বাসভাড়া নিয়ে মালিকদের সেই পুরোনো খেলা! by আনোয়ার হোসেন
#>> ডিজেলের দাম বাড়ায় প্রতি কি.মিতে ভাড়া বাড়ার কথা ৫ পয়সা।
#>> মালিকেরা খুচরা যন্ত্রাংশ, মুনাফা, আনুষঙ্গিক খরচ ধরে আরও বেশি ভাড়া বাড়ানোর চাপ দিচ্ছে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগে পরিবহনমালিকেরা আবারও ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাঁদের অন্য সব দাবি যুক্ত করে বাসভাড়া বাড়িয়ে নিতে চাইছেন। আজ রোববার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে মালিক-শ্রমিকদের বৈঠক হতে পারে।#>> মালিকেরা খুচরা যন্ত্রাংশ, মুনাফা, আনুষঙ্গিক খরচ ধরে আরও বেশি ভাড়া বাড়ানোর চাপ দিচ্ছে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সর্বশেষ ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে অনুপাতিক হারে পরিবহনের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছিল। এতে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে পাঁচ পয়সার মতো বাড়ে। কিন্তু বাসমালিকেরা ডিজেলের বাড়তি মূল্যের সঙ্গে খুচরা যন্ত্রাংশ, মালিকের মুনাফা, আনুষঙ্গিক খরচ ধরে আরও বেশি ভাড়া বাড়ানোর জন্য চাপ দেওয়া শুরু করেছেন।
গত সেপ্টেম্বর মাসেও ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর পর ভাড়া পাঁচ পয়সা বৃদ্ধি করেছিল বিআরটিএ। তখনো বাসমালিকেরা বিআরটিএর ঠিক করে দেওয়া ভাড়া মানেননি। সঙ্গে খুচরা যন্ত্রাংশ, মুনাফা ও আনুষঙ্গিক খরচ জুড়ে দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করার জন্য দর-কষাকষি করেছে এবং নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিজেলের দাম বাড়ার পর বিআরটিএ রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া না বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থাটির যুক্তি, রাজধানীতে চলাচলকারী ৮৫-৯০ ভাগ বাসই সিএনজিচালিত। কারণ, এখন আবার মাত্র ১০ শতাংশ ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ালে তার সুযোগ নিয়ে সিএনজিচালিত বাসেও ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য এবার শুধু ঢাকার বাইরে চলাচলকারী বাসের ভাড়া বাড়ানোর আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নেয় বিআরটিএ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এনায়েত উল্লাহ অনানুষ্ঠানিকভাবে এর বিরোধিতা করেন। তিনি রাজধানীর সব বাসের ভাড়া বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে বিআরটিএ দমে যায়।
এনায়েত উল্লাহ গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ভাড়া নির্ধারণের সঙ্গে ১৬টি বিষয় জড়িত। শুধু জ্বালানির দর বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে দিলে হবে না। আজ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে, সেখানে এটা তুলে ধরবেন তাঁরা। রাজধানীতে বাসের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে তাঁর দাবি, এখন ৩০ শতাংশ বাসই ডিজেলে চলে। তাই এখানেও ভাড়া বাড়াতে হবে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই সরকারের আমলে বরাবরই ভাড়া বৃদ্ধিসংক্রান্ত বৈঠকে নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান উপস্থিত থাকেন। এসব বৈঠকে শাজাহান খান ও মালিকপক্ষের দাবি ও বক্তব্যই প্রাধান্য পেয়ে আসছে। আজকের বৈঠকেও একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। শাজাহান খান শ্রমিক নেতা হলেও তাঁর পরিবারের বাসের ব্যবসা আছে। মন্ত্রীর পরিবারের মালিকানাধীন কনক পরিবহন রাজধানী ঢাকায় এবং ঢাকা-মাদারীপুর পথে সার্বিক পরিবহন চলাচল করে।
কেন ডিজেলচালিত বাস: ২০০৮ সালে রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া নির্ধারণ করার সময় বলা হয়েছিল, এখন থেকে ঢাকায় আর ডিজেলচালিত বাস চলাচল করবে না। ফলে যেসব বাস ডিজেলচালিত ছিল সেগুলো তিন মাসের মধ্যে সিএনজিতে রূপান্তরেরও নির্দেশ দিয়েছিল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, সিএনজি ও ডিজেল দুই ধরনের জ্বালানি দিয়ে চালিত যানবাহন অনেক সময় যাত্রীরা আলাদা করতে পারে না। তাই গ্যাস বা সিএনজি যেকোনো একটার মূল্য বৃদ্ধি পেলে সবাই ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এতে জনপরিবহনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং জনগণ প্রতারিত হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই সিদ্ধান্ত পাশ কাটিয়ে উল্টো ডিজেলচালিত নতুন বাস নামানো হয়। বর্তমান সরকার যতবার গ্যাস বা তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে, ততবারই দুই ধরনের জ্বালানি ব্যবহারকারী যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মহোৎসব হয়েছে। ঢাকার জন্য সরকারের নথিপত্রে ডিজেল বা সিএনজি নামে আলাদা কোনো ভাগ নেই।
গত মে মাসে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া এক লাফে ৩৫ পয়সা বৃদ্ধি করা হয়। সে সময় দূরপাল্লার পথের বাসের ভাড়া বাড়ানো হয় ২২ পয়সা। গত সেপ্টেম্বর মাসে আরেকবার ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়।
বর্তমানে রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৬০ পয়সা এবং মিনিবাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারিত আছে। দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ২০ পয়সা।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান আয়ুবুর রহমান খান গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অন্য সব বিষয় ঠিক থাকলে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিলোমিটারপ্রতি একজন যাত্রীর ভাড়া বৃদ্ধি পাবে পাঁচ পয়সা। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বসেই ভাড়া ঠিক করা হবে।
গত সেপ্টেম্বর মাসেও ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি পাঁচ টাকা বাড়ানোর পর ভাড়া পাঁচ পয়সা বৃদ্ধি করেছিল বিআরটিএ। তখনো বাসমালিকেরা বিআরটিএর ঠিক করে দেওয়া ভাড়া মানেননি। সঙ্গে খুচরা যন্ত্রাংশ, মুনাফা ও আনুষঙ্গিক খরচ জুড়ে দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করার জন্য দর-কষাকষি করেছে এবং নিজেদের ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিজেলের দাম বাড়ার পর বিআরটিএ রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া না বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থাটির যুক্তি, রাজধানীতে চলাচলকারী ৮৫-৯০ ভাগ বাসই সিএনজিচালিত। কারণ, এখন আবার মাত্র ১০ শতাংশ ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ালে তার সুযোগ নিয়ে সিএনজিচালিত বাসেও ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য এবার শুধু ঢাকার বাইরে চলাচলকারী বাসের ভাড়া বাড়ানোর আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নেয় বিআরটিএ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এনায়েত উল্লাহ অনানুষ্ঠানিকভাবে এর বিরোধিতা করেন। তিনি রাজধানীর সব বাসের ভাড়া বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে বিআরটিএ দমে যায়।
এনায়েত উল্লাহ গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ভাড়া নির্ধারণের সঙ্গে ১৬টি বিষয় জড়িত। শুধু জ্বালানির দর বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নিয়ে ভাড়া বাড়িয়ে দিলে হবে না। আজ যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে, সেখানে এটা তুলে ধরবেন তাঁরা। রাজধানীতে বাসের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে তাঁর দাবি, এখন ৩০ শতাংশ বাসই ডিজেলে চলে। তাই এখানেও ভাড়া বাড়াতে হবে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই সরকারের আমলে বরাবরই ভাড়া বৃদ্ধিসংক্রান্ত বৈঠকে নৌপরিবহনমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান উপস্থিত থাকেন। এসব বৈঠকে শাজাহান খান ও মালিকপক্ষের দাবি ও বক্তব্যই প্রাধান্য পেয়ে আসছে। আজকের বৈঠকেও একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। শাজাহান খান শ্রমিক নেতা হলেও তাঁর পরিবারের বাসের ব্যবসা আছে। মন্ত্রীর পরিবারের মালিকানাধীন কনক পরিবহন রাজধানী ঢাকায় এবং ঢাকা-মাদারীপুর পথে সার্বিক পরিবহন চলাচল করে।
কেন ডিজেলচালিত বাস: ২০০৮ সালে রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া নির্ধারণ করার সময় বলা হয়েছিল, এখন থেকে ঢাকায় আর ডিজেলচালিত বাস চলাচল করবে না। ফলে যেসব বাস ডিজেলচালিত ছিল সেগুলো তিন মাসের মধ্যে সিএনজিতে রূপান্তরেরও নির্দেশ দিয়েছিল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, সিএনজি ও ডিজেল দুই ধরনের জ্বালানি দিয়ে চালিত যানবাহন অনেক সময় যাত্রীরা আলাদা করতে পারে না। তাই গ্যাস বা সিএনজি যেকোনো একটার মূল্য বৃদ্ধি পেলে সবাই ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। এতে জনপরিবহনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় এবং জনগণ প্রতারিত হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই সিদ্ধান্ত পাশ কাটিয়ে উল্টো ডিজেলচালিত নতুন বাস নামানো হয়। বর্তমান সরকার যতবার গ্যাস বা তেলের মূল্য বৃদ্ধি করেছে, ততবারই দুই ধরনের জ্বালানি ব্যবহারকারী যানবাহনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মহোৎসব হয়েছে। ঢাকার জন্য সরকারের নথিপত্রে ডিজেল বা সিএনজি নামে আলাদা কোনো ভাগ নেই।
গত মে মাসে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া এক লাফে ৩৫ পয়সা বৃদ্ধি করা হয়। সে সময় দূরপাল্লার পথের বাসের ভাড়া বাড়ানো হয় ২২ পয়সা। গত সেপ্টেম্বর মাসে আরেকবার ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়।
বর্তমানে রাজধানীতে চলাচলকারী বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৬০ পয়সা এবং মিনিবাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারিত আছে। দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি এক টাকা ২০ পয়সা।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান আয়ুবুর রহমান খান গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অন্য সব বিষয় ঠিক থাকলে ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কিলোমিটারপ্রতি একজন যাত্রীর ভাড়া বৃদ্ধি পাবে পাঁচ পয়সা। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বসেই ভাড়া ঠিক করা হবে।
No comments