স্বাস্থ্যসেবার ক্রমবিবর্ণ চিত্র by ড. মুহাম্মদ আশকার ইবনে শাইখ
নিকট অতীতে কালের কণ্ঠে 'ডাক্তারদের দলবাজিতে বেতাল হাসপাতাল' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি নতুন করে দেশের স্বাস্থ্যসেবাসংক্রান্ত আরো কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সচেতন মানুষ মাত্রেরই জানা আছে, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে 'ড্যাব' নামক চিকিৎসকদের সংগঠনটির কারো কারো নেতিবাচক কর্মকাণ্ড কী পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু বর্তমান মহাজোট সরকারের আমলেও এর কি কোনো পরিবর্তন হয়েছে? না, হয়নি।
কারণ 'স্বাচিপ' নামের চিকিৎসকদের সংগঠনের কারো কারো অনৈতিক, স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ড এখনো দৃষ্টিকটুভাবে পরিলক্ষিত হয়। দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশের চিকিৎসাসেবা নিয়ে এমনিতেই রয়েছে অন্তহীন প্রশ্ন। রাষ্ট্র কিংবা সরকার মানুষের অন্যতম এই মৌলিক অধিকার ভোগ করার রাস্তা প্রশস্ত তো করতে পারেইনি, কণ্টকমুক্তও করতে পারেনি। এ দেশের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র বড় বেশি বিবর্ণ। দেশের মানুষের কাছে এ এক চরম তিক্ত অভিজ্ঞতা। দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর বিড়ম্বনা অন্তহীন। বেসরকারি পর্যায়ে দেশের চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত ও উন্নত হয়েছে সত্য; কিন্তু সাধারণ মানুষের পক্ষে তাদের মাধ্যমে এই সেবা গ্রহণ করা দুরূহ। তা ছাড়া দুঃখজনক হলেও সত্য, এ দেশে চিকিৎসাসেবার নামে অনেক ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হচ্ছে রমরমা বাণিজ্য এবং অধিকাংশ মানুষ খুব অসহায়ভাবে এর শিকার। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের চিকিৎসাক্ষেত্রে মানবতাবোধসম্পন্ন অনেক চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন, যাঁরা চিকিৎসাকে সেবামূলক পেশা হিসেবেই গ্রহণ করেছেন এবং যথাযথ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অনেক নিষ্ঠাবান। কিন্তু সেই সঙ্গে এ প্রশ্নও ওঠে, তাঁদের সংখ্যা কত? জবাব খুবই পীড়াদায়ক।
কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে চিত্রিত হয়েছিল কিভাবে 'স্বাচিপ' নামের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনেক চিকিৎসক নিজেদের দায়বদ্ধতার পাট চুকিয়ে দলবাজি করে হীনস্বার্থ চরিতার্থকরণের জন্য উন্মত্ত। তাঁদের দলবাজির কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্র ক্রমবিবর্ণ হচ্ছে এবং এর চরম বিরূপ প্রভাব পড়ছে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। মানুষ খুব সংগত কারণেই দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। অসংখ্য মানুষ বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাড়ি জমাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এমনটি কোনোভাবেই শুভপ্রদ চিত্র নয় এবং দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকরও বটে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ইতিমধ্যে বহুবার চিকিৎসকদের তাঁদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব-কর্তব্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি এও বলেছেন, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কারোরই হেলাফেলা কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা সহ্য করা হবে না। কিন্তু তার পরও হেলাফেলা কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা যে বন্ধ হয়নি, কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনই এর সাক্ষ্য বহন করছে। প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা অনেকেই আমলে নিচ্ছেন না। যেমন নিচ্ছেন না ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ দলের অন্য অঙ্গ-সংগঠনের স্বেচ্ছাচারী নেতা-কর্মীরা। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়_এও নতুন করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। সরকার সাংবিধানিকভাবে তা নিশ্চিত করতে বাধ্য। বর্তমান সরকার সে প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে বটে; কিন্তু দলীয় কিছু ক্ষমতাবান ও স্বেচ্ছাচারী চিকিৎসকের কারণে এর সুফল মিলছে না।
নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান চিত্র আমলে নিয়ে সরকারের অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যে দেশের সিংহভাগ মানুষের নুন আনতে পান্থা ফুরায় সে দেশের চিত্র যদি এই হয়, তাহলে সামগ্রিক চিত্র কতটা বিবর্ণ, উদ্বেগজনক ও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে এরও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। চিকিৎসকদের দলবাজি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা যে মন্তব্য (কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনেই প্রকাশ) করেছেন তাও অনভিপ্রেত। এই সরকার গণতান্ত্রিকভাবে বিপুল জনরায়ে নির্বাচিত একটি সরকার। আর এ জন্যই এ সরকারের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা আরো বেশি। যে নেতিবাচক বাস্তবতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে এর সমূলে উৎপাটন প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে সবকিছু করতে হবে অনেক কিছুর ঊধর্ে্ব ওঠে। এ জন্য কঠোর হওয়ার কোনোই বিকল্প নেই। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্র নয়, সরকারের কোনো স্তরেই কারোরই দলবাজির কোনো অবকাশ নেই। সরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মানও উন্নত করতে হবে সার্বিক প্রয়োজনেই। মানুষের অধিকার নিয়ে কারোরই হেলাফেলা করার কোনো সুযোগ নেই এবং কোনোভাবে তা উচিতও নয়। এ দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ বিষয়গুলো আরো বেশি জরুরি।
আমাদের সীমাবদ্ধতার দাগটি অত্যন্ত মোটা। শুধু নেই আর নেই। এই সীমিত সম্পদ ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে (অবশ্য সব খাতের চিত্রই তো প্রায় একই রকম) যে বরাদ্দ দেওয়া হয় এরও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি। ১০ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকে প্রকাশ, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে দালালচক্রের অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এটি একটি মাত্র দৃষ্টান্ত। অনিয়ম, অব্যবস্থা, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার আরো নজির আছে। মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে ব্যবসার ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে আসছে। মানবিক মূল্যবোধ আর নৈতিক অবক্ষয়ের এসব চিত্র নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। যাঁরা বক্রপথে নিয়োগ পেয়েছেন বা পাবেন তাঁরা তো কাজে যোগ দিয়ে সর্বাগ্রে তাঁদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন_এটিই খুব স্বাভাবিক। এই অমানিশা কাটবে কবে?
দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ও সেবার মানে ঘাটতি কতটা প্রকট এর সাক্ষ্য মেলে বিদ্যমান পরিস্থিতির মধ্যেই। পাশাপাশি দেশে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের উদ্বেগজনক তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে। আমরা একটি সমৃদ্ধ জাতি ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। ভেজাল ওষুধ, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসকদের (আবারও বলি এ অভিযোগ সব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নয়) নীতিহীন কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো জাতি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। চিকিৎসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন যেসব উৎকট চিত্র মিডিয়ায় উন্মোচিত হচ্ছে, তা সভ্যতা ও মানবতার কলঙ্ক। জনসম্পদ একটি দেশের মূল সম্পদ। অন্য সব প্রাকৃতিক ও বস্তুগত সম্পদকে জনগণের স্বার্থে কাজে লাগানোর প্রধান শর্তই হচ্ছে সুস্থ ও নিরাপদ নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কিছু মানুষ নামধারী প্রাণীর নৈতিক স্খলন আর লোভ সব সম্ভাবনার গলা টিপে ধরছে। কোনো সভ্য সমাজের চিত্র এমনটি হতে পারে না। সরকার যত দ্রুত এ বিষয়ে ভাববে ততই মঙ্গল। চিকিৎসার নামে স্বেচ্ছাচারিতা এবং নীতিহীন বাণিজ্যের মূলোৎপাটন করতেই হবে।
লেখক : লন্ডনপ্রবাসী গবেষক
কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনে চিত্রিত হয়েছিল কিভাবে 'স্বাচিপ' নামের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনেক চিকিৎসক নিজেদের দায়বদ্ধতার পাট চুকিয়ে দলবাজি করে হীনস্বার্থ চরিতার্থকরণের জন্য উন্মত্ত। তাঁদের দলবাজির কারণে সরকারি হাসপাতালগুলোর চিত্র ক্রমবিবর্ণ হচ্ছে এবং এর চরম বিরূপ প্রভাব পড়ছে দেশের সাধারণ মানুষের ওপর। মানুষ খুব সংগত কারণেই দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলছে। অসংখ্য মানুষ বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচানোর তাগিদে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাড়ি জমাচ্ছে চিকিৎসার জন্য। এমনটি কোনোভাবেই শুভপ্রদ চিত্র নয় এবং দেশের মানুষ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকরও বটে। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ইতিমধ্যে বহুবার চিকিৎসকদের তাঁদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব-কর্তব্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তিনি এও বলেছেন, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কারোরই হেলাফেলা কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা সহ্য করা হবে না। কিন্তু তার পরও হেলাফেলা কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা যে বন্ধ হয়নি, কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনই এর সাক্ষ্য বহন করছে। প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তা অনেকেই আমলে নিচ্ছেন না। যেমন নিচ্ছেন না ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগসহ দলের অন্য অঙ্গ-সংগঠনের স্বেচ্ছাচারী নেতা-কর্মীরা। চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়_এও নতুন করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। সরকার সাংবিধানিকভাবে তা নিশ্চিত করতে বাধ্য। বর্তমান সরকার সে প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে বটে; কিন্তু দলীয় কিছু ক্ষমতাবান ও স্বেচ্ছাচারী চিকিৎসকের কারণে এর সুফল মিলছে না।
নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান চিত্র আমলে নিয়ে সরকারের অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। যে দেশের সিংহভাগ মানুষের নুন আনতে পান্থা ফুরায় সে দেশের চিত্র যদি এই হয়, তাহলে সামগ্রিক চিত্র কতটা বিবর্ণ, উদ্বেগজনক ও ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে এরও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। চিকিৎসকদের দলবাজি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যবিষয়ক উপদেষ্টা যে মন্তব্য (কালের কণ্ঠের ওই প্রতিবেদনেই প্রকাশ) করেছেন তাও অনভিপ্রেত। এই সরকার গণতান্ত্রিকভাবে বিপুল জনরায়ে নির্বাচিত একটি সরকার। আর এ জন্যই এ সরকারের দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা আরো বেশি। যে নেতিবাচক বাস্তবতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থে এর সমূলে উৎপাটন প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে সবকিছু করতে হবে অনেক কিছুর ঊধর্ে্ব ওঠে। এ জন্য কঠোর হওয়ার কোনোই বিকল্প নেই। শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্র নয়, সরকারের কোনো স্তরেই কারোরই দলবাজির কোনো অবকাশ নেই। সরকারি পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মানও উন্নত করতে হবে সার্বিক প্রয়োজনেই। মানুষের অধিকার নিয়ে কারোরই হেলাফেলা করার কোনো সুযোগ নেই এবং কোনোভাবে তা উচিতও নয়। এ দেশের বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এ বিষয়গুলো আরো বেশি জরুরি।
আমাদের সীমাবদ্ধতার দাগটি অত্যন্ত মোটা। শুধু নেই আর নেই। এই সীমিত সম্পদ ও সীমাবদ্ধতার মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে (অবশ্য সব খাতের চিত্রই তো প্রায় একই রকম) যে বরাদ্দ দেওয়া হয় এরও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়নি। ১০ সেপ্টেম্বর একটি দৈনিকে প্রকাশ, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে দালালচক্রের অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে এবং এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এটি একটি মাত্র দৃষ্টান্ত। অনিয়ম, অব্যবস্থা, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার আরো নজির আছে। মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে ব্যবসার ভয়াবহ চিত্র বেরিয়ে আসছে। মানবিক মূল্যবোধ আর নৈতিক অবক্ষয়ের এসব চিত্র নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সম্প্রতি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে। যাঁরা বক্রপথে নিয়োগ পেয়েছেন বা পাবেন তাঁরা তো কাজে যোগ দিয়ে সর্বাগ্রে তাঁদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন_এটিই খুব স্বাভাবিক। এই অমানিশা কাটবে কবে?
দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা ও সেবার মানে ঘাটতি কতটা প্রকট এর সাক্ষ্য মেলে বিদ্যমান পরিস্থিতির মধ্যেই। পাশাপাশি দেশে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের উদ্বেগজনক তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে। আমরা একটি সমৃদ্ধ জাতি ও ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। ভেজাল ওষুধ, দুর্বল স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসকদের (আবারও বলি এ অভিযোগ সব চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নয়) নীতিহীন কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো জাতি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। চিকিৎসা-বাণিজ্যের নতুন নতুন যেসব উৎকট চিত্র মিডিয়ায় উন্মোচিত হচ্ছে, তা সভ্যতা ও মানবতার কলঙ্ক। জনসম্পদ একটি দেশের মূল সম্পদ। অন্য সব প্রাকৃতিক ও বস্তুগত সম্পদকে জনগণের স্বার্থে কাজে লাগানোর প্রধান শর্তই হচ্ছে সুস্থ ও নিরাপদ নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কিছু মানুষ নামধারী প্রাণীর নৈতিক স্খলন আর লোভ সব সম্ভাবনার গলা টিপে ধরছে। কোনো সভ্য সমাজের চিত্র এমনটি হতে পারে না। সরকার যত দ্রুত এ বিষয়ে ভাববে ততই মঙ্গল। চিকিৎসার নামে স্বেচ্ছাচারিতা এবং নীতিহীন বাণিজ্যের মূলোৎপাটন করতেই হবে।
লেখক : লন্ডনপ্রবাসী গবেষক
No comments