জানুয়ারি থেকে চালু হচ্ছে ইসলামী তহবিল মার্কেট by ওবায়দুল্লাহ রনি
মুদ্রাবাজারে সংকট কাটাতে শিগগিরই চালু হচ্ছে ইসলামিক আন্তঃব্যাংক তহবিল মার্কেট। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী শাখা এ বাজারে লেনদেন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করে অনুমোদনের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে ইসলামিক তহবিল
বাজারের কার্যক্রম শুরু হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক এস কে সুর চৌধুরী সমকালকে বলেন, ইসলামিক আন্তঃব্যাংক ফান্ড মার্কেটের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর যাচাই-বাছাই শেষে নীতিমালাটি তৈরি হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি দিলে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ইসলামী ব্যাংকগুলোর অংশগ্রহণ করানো গেলে চলমান সংকট কমবে বলে তিনি জানান। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তুতকৃত নীতিমালায় বলা হয়েছে, ইসলামিক নিয়ম মেনে পরিচালিত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের শাখাগুলো তাদের উদ্বৃত্ত তহবিল ইসলামী বন্ড ফান্তে দৈনিক ভিত্তিতে হস্তান্তর করতে পারবে। মুদারাবা ভিত্তিতে যে তহবিলের অর্থ লেনদেন হবে। কলমানির আদলে এক রাতের জন্য এটি ধার হিসেবে দেওয়া হবে। যে ব্যাংক ওই অর্থ সরবরাহ করবে তাকে ৩ মাসের মেয়াদি আমানতের সাময়িক মুনাফার হার হিসেবে লভ্যাংশ দেওয়া হবে। আর যে ব্যাংকে এ স্কিম চালু থাকবে না তার ক্ষেত্রে পরবর্তী মেয়াদের সাময়িক মুনাফার হার ব্যবহৃত হবে। যোগাযোগ করা হলে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) ভাইস চেয়ারম্যান ও ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল মান্নান সমকালকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে ইসলামী তহবিল মার্কেট উন্নয়নের জন্য ইসলামী ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে দাবি জানানো হচ্ছে। গভর্নরের দিকনির্দেশনার আলোকে সেটি বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ব্যাংকিং খাতের জন্য তা হবে ঐতিহাসিক ঘটনা। দেশের ইসলামী ব্যাংককে এগিয়ে নিতে এটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, এর আগে ইসলামী ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে লেনদেন করলেও তার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি ছিল না। তবে এখন সেটি পাওয়া গেল।
সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাবাজারের বেশ সংকট চলছে। অর্থের অভাবে অনেক ব্যাংক তার গ্রাহককে চাহিদা অনুপাতে অর্থ জোগান দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ সময়েও বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংকের কাছে বড় অঙ্কের উদ্বৃত্ত অর্থ পড়ে আছে। তবে সুদভিত্তিক পরিচালিত হওয়ায় তারা আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে (কলমানি) অংশ গ্রহণ করতে পারছে না। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে এসব ব্যাংকের পক্ষ থেকে আলাদা মুদ্রাবাজার প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হচ্ছে। ইসলামিক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার প্রতিষ্ঠা হলে আর সে সমস্যা থাকবে না। ওই সময়ে ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী শাখাও এ বাজারে অংশ নিয়ে লেনদেন করতে পারবে। ফলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে।
No comments