এবং ইকবালসহ ৭-৮ জন মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। মাস ছয়েক আগে মেয়ের বিয়ে দাওয়াত দিতে যাওয়ার সময় এরাই নিজ গাড়িতে মোহাম্মদ উল্লাহ ও তার গাড়িচালক নূরুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ওই গাড়িতে সাজুরও থাকার কথা ছিল। অন্য একটি জরুরি কাজের কারণে সাজু ওইদিন মোহাম্মদ উল্লাহর সঙ্গে যেতে পারেননি। এ কারণে ভাগ্যগুণে ওইদিন বেঁচে যায় সাজু। তিনি জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নূর হোসেন, মোহাম্মদ উল্লাহ এবং রায়হান খোকন- এ তিনজনই সামনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। আমি এবং আমার ছেলে মোহাম্মদ ওল্লাহর পক্ষে ছিলাম। সাজু খুবই জনপ্রিয় ছিল। সাজু ডাক দিলে অনেক লোক সাড়া দেয়। তার মিছিলে হাজার হাজার লোক দেখে ক্ষুব্ধ হয় রায়হান খোকন। একদিন সাজুকে রায়হান খোকন তার গ্রুপে যোগ দিতে বলে। রাজি হয়নি সাজু। এর কয়েক দিন পরই খোকন জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায়। মোহাম্মদ উল্লাহ নিহত হওয়ার পর আমরা যোগ দিই নূর হোসেনের গ্রুপে। এতে রায়হান আরও ক্ষুব্ধ হয়। এরই মধ্যে ৩ বার সাজুকে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমাদের কাছে আগেই খবর চলে আসায় তারা সফল হতে পারেনি। মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যার এক সপ্তাহ আগে খোরশেদ আলী লেনের শেষ মাথায় তারা অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সাজুকে হত্যা করতে। ২ জন মহিলা এসে আমাকে বিষয়টি জানায়। আমি সাজুকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। স্থানীয় এমপিও বিষয়টি জানেন। এরপরও ওইদিন সাজুর ওপর হামলা করা হয়। সতর্ক থাকার কারণে সাজু গুলিবিদ্ধ হয়নি। আহত হয় ২ জন পথচারি। দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পায় সাজু। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রায়হান খোকনের কর্মী লিটনকে ধরে ফেলে। থানার ওসি আইয়ুবুর রহমানকে ম্যানেজ করে রায়হান খোকন তার গ্রেপ্তারকৃত কর্মীকে ছাড়িয়ে আনে। পরে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা করতে মোহাম্মদ উল্লাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি মেয়ের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় তখন সমঝোতা হয়নি। পরেতো মোহাম্মদ উল্লাহকেই মেরে ফেলা হলো। মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যার পর রায়হান খোকনের কর্মী শরীফকে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই পিস্তলটি সাজুকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই কেনা হয় বলে শরিফ স্বীকারোক্তি দেয়। একই মামলায় রায়হান খোকন কারাগারে থাকলেও শরীফ এখন জামিনে রয়েছে।
ঘটনাস্থল হাজী খোরশেদ আলী লেনের চটতলা মাঠ। স্থানটি মাঠ নামে পরিচিত হলেও প্রকৃত অর্থে এটাকে মাঠ বলা যায় না। দেড় কাঠা আয়তনের জায়গা। চারপাশে ভবন। লেনের একপাশ দিয়ে ৫০-৬০ ফুটের একটি গলি দিয়ে সেখানে ঢুকতে হয়। এজন্য পার হতে হয় দু’টি গেট। গতকাল বেলা ১২টার দিকে লেনে ঢুকতেই দেখা যায় মানুষের ভিড়। দেখা যায় মাঠের চারদিকে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। রক্ত লেগে আছে গলির দেয়ালেও। রক্ত দেখা যায় মাঠে থাকা কাঁঠাল গাছেও। মাঠে রয়েছে ২-৩টি বেঞ্চ। বেঞ্চে রয়েছে রক্তমাখা তলোয়ার। সাজু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছিল ওই তলোয়ারটিও। মাঠের এক কোণে রয়েছে একটি চৌকি। সেখানে বসে সব সময় আড্ডা দেয় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। মাঠে দাঁড়িয়ে সাজুর ভাগ্নি জামাই সাইফুল ইসলাম জানান, গত ৮-১০ দিন ধরে এ চাটতলা মাঠে সন্ধ্যার দিকে রেকেট খেলতে আসেন সাজেদুর রহমান সাজু। খেলার সময় গেটটি ভেতর থেকে বন্ধ রাখা হয়। গতকাল তার সঙ্গে রেকেট খেলছিল র্যাব-১০ এর ২ জন সদস্য। তারা চলে যাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর একজন লোক মাঠে প্রবেশ করে। তাকে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। আমিসহ কয়েক জন বসে খেলা দেখছিলাম। আমি রাজিব নামে একজনকে বলি গেটটি বন্ধ করে দিতে। রাজির গেটের কাছে যেতেই ৪-৫ জন লোক গেটে সজোরে লাথি দেয়। রাজিব ছিটকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ৭-৮ জন মাঠে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে ছিল চাপাতি, তলোয়ার, ককটেল, রাম দা এবং রিভলবার। রিভলবার ছিল ৪টি। রাম দা ৩টি। ঢুকেই তারা ককটেল বিস্ফোরণ শুরু করে। যারা খেলা দেখছিল তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এরপর সন্ত্রাসীরা সাজুকে এলাপাতাড়ি কোপাতে থাকে। সাজু তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চায়। পুরো মাঠে ছটফট করে দৌড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে বাইরে যেতে গলিতে ঢুকে পড়ে সাজু। সেখানেও সশস্ত্র অবস্থায় ২০-২৫ জন ছিল। তারা সাজুকে দেখেই গুলি করে। সাজু আবারও মাঠে ঢুকে। পালানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সাজু মাঠের কাঁঠাল গাছে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। সেখানে তাকে ৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ দেয়া হয় ২০-২৫টি।
সাজুর ভাই সান্টু অভিযোগ করেন- বিষয়টি নিয়ে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে। অন্য দিন ২-১ ঘণ্টা পর পর পুলিশ এ এলাকায় টহল দিত। ঘটনার দিন টহল পুলিশ ছিল না। ঘটনার অনেক পর পুলিশ এসে কোন আলামত জব্দ না করেই চলে যান। ঘটনা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার হলেও ডিবি পুলিশ আসে রাত সাড়ে ১১টায়। ডিবি পুলিশ এসে ছুরি এবং ককটেলের খোসা উদ্ধার করে। আজ দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলে তলোয়ার পড়েছিল। পরে পুলিশকে খবর দিয়ে সেটা উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়। সাজুর মা সুমী জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছে সাজু। খুনিদের সবাই চেনে। তারা একই মহল্লার। এখনই নাম বলব না। মামলায় সবার নাম উল্লেখ করব। এদিকে গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোন মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে এমপি সানজিদা খনম জানান, সাজু আমার অধীনেই রাজনীতি করতো। ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে গিয়েছি। আমি বুঝতে পারছি না কেন এ ঘটনা ঘটলো। তবে বিষয়টি নিয়ে রায়হান খোকন, কাইল্যা আমীর এবং অনিকদের সন্দেহ করা হচ্ছে। মামলা এবং তদন্তের পর আসল ঘটনা বুঝা যাবে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর হোসেন জানান, বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর এবং সেনসেটিভ। সুষ্ঠু তদন্তের পরই কিছু বলতে পারব।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার গাজী মোজাম্মেল হক বিষয়টিকে রাজনৈতিক ক্লেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাজু পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার নামে ৭-৮টি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, কাইল্যা আমীর একজন গডফাদার। তিনি পলাতক। তাকেসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক আগে কাইল্যা আমীরের এক ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জুরাইনের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, শত শত লোকের ভিড়। পুত্রশোকে কাতর পিতা সাঈদ। নির্বাক স্ত্রী মনি। ৩ বছরের কন্যাশিশু জেরিনের করুণ আর্তি- বাবা কোথায়। সাজুর পিতা জানান, আওয়ামী লীগ ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডের কারাবন্দি সাধারণ সম্পাদক রায়হান খোকনের ভাড়াটে কিলার কাইল্যা আমীর, অনিক, তানভীর এবং ইকবালসহ ৭-৮ জন মিলে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। মাস ছয়েক আগে মেয়ের বিয়ে দাওয়াত দিতে যাওয়ার সময় এরাই নিজ গাড়িতে মোহাম্মদ উল্লাহ ও তার গাড়িচালক নূরুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ওই গাড়িতে সাজুরও থাকার কথা ছিল। অন্য একটি জরুরি কাজের কারণে সাজু ওইদিন মোহাম্মদ উল্লাহর সঙ্গে যেতে পারেননি। এ কারণে ভাগ্যগুণে ওইদিন বেঁচে যায় সাজু। তিনি জানান, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নূর হোসেন, মোহাম্মদ উল্লাহ এবং রায়হান খোকন- এ তিনজনই সামনের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী। আমি এবং আমার ছেলে মোহাম্মদ ওল্লাহর পক্ষে ছিলাম। সাজু খুবই জনপ্রিয় ছিল। সাজু ডাক দিলে অনেক লোক সাড়া দেয়। তার মিছিলে হাজার হাজার লোক দেখে ক্ষুব্ধ হয় রায়হান খোকন। একদিন সাজুকে রায়হান খোকন তার গ্রুপে যোগ দিতে বলে। রাজি হয়নি সাজু। এর কয়েক দিন পরই খোকন জোড়া খুনের ঘটনা ঘটায়। মোহাম্মদ উল্লাহ নিহত হওয়ার পর আমরা যোগ দিই নূর হোসেনের গ্রুপে। এতে রায়হান আরও ক্ষুব্ধ হয়। এরই মধ্যে ৩ বার সাজুকে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমাদের কাছে আগেই খবর চলে আসায় তারা সফল হতে পারেনি। মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যার এক সপ্তাহ আগে খোরশেদ আলী লেনের শেষ মাথায় তারা অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সাজুকে হত্যা করতে। ২ জন মহিলা এসে আমাকে বিষয়টি জানায়। আমি সাজুকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। স্থানীয় এমপিও বিষয়টি জানেন। এরপরও ওইদিন সাজুর ওপর হামলা করা হয়। সতর্ক থাকার কারণে সাজু গুলিবিদ্ধ হয়নি। আহত হয় ২ জন পথচারি। দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পায় সাজু। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রায়হান খোকনের কর্মী লিটনকে ধরে ফেলে। থানার ওসি আইয়ুবুর রহমানকে ম্যানেজ করে রায়হান খোকন তার গ্রেপ্তারকৃত কর্মীকে ছাড়িয়ে আনে। পরে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা করতে মোহাম্মদ উল্লাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি মেয়ের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় তখন সমঝোতা হয়নি। পরেতো মোহাম্মদ উল্লাহকেই মেরে ফেলা হলো। মোহাম্মদ উল্লাহকে হত্যার পর রায়হান খোকনের কর্মী শরীফকে পিস্তলসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই পিস্তলটি সাজুকে হত্যা করার উদ্দেশ্যেই কেনা হয় বলে শরিফ স্বীকারোক্তি দেয়। একই মামলায় রায়হান খোকন কারাগারে থাকলেও শরীফ এখন জামিনে রয়েছে।
ঘটনাস্থল হাজী খোরশেদ আলী লেনের চটতলা মাঠ। স্থানটি মাঠ নামে পরিচিত হলেও প্রকৃত অর্থে এটাকে মাঠ বলা যায় না। দেড় কাঠা আয়তনের জায়গা। চারপাশে ভবন। লেনের একপাশ দিয়ে ৫০-৬০ ফুটের একটি গলি দিয়ে সেখানে ঢুকতে হয়। এজন্য পার হতে হয় দু’টি গেট। গতকাল বেলা ১২টার দিকে লেনে ঢুকতেই দেখা যায় মানুষের ভিড়। দেখা যায় মাঠের চারদিকে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। রক্ত লেগে আছে গলির দেয়ালেও। রক্ত দেখা যায় মাঠে থাকা কাঁঠাল গাছেও। মাঠে রয়েছে ২-৩টি বেঞ্চ। বেঞ্চে রয়েছে রক্তমাখা তলোয়ার। সাজু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা হয়েছিল ওই তলোয়ারটিও। মাঠের এক কোণে রয়েছে একটি চৌকি। সেখানে বসে সব সময় আড্ডা দেয় স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। মাঠে দাঁড়িয়ে সাজুর ভাগ্নি জামাই সাইফুল ইসলাম জানান, গত ৮-১০ দিন ধরে এ চাটতলা মাঠে সন্ধ্যার দিকে রেকেট খেলতে আসেন সাজেদুর রহমান সাজু। খেলার সময় গেটটি ভেতর থেকে বন্ধ রাখা হয়। গতকাল তার সঙ্গে রেকেট খেলছিল র্যাব-১০ এর ২ জন সদস্য। তারা চলে যাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর একজন লোক মাঠে প্রবেশ করে। তাকে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। আমিসহ কয়েক জন বসে খেলা দেখছিলাম। আমি রাজিব নামে একজনকে বলি গেটটি বন্ধ করে দিতে। রাজির গেটের কাছে যেতেই ৪-৫ জন লোক গেটে সজোরে লাথি দেয়। রাজিব ছিটকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ৭-৮ জন মাঠে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে ছিল চাপাতি, তলোয়ার, ককটেল, রাম দা এবং রিভলবার। রিভলবার ছিল ৪টি। রাম দা ৩টি। ঢুকেই তারা ককটেল বিস্ফোরণ শুরু করে। যারা খেলা দেখছিল তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। এরপর সন্ত্রাসীরা সাজুকে এলাপাতাড়ি কোপাতে থাকে। সাজু তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চায়। পুরো মাঠে ছটফট করে দৌড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে বাইরে যেতে গলিতে ঢুকে পড়ে সাজু। সেখানেও সশস্ত্র অবস্থায় ২০-২৫ জন ছিল। তারা সাজুকে দেখেই গুলি করে। সাজু আবারও মাঠে ঢুকে। পালানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সাজু মাঠের কাঁঠাল গাছে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায়। সেখানে তাকে ৬ রাউন্ড গুলি করা হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপ দেয়া হয় ২০-২৫টি।
সাজুর ভাই সান্টু অভিযোগ করেন- বিষয়টি নিয়ে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে। অন্য দিন ২-১ ঘণ্টা পর পর পুলিশ এ এলাকায় টহল দিত। ঘটনার দিন টহল পুলিশ ছিল না। ঘটনার অনেক পর পুলিশ এসে কোন আলামত জব্দ না করেই চলে যান। ঘটনা সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার হলেও ডিবি পুলিশ আসে রাত সাড়ে ১১টায়। ডিবি পুলিশ এসে ছুরি এবং ককটেলের খোসা উদ্ধার করে। আজ দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলে তলোয়ার পড়েছিল। পরে পুলিশকে খবর দিয়ে সেটা উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হয়। সাজুর মা সুমী জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বলি হয়েছে সাজু। খুনিদের সবাই চেনে। তারা একই মহল্লার। এখনই নাম বলব না। মামলায় সবার নাম উল্লেখ করব। এদিকে গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত এ বিষয়ে থানায় কোন মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে এমপি সানজিদা খনম জানান, সাজু আমার অধীনেই রাজনীতি করতো। ঘটনার পর হাসপাতালে ছুটে গিয়েছি। আমি বুঝতে পারছি না কেন এ ঘটনা ঘটলো। তবে বিষয়টি নিয়ে রায়হান খোকন, কাইল্যা আমীর এবং অনিকদের সন্দেহ করা হচ্ছে। মামলা এবং তদন্তের পর আসল ঘটনা বুঝা যাবে। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর হোসেন জানান, বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর এবং সেনসেটিভ। সুষ্ঠু তদন্তের পরই কিছু বলতে পারব।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার গাজী মোজাম্মেল হক বিষয়টিকে রাজনৈতিক ক্লেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সাজু পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার নামে ৭-৮টি মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, কাইল্যা আমীর একজন গডফাদার। তিনি পলাতক। তাকেসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি জানান, সপ্তাহ খানেক আগে কাইল্যা আমীরের এক ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
No comments