ব্যাংকের এটিএম বুথ-আধুনিক প্রযুক্তিতেও ভোগান্তি?
ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে যে কোনো সময় এবং ছুটির দিনেও টাকা তোলা যায় বলে দেশে এ পদ্ধতি ব্যবহারকারীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক এটিএম বুথের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি করে চলেছে তেমনি রাজধানী ছাড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরেও এ সেবা প্রসারিত করছে। কিন্তু নির্ঝঞ্ঝাটভাবে সব সময় কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলা যায় না।
আবার কোথাও কোথাও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বুথের মেশিন অচল থাকে বলে অনেক গ্রাহক নিজের সঞ্চিত অর্থ সময়মতো উত্তোলন করতে পারেন না। কখনও কখনও নির্দিষ্ট বুথে অর্থ না থাকার ঘটনাও ঘটে। এসব কারণে গ্রাহকরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। গত শনিবার সমকালে এ সংক্রান্ত রিপোর্টে অন্তত দুটি ব্যাংকের কয়েকটি বুথে গ্রাহকরা অর্থ তুলতে না পেরে ঈদ উপলক্ষে কী ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়েছেন তার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এতে নির্দিষ্ট ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে যোগাযোগ করেও গ্রাহকরা সমস্যার কোনো কিনারা করতে পারেননি এবং কোথাও কোথাও কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি বলে তারা অভিযোগ করেছেন। অথচ এটিএম বুথ ব্যবহারকারীদের কার্ডপ্রতি তাদের নির্দিষ্ট অঙ্কের চার্জ গুনতে হয়। শুধু এটিএম বুথের সুবিধাটুকু পাবেন বলেই গ্রাহকরা আমানত থেকে সুদ লাভের আর্থিক লাভটুকু ছাড় দেন। অথচ এর বিনিময়ে তারা যদি প্রত্যাশিত সেবা না পান তাহলে ব্যাংকের কাছ থেকে তার জবাব কী? দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির গতি ঊর্ধ্বমুখী হলে মধ্যবিত্তের সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। তখন এটিএম বুথ ব্যবহারের প্রবণতা আরও বাড়বে। তাই বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উচিত তাদের এটিএম বুথগুলো যেন সার্বক্ষণিকভাবে সচল থাকে, এগুলোতে যেন প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান থাকে এবং প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে টাকা ভরে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায়_ তা নিশ্চিত করা। গ্রাহকদের সুবিধা নিশ্চিত করার ওপরই ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ব্যাংক-গ্রাহক ত্বরিত ও আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার জন্যই, ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য নয়। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উচিত তাদের এটিএম বুথগুলো গ্রাহকসেবা প্রদানে সার্বক্ষণিকভাবে সচল ও কার্যকর রাখা। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে যেন আধুনিক প্রযুক্তির প্রতি মানুষের আকর্ষণ না কমে।
No comments