মাগুরা, ঝিনাইদহে ২২ কোটি টাকার দরপত্রে অনিয়মের অভিযোগ
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাড়ে ১০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজের দরপত্র জমা দিতে পারেননি মাগুরার সাধারণ ঠিকাদারেরা। অন্যদিকে ঝিনাইদহে একই অধিদপ্তরের পৌনে ১২ কোটি টাকার উন্নয়নকাজের শিডিউল সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংসদ ও নেতারা এই দুটি দরপত্রের কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। তাঁদের পক্ষে ঝিনাইদহের সন্ত্রাসীরা দরপত্র
জমাদানে বাধা দিয়েছে। এ ব্যাপারে মাগুরার ১১ জন প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, দরপত্র জমাদানের শেষ দিনে গতকাল সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে তাঁদের দরপত্র জমা দিতে দেয়নি।
ঠিকাদারেরা ওই দরপত্র-প্রক্রিয়া বাতিল করে মাগুরায় দরপত্র বিক্রি ও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ অঞ্চলের ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে মাগুরায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা ও একটি কলেজ নির্মাণের প্রাক্কলন ব্যয় ঠিক করা হয় ১০ কোটি ৬৮ লাখ ১৯ হাজার ২২৩ টাকা। ঝিনাইদহ জেলায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছয়টি মাদ্রাসা ও একটি কলেজ নির্মাণের প্রাক্কলন ব্যয় ঠিক করা হয় ১১ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ২২৩ টাকা। কাজগুলোর দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৬ ডিসেম্বর। পরে সময় বাড়িয়ে গতকাল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়।
মাগুরার নুহু দারুল হুদা, সাখাওয়াত হোসেন, মুন্সি আখরোট হোসেনসহ একাধিক ঠিকাদার প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, মাগুরা-ঝিনাইদহ মিলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ অঞ্চল হওয়ায় এত দিন এ দপ্তরে উন্নয়নকাজের দরপত্র আহ্বান করা হলে দুই জেলায় দরপত্র বিক্রি ও জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল। কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম ইদ্রিস চৌধুরী যোগদানের পর থেকে মাগুরার উন্নয়নকাজের দরপত্র ঝিনাইদহে বিক্রি ও জমার নিয়ম চালু করেন। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঝিনাইদহে গিয়ে মাগুরার সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র কেনা বা জমা দেওয়ার সাহস পান না।
মাগুরা রূপায়ণ নির্মাণ সংস্থার স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মিহির লাল কুরি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নানা কায়দা করে মাগুরার উন্নয়নকাজের শিডিউল কিনেছিলাম। কিন্তু আজ (গতকাল) জমা দেওয়ার শেষ দিনে দরপত্র জমা দিতে পারিনি। ঝিনাইদহে ওই দপ্তরে দরপত্র দস্যুদের নিয়োজিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়েছে। আমার মতো সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র কিনেও জমা দিতে পারেননি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহের এক ঠিকাদার প্রথম আলোকে বলেন, মাগুরার উন্নয়নকাজগুলোর শিডিউল অন্তত বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু ঝিনাইদহের কোনো শিডিউলই সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা হয়নি। যাঁরা কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন, তাঁরা নিয়মানুযায়ী কয়েকটি দরপত্র জমা দেবেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী ফুরকান আহমেদ বলেন, ‘মাগুরার ১৫ গ্রুপ কাজের জন্য ১৬৯টি শিডিউল বিক্রি হয়েছে। তবে ঝিনাইদহের কাজের কোনো শিডিউল বিক্রির কথা আমি জানি না।’
ঠিকাদারেরা বলেন, উন্মুক্তভাবে শিডিউল বিক্রি হলে সরকারের প্রায় সোয়া কোটি টাকার সাশ্রয় হতো। এ ছাড়া শিডিউল বিক্রি করা যেত প্রায় কোটি টাকার। ফলে দরপত্র-সন্ত্রাসের কারণে সরকারের প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হলো। তা ছাড়া নির্মাণকাজও হবে নিম্নমানের। কারণ, যাঁরা কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই প্রকৃত ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁরা অনেকেই কাজ বিক্রি করে দেবেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই কাজ নিম্নমানের হবে।
মাগুরার সাধারণ ঠিকাদার শেখ সাহিদুর রহমান ও সেলিম খান প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘মাগুরার এক সাংসদ মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফ হোসেনের ছেলে খুরশিদ হায়দার, আওয়ামী লীগের কর্মী আশরাফুজ্জামান হিসাম এবং এদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মাগুরার কাজগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে শুনেছি। এদের কেউ কাজ করবেন, কেউ ঝিনাইদহের ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দরপত্রের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ঝিনাইদহ থেকে আগেই কাজগুলো ভাগবাটোয়ারা হয়েছে।’
আবু নাসির বাবলুও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘টেন্ডারবাজির সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নই।’
যোগাযোগ করা হলে আশরাফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দরপত্র জমাদানে বাধাদানের বিষয়টি প্রথম শুনলাম। আমি নিজে কোনো বাধা ছাড়াই দরপত্র জমা দিয়েছি। তা ছাড়া নিজের জেলার বাইরে গিয়ে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
খুরশিদ হায়দারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি লাইন কেটে দেন।
যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম ইদ্রিস চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে মাগুরায় দরপত্র বিক্রি ও জমা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
দরপত্র বিক্রি ও জমাদানে বাধার ব্যাপারে প্রকৌশলী ইদ্রিস বলেন, ‘ঝিনাইদহে শিডিউল কম বিক্রি হয়েছে। মাগুরায় ১৫টি কাজের বিপরীতে গড়ে তিন থেকে পাঁচটি দরপত্র জমা পড়েছে। একটা নেগোসিয়েশন হয়েছে। সবাই আছে। কোনো ঝামেলা হয়নি।’
ঠিকাদারেরা ওই দরপত্র-প্রক্রিয়া বাতিল করে মাগুরায় দরপত্র বিক্রি ও জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীর কাছে আবেদন করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ অঞ্চলের ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে মাগুরায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদ্রাসা ও একটি কলেজ নির্মাণের প্রাক্কলন ব্যয় ঠিক করা হয় ১০ কোটি ৬৮ লাখ ১৯ হাজার ২২৩ টাকা। ঝিনাইদহ জেলায় ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছয়টি মাদ্রাসা ও একটি কলেজ নির্মাণের প্রাক্কলন ব্যয় ঠিক করা হয় ১১ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ২২৩ টাকা। কাজগুলোর দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৬ ডিসেম্বর। পরে সময় বাড়িয়ে গতকাল দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়।
মাগুরার নুহু দারুল হুদা, সাখাওয়াত হোসেন, মুন্সি আখরোট হোসেনসহ একাধিক ঠিকাদার প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, মাগুরা-ঝিনাইদহ মিলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ অঞ্চল হওয়ায় এত দিন এ দপ্তরে উন্নয়নকাজের দরপত্র আহ্বান করা হলে দুই জেলায় দরপত্র বিক্রি ও জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল। কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম ইদ্রিস চৌধুরী যোগদানের পর থেকে মাগুরার উন্নয়নকাজের দরপত্র ঝিনাইদহে বিক্রি ও জমার নিয়ম চালু করেন। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঝিনাইদহে গিয়ে মাগুরার সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র কেনা বা জমা দেওয়ার সাহস পান না।
মাগুরা রূপায়ণ নির্মাণ সংস্থার স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মিহির লাল কুরি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নানা কায়দা করে মাগুরার উন্নয়নকাজের শিডিউল কিনেছিলাম। কিন্তু আজ (গতকাল) জমা দেওয়ার শেষ দিনে দরপত্র জমা দিতে পারিনি। ঝিনাইদহে ওই দপ্তরে দরপত্র দস্যুদের নিয়োজিত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়েছে। আমার মতো সাধারণ ঠিকাদারেরা দরপত্র কিনেও জমা দিতে পারেননি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝিনাইদহের এক ঠিকাদার প্রথম আলোকে বলেন, মাগুরার উন্নয়নকাজগুলোর শিডিউল অন্তত বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু ঝিনাইদহের কোনো শিডিউলই সাধারণ ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করা হয়নি। যাঁরা কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছেন, তাঁরা নিয়মানুযায়ী কয়েকটি দরপত্র জমা দেবেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সহকারী ফুরকান আহমেদ বলেন, ‘মাগুরার ১৫ গ্রুপ কাজের জন্য ১৬৯টি শিডিউল বিক্রি হয়েছে। তবে ঝিনাইদহের কাজের কোনো শিডিউল বিক্রির কথা আমি জানি না।’
ঠিকাদারেরা বলেন, উন্মুক্তভাবে শিডিউল বিক্রি হলে সরকারের প্রায় সোয়া কোটি টাকার সাশ্রয় হতো। এ ছাড়া শিডিউল বিক্রি করা যেত প্রায় কোটি টাকার। ফলে দরপত্র-সন্ত্রাসের কারণে সরকারের প্রায় আড়াই কোটি টাকার ক্ষতি হলো। তা ছাড়া নির্মাণকাজও হবে নিম্নমানের। কারণ, যাঁরা কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই প্রকৃত ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তাঁরা অনেকেই কাজ বিক্রি করে দেবেন। ফলে স্বাভাবিক কারণেই কাজ নিম্নমানের হবে।
মাগুরার সাধারণ ঠিকাদার শেখ সাহিদুর রহমান ও সেলিম খান প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ‘মাগুরার এক সাংসদ মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাফ হোসেনের ছেলে খুরশিদ হায়দার, আওয়ামী লীগের কর্মী আশরাফুজ্জামান হিসাম এবং এদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মাগুরার কাজগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে শুনেছি। এদের কেউ কাজ করবেন, কেউ ঝিনাইদহের ঠিকাদারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই দরপত্রের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ঝিনাইদহ থেকে আগেই কাজগুলো ভাগবাটোয়ারা হয়েছে।’
আবু নাসির বাবলুও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘টেন্ডারবাজির সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত নই।’
যোগাযোগ করা হলে আশরাফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দরপত্র জমাদানে বাধাদানের বিষয়টি প্রথম শুনলাম। আমি নিজে কোনো বাধা ছাড়াই দরপত্র জমা দিয়েছি। তা ছাড়া নিজের জেলার বাইরে গিয়ে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’
খুরশিদ হায়দারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি লাইন কেটে দেন।
যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম ইদ্রিস চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তার কারণে মাগুরায় দরপত্র বিক্রি ও জমা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
দরপত্র বিক্রি ও জমাদানে বাধার ব্যাপারে প্রকৌশলী ইদ্রিস বলেন, ‘ঝিনাইদহে শিডিউল কম বিক্রি হয়েছে। মাগুরায় ১৫টি কাজের বিপরীতে গড়ে তিন থেকে পাঁচটি দরপত্র জমা পড়েছে। একটা নেগোসিয়েশন হয়েছে। সবাই আছে। কোনো ঝামেলা হয়নি।’
No comments