শিশুর ডায়াবেটিসে করণীয়
বিশ্বজুড়ে ১৫ বছরের নিচে ৭০ হাজার শিশু প্রতি বছর টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। ১৪ বছরের নিচে ৪ লাখ ৪০ হাজার টাইপ-১ শিশুর মধ্যে ২৫ শতাংশ রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিস শিশুদের মধ্যে আগামী ১৫ বছরে ৫০ শতাংশ হারে বাড়বে বলে ধারণা।বড়দের ডায়াবেটিস হলে নিজেরাই এর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে মা-বাবাকে নিতে হয় মুখ্য ভূমিকা। এ ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত ডায়াবেটিস প্রতিরোধের চেষ্টা করা। পরিবারের কারও ডায়াবেটিস থাকলে তার সন্তানেরও হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এ ক্ষেত্রে তাই সতর্ক থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, প্রাথমিক অবস্থায় যেন শিশুর ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো জানা থাকলে এ কাজটা অনেক সহজ হয়। এ রোগের অন্যতম লক্ষণ হলো বেশি বেশি ক্ষুধা লাগা, অতিরিক্ত পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সমস্যা, ওজন হ্রাস পাওয়া, দীর্ঘর্স্থায়ী ঘা, অস্বাভাবিক ক্লান্তি, শুষ্ক ত্বক, পা অবশ বোধ হওয়া বা ঝিমঝিম করা, মনোযোগ হ্রাস পাওয়া, উৎসাহ-উদ্দীপনা কমে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়া, ঘন ঘন বমি ও পেটের পীড়া ইত্যাদি। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। রক্তের গ্গ্নুুকোজ পরিমাপ করে নিশ্চিত হওয়া যায়। শিশুর ডায়াবেটিসের ব্যাপারে নিশ্চিত হলে ভেঙে পড়বেন না, বরং মনোবল দৃঢ় করুন এবং সঠিকভাবে সন্তানের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হোন। প্রথমেই পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে একটি খাদ্যতালিকা তৈরি করে নিন। খাদ্য নিয়ন্ত্রণের ওপর ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ অনেকটা নির্ভরশীল।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের জন্য অধিক আঁশ ও শর্করাযুক্ত সুষম স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা তৈরি করতে হবে, যা শিশুর রক্তের সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং শিশুর শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকেও ব্যাহত করবে না। শিশুকে তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি দুই বা তিন বেলা হালকা নাশতা দিতে হবে। খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সন্তানের পর্যাপ্ত শরীরচর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। শুয়ে-বসে, টিভি দেখে, কম্পিউটার গেমস খেলে সময় কাটানোর চেয়ে বাইরের খেলাধুলার দিকে সন্তানকে আকৃষ্ট করতে হবে।
শিশুদের ইনসুলিননির্ভর অর্থাৎ টাইপ-১ ডায়াবেটিস বেশি হয়। এ ধরনের ডায়াবেটিসে হঠাৎ রক্তে গ্গ্নুকোজ কমে গিয়ে হাইপোগ্গ্নাইসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থাটা শিশুর জন্য খুবই মারাত্মক। তাই ইনসুলিন দেওয়ার পর পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্গ্নুুকোজের পরিমাণ দেখে নিয়ে শিশুকে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। তাই সন্তান স্কুলে যাওয়ার সময় তার পকেটে বা ব্যাগে মিষ্টি জাতীয় খাবার রেখে দিন। স্কুলের শিক্ষকদেরও এ ব্যাপারে অবহিত করতে হবে। সঠিকভাবে ইনসুলিন প্রয়োগবিধি জানতে হবে এবং শিশুকে তা উপযুক্ত বয়সে শেখাতে হবে। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হলে বা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হতে পারে জীবনসংশয়ী জটিলতা_ ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস। এটি শিশুর জন্য একটি মারাত্মক অবস্থা। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, দ্রুত হৃদস্পন্দন, পেটব্যথা, বমি, অবসাদ এবং শ্বাসে ফলের গন্ধ। দ্রুত চিকিৎসা না হলে মগজে পানি জমে মৃত্যু অবধারিত। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ডায়াবেটিস কোনো ভয়ংকর রোগ নয়_ এ বিশ্বাস রাখুন। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সারাজীবন সুস্থভাবে
কাটিয়ে দিচ্ছে, এমন হাজারও দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই শিশুর ডায়াবেটিস নিয়ে অযথা হতাশ ও উদ্বিগ্ন হবেন না।
অেধ্যাপক মোঃ আবিদ হোসেন মোল্লা
শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশুদের জন্য অধিক আঁশ ও শর্করাযুক্ত সুষম স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা তৈরি করতে হবে, যা শিশুর রক্তের সুগার লেভেল ঠিক রাখবে এবং শিশুর শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকেও ব্যাহত করবে না। শিশুকে তিন বেলা প্রধান খাবারের পাশাপাশি দুই বা তিন বেলা হালকা নাশতা দিতে হবে। খাবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সন্তানের পর্যাপ্ত শরীরচর্চার ব্যবস্থা করতে হবে। শুয়ে-বসে, টিভি দেখে, কম্পিউটার গেমস খেলে সময় কাটানোর চেয়ে বাইরের খেলাধুলার দিকে সন্তানকে আকৃষ্ট করতে হবে।
শিশুদের ইনসুলিননির্ভর অর্থাৎ টাইপ-১ ডায়াবেটিস বেশি হয়। এ ধরনের ডায়াবেটিসে হঠাৎ রক্তে গ্গ্নুকোজ কমে গিয়ে হাইপোগ্গ্নাইসেমিয়া হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ অবস্থাটা শিশুর জন্য খুবই মারাত্মক। তাই ইনসুলিন দেওয়ার পর পর্যাপ্ত খাবার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্গ্নুুকোজের পরিমাণ দেখে নিয়ে শিশুকে মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। তাই সন্তান স্কুলে যাওয়ার সময় তার পকেটে বা ব্যাগে মিষ্টি জাতীয় খাবার রেখে দিন। স্কুলের শিক্ষকদেরও এ ব্যাপারে অবহিত করতে হবে। সঠিকভাবে ইনসুলিন প্রয়োগবিধি জানতে হবে এবং শিশুকে তা উপযুক্ত বয়সে শেখাতে হবে। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হলে বা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হতে পারে জীবনসংশয়ী জটিলতা_ ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস। এটি শিশুর জন্য একটি মারাত্মক অবস্থা। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, দ্রুত হৃদস্পন্দন, পেটব্যথা, বমি, অবসাদ এবং শ্বাসে ফলের গন্ধ। দ্রুত চিকিৎসা না হলে মগজে পানি জমে মৃত্যু অবধারিত। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ডায়াবেটিস কোনো ভয়ংকর রোগ নয়_ এ বিশ্বাস রাখুন। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সারাজীবন সুস্থভাবে
কাটিয়ে দিচ্ছে, এমন হাজারও দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই শিশুর ডায়াবেটিস নিয়ে অযথা হতাশ ও উদ্বিগ্ন হবেন না।
অেধ্যাপক মোঃ আবিদ হোসেন মোল্লা
শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
No comments