কীর্তনখোলায় বাঁধ-সব শেষ হওয়ার আগেই থামাতে হবে

কীর্তনখোলা নদীতীরের একটি চরের চারপাশে বাঁধ দিয়ে বালু ফেলে ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। বরিশাল নদীবন্দরের কাছাকাছি এলাকায় আতঙ্কিত হওয়ার মতো এই কাজ চলছে বলে সমকালের খবরে জানা যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন আইন ও পরিবেশবিরোধী কাজ চলা সত্ত্বেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।


বরং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবি্লউটিএ) দুটি বিভাগ দায়িত্ব এড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে। নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের মতে, যেহেতু চরের এলাকাটি বন্দর এলাকার মধ্যে নয় সে কারণে ব্যবস্থা নেবে নৌপথ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগ। কিন্তু নৌপথ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের মতে, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ রশি টানাটানিতে মুমূর্ষুপ্রায় কীর্তনখোলার নদীতীরের চর। অথচ কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে বরিশালের মানুষের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। নদীটির যে চর বালু ফেলে ভরাট করার কাজ চলছে সে চর প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে ডুবে যায়। ফলে এটিকে নদীর বর্ধিত অংশ হিসেবেই ধরে নেওয়া যায়। এভাবে বাঁধ দিয়ে বালু ফেলে আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কীর্তনখোলার জোয়ার-ভাটা। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নদীবন্দর এলাকাসহ বরিশালের নৌপথ। আমরা জানি, ওই অঞ্চলের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম নৌপথ। চর এলাকার প্রায় ৪ একর খাস জায়গা ভরাট করে ফেললে এই নৌপথ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই কীর্তনখোলা নদীর বরিশাল বন্দর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নাব্যতা সংকট চলছে। আমরা মনে করি, এ ব্যাপারে বিআইডবি্লউটিএর দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। খাস জমিকে 'রেকর্ডি' দেখিয়ে চরে বাঁধ দিয়ে আবাসন প্রকল্প করার মতো তুঘলকি কাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বিআইডবি্লউটিএর দুটি বিভাগ দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টায় না থেকে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলেই আশা করছি। জানা গেছে, নগরীর প্রভাবশালী রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা চর ভরাটের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু আইনের কাছে যে সবাই সমান, সেই কথাই আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই।

No comments

Powered by Blogger.