ইভা হত্যাকাণ্ড : জাকির পাঁচ দিনের রিমান্ডে-খুনির ফাঁসি চান ইভার মা by রাব্বী রহমান
আমার মেয়েকে ওই খুনি জাকির যেভাবে মেরেছে, আমি সেভাবে তার মৃত্যু দেখতে চাই। ও আমার নিষ্পাপ, অবুঝ ও মাসুম সন্তানের চোখে গরম পানি ঢেলেছে, তাকে ধর্ষণ করেছে। আমি নিজের চোখে ওই শয়তানটার ফাঁসি দেখতে চাই। এই শূন্য বুক কেউ আর পূরণ করতে পারবে না। হাহাকার আজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। কিন্তু এর পরও ঘাতক যদি শাস্তি পায়, তবে কিছুটা হলেও নিজেকে বোঝাতে পারব। মেয়ের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অন্তত এইটুকু বলতে পারব_মা রে, তোর খুনি সাজা পেয়েছে।'
ঈদের দিন মেয়ের লাশ দেখার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন ইভার মা মরিয়ম আক্তার মুনি্ন। অভিযুক্ত ঘাতক জাকিরকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব অফিসে ইভার মায়ের মুখোমুখি করা হয়। কয়েক দিন বাকরুদ্ধ থাকার পর জাকিরকে দেখে তিনি চিৎকার করে কেঁদে উঠে এই কথাগুলো বলেন।
গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর খিলক্ষেতের নামাপাড়ায় মামার বাসায় স্কুলছাত্রী ইশরাত জাহান ইভাকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। ঈদের দিন গত সোমবার বাসার পাশের ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চংনোয়াগাঁও গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জাকির আহম্মেদকে। জাকির ও তার দুই ভাই ইভার
মামার বাসায় দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকত। জিজ্ঞাসাবাদে কলেজছাত্র জাকির স্বীকার করেছে, সে ইভাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
গতকাল শনিবার সকালে খিলক্ষেতে ইভাদের বাসার পাশেই তার নানির বাসায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা জটলা করে আছে। সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে তারা নিজেরাই কান্নায় ভেঙে পড়ছে। ঘরের মেঝেতে ইভার আড়াই বছরের ছোট অবুঝ বোন রুবা ছোটাছুটি করছে। মৃত্যু বুঝে না সে। তবে রুবার দিকে তাকালেই বোঝা যায়, বড় বোনের অভাব বোধ করছে সে। সারা বাড়ি খুঁজে ফিরছে ইভাকে।
চারদিকে পাকা টিনের চাল দেওয়া পঁাঁচ কক্ষের বাড়ি। হাতের ডান দিকে প্রথম দুটি কক্ষ তালা মারা। ওই দুটি কক্ষেই জাকির, তার মেঝ ভাই রফিক ও বড় ভাই সাইফুল থাকত। ইভাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় জাকিরের কক্ষে।
ইভার মা মরিয়ম আক্তার মুনি্ন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জাকির যে এ রকম একটা কাজ করতে পারবে, তা আগে কল্পনাতেও আসেনি। ঘটনার পর প্রথম দিকে তাকে সন্দেহ হয়নি। কিন্তু এর পরও কেন যেনো জাকির আমার সামনে আসলেই আমার ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যেত। এরপর থেকেই একটা সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে আমার মনে। তখনই মা-বাবা ও ভাইদের বলেছি, ওকে ধরলে সব বের হবে। কিন্তু ভাইয়েরাও আমার কথা বিশ্বাস করেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটল।'
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলতে বলতে ভেঙে পড়েন মরিয়ম আক্তার মুনি্ন। বললেন, ইভাকে নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা, স্বপ্ন ভঙের কথা। বলতে বলতে একসময় তিনি থেমে যান। আর কিছুই বলতে পারেন না; বিলাপ করতে শুরু করেন বুক চাপড়ে।
ইভার নানি আমিরুননেসা বলেন, 'মেয়ে বলেছিল আমাদের তার সন্দেহের কথা। কিন্তু আমরা কিভাবে বিশ্বাস করব। পাশের ঘরেই জাকির এ রকম একটা কাণ্ড ঘটাবে, তা কি ভাবা যায়? জাকির ফুটানো পানি খাওয়ার জন্য প্রায়ই পানি গরম করে। ওই দিনও করেছে। কিন্তু ওই পানিই যে তার আদরের নাতির চোখ গলিয়ে দিয়েছে, সেটা ভাবতেও গা শিউরে উঠছে।'
মাকছুদাসহ কয়েকজন প্রতিবেশী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘরের মধ্যে এ রকম একটা শত্রু কেউ বুঝতে পারেনি। ঘাতক জাকিরের ফাঁসি দাবি করেন তারা। তারা বলেন, যদি জাকিরের ফাঁসি না হয়, তাহলে আরও অনেকেই এমন অপরাধ করার সাহস পাবে। ঘটনার পর ঘরেই জাকিরের খাটের নিচে ইভার লাশ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে লাশ গুম করতে সহায়তা করেছে জাকিরের দুই বড় ভাই সাইফুল ও রফিক। তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
ইভার মামা স্বপন কালের কণ্ঠকে জানান, খুনের পর ফোন করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অভিযুক্তরা তদন্ত সংস্থাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। এমনকি জাকিরের বড় ভাই সাইফুল তাঁদেরকে কুমিল্লায় এক আধ্যা@ি@@@ক কবিরাজের কাছে পাঠায় 'আয়না পড়া'র সহযোগিতা নিতে। তাঁরা সরল মনে তাও করেন। ইভার মামা এ ঘটনায় অভিযুক্ত করে তিন ভাইয়েরই শাস্তি দাবি করেন।
জাকির পাঁচ দিনের রিমান্ডে
আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে র্যাব। র্যাব-১-এর মেজর রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল সকালে জাকিরকে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত পাঁচ দিন হেফাজতে রেখে জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। হত্যার পর লাশ গুমের সঙ্গে তার ভাইদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর খিলক্ষেতের নামাপাড়ায় মামার বাসায় স্কুলছাত্রী ইশরাত জাহান ইভাকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। ঈদের দিন গত সোমবার বাসার পাশের ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ১০ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চংনোয়াগাঁও গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জাকির আহম্মেদকে। জাকির ও তার দুই ভাই ইভার
মামার বাসায় দুটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে থাকত। জিজ্ঞাসাবাদে কলেজছাত্র জাকির স্বীকার করেছে, সে ইভাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে।
গতকাল শনিবার সকালে খিলক্ষেতে ইভাদের বাসার পাশেই তার নানির বাসায় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেশীরা জটলা করে আছে। সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে তারা নিজেরাই কান্নায় ভেঙে পড়ছে। ঘরের মেঝেতে ইভার আড়াই বছরের ছোট অবুঝ বোন রুবা ছোটাছুটি করছে। মৃত্যু বুঝে না সে। তবে রুবার দিকে তাকালেই বোঝা যায়, বড় বোনের অভাব বোধ করছে সে। সারা বাড়ি খুঁজে ফিরছে ইভাকে।
চারদিকে পাকা টিনের চাল দেওয়া পঁাঁচ কক্ষের বাড়ি। হাতের ডান দিকে প্রথম দুটি কক্ষ তালা মারা। ওই দুটি কক্ষেই জাকির, তার মেঝ ভাই রফিক ও বড় ভাই সাইফুল থাকত। ইভাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় জাকিরের কক্ষে।
ইভার মা মরিয়ম আক্তার মুনি্ন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'জাকির যে এ রকম একটা কাজ করতে পারবে, তা আগে কল্পনাতেও আসেনি। ঘটনার পর প্রথম দিকে তাকে সন্দেহ হয়নি। কিন্তু এর পরও কেন যেনো জাকির আমার সামনে আসলেই আমার ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যেত। এরপর থেকেই একটা সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে আমার মনে। তখনই মা-বাবা ও ভাইদের বলেছি, ওকে ধরলে সব বের হবে। কিন্তু ভাইয়েরাও আমার কথা বিশ্বাস করেনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটল।'
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলতে বলতে ভেঙে পড়েন মরিয়ম আক্তার মুনি্ন। বললেন, ইভাকে নিয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা, স্বপ্ন ভঙের কথা। বলতে বলতে একসময় তিনি থেমে যান। আর কিছুই বলতে পারেন না; বিলাপ করতে শুরু করেন বুক চাপড়ে।
ইভার নানি আমিরুননেসা বলেন, 'মেয়ে বলেছিল আমাদের তার সন্দেহের কথা। কিন্তু আমরা কিভাবে বিশ্বাস করব। পাশের ঘরেই জাকির এ রকম একটা কাণ্ড ঘটাবে, তা কি ভাবা যায়? জাকির ফুটানো পানি খাওয়ার জন্য প্রায়ই পানি গরম করে। ওই দিনও করেছে। কিন্তু ওই পানিই যে তার আদরের নাতির চোখ গলিয়ে দিয়েছে, সেটা ভাবতেও গা শিউরে উঠছে।'
মাকছুদাসহ কয়েকজন প্রতিবেশী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘরের মধ্যে এ রকম একটা শত্রু কেউ বুঝতে পারেনি। ঘাতক জাকিরের ফাঁসি দাবি করেন তারা। তারা বলেন, যদি জাকিরের ফাঁসি না হয়, তাহলে আরও অনেকেই এমন অপরাধ করার সাহস পাবে। ঘটনার পর ঘরেই জাকিরের খাটের নিচে ইভার লাশ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে লাশ গুম করতে সহায়তা করেছে জাকিরের দুই বড় ভাই সাইফুল ও রফিক। তাদেরও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তাঁরা।
ইভার মামা স্বপন কালের কণ্ঠকে জানান, খুনের পর ফোন করে চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অভিযুক্তরা তদন্ত সংস্থাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছে। এমনকি জাকিরের বড় ভাই সাইফুল তাঁদেরকে কুমিল্লায় এক আধ্যা@ি@@@ক কবিরাজের কাছে পাঠায় 'আয়না পড়া'র সহযোগিতা নিতে। তাঁরা সরল মনে তাও করেন। ইভার মামা এ ঘটনায় অভিযুক্ত করে তিন ভাইয়েরই শাস্তি দাবি করেন।
জাকির পাঁচ দিনের রিমান্ডে
আদালতের বিশেষ অনুমতি নিয়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে র্যাব। র্যাব-১-এর মেজর রেজাউল করিম কালের কণ্ঠকে জানান, গতকাল সকালে জাকিরকে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত পাঁচ দিন হেফাজতে রেখে জাকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। হত্যার পর লাশ গুমের সঙ্গে তার ভাইদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
No comments