সাঈদীর আইনজীবীর মত-সরকারি আনুকূল্যের আশায় সাক্ষী মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আইনজীবী জেরায় আইনগত মতামতে বলেছেন, সুলতান আহমেদ হাওলাদার সরকারি আনুকূল্য লাভের আশায় সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে সাক্ষী বলেছেন, আইনজীবীর এ মত সত্য নয়। সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী সুলতান আহমেদকে গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জেরা করেন আসামিপক্ষের
আইনজীবীরা। জেরার শেষ দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মঞ্জুর আহমেদ আনসারী এ মত দেন। মতামতে তিনি বলেন, সুলতানের কোনো নির্দিষ্ট পেশা নেই। এ জন্য তিনি পিরোজপুরের সাংসদের সুপারিশের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়ে নিয়মিত ভাতা পাওয়ার আশায় এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।
সকালে সাঈদীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রথমে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার জন্য বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে পুরোনো হাইকোর্ট ভবনে স্থাপিত ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুতে সাক্ষী সুলতান আহমেদকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম। তিনি জানতে চান, সাক্ষী তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা কি না। জবাবে সাক্ষী বলেন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সহায়ক ভূমিকা পালনের জন্য তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ এ কে এম এ আউয়ালের সুপারিশ করার কথা সত্য নয়।
মিজানুল জানতে চান, পিরোজপুরের পারেরহাটের কাদের গাজী সাক্ষীর বিরুদ্ধে কলা চুরির একটি মামলা করেছেন এবং নিম্ন আদালতে তাঁর সাজাও হয়েছে, এটা সত্য কি না? জবাবে সাক্ষী বলেন, মামলাটি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে ট্রলার চুরির দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এরপর মিজানুল সাক্ষীকে জবানবন্দি-সংশ্লিষ্ট কয়েকটি প্রশ্ন করেন। তিনি সাক্ষীর কাছে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে নিহত ইব্রাহিম ওরফে কুট্টির পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে সাক্ষী বলেন, ওই পরিবারের কারও বিষয়ে তিনি জানেন না।
এক ঘণ্টার বিরতি দিয়ে বেলা দুইটায় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। এ সময় সাক্ষীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী কফিলউদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, চিথোলিয়া চরে সাক্ষী তাঁর ভাইদের সহযোগিতায় ১০ বিঘা জমি জবরদখল করে রেখেছেন। সাক্ষীর বিরুদ্ধে দেওয়ানি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে সাক্ষী বলেন, এগুলো সঠিক নয়।
বিকেল পৌনে চারটার দিকে সুলতানকে জেরা শেষ হয়। এরপর ট্রাইব্যুনাল ২৭ ডিসেম্বর পঞ্চম সাক্ষীর জবানবন্দির জন্য দিন ধার্য করেন।
No comments