সার্ক শীর্ষ সম্মেলন-আদ্দু ঘোষণার পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন চাই
সার্ক শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়েছে। মালদ্বীপের আদ্দুতে অনুষ্ঠিত সম্মেলন শেষে ২০ দফা 'আদ্দু ঘোষণা' প্রদান করা হয়েছে। এতে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণে সাফটার দ্রুত বাস্তবায়ন, রেল ও সড়কপথে যোগাযোগ বাড়ানো এবং নতুন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, সন্ত্রাস নির্মূল, পর্যবেক্ষকদের সংলাপে অংশীদার করার বিষয় বিবেচনা, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ ছাড়া সার্ক দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা চারটি চুক্তি সই করেছেন। সেগুলোর মধ্যে আছে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত দুটি চুক্তি, সার্ক বীজভাণ্ডার গঠন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে দ্রুত সহযোগিতা করার বিষয়টি।
কিন্তু এবারের শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য 'সেতুবন্ধ' হলেও সার্ক দেশগুলোর মানুষের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরির বিষয়টি একরকম উপেক্ষিতই রয়ে গেছে। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে লোকজনের চলাচল সুগম করার ক্ষেত্রেও নেতারা কোনো সিদ্ধান্তে পেঁৗছাতে পারেননি।
এবার ছিল সার্কের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলন। আর সার্কের বয়স প্রায় তিন দশক অতিক্রম করতে যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে কিংবা সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নে এই সময়ে সার্ক যে ভূমিকা রাখতে পারত কিংবা তার রাখা উচিত ছিল, কার্যত সার্ক তা রাখতে পারেনি। পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, আন্তরাষ্ট্রীয় কিংবা আঞ্চলিক বিরোধ নিরসনেও সার্কের ভূমিকা খুবই গৌণ। এসব কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক বিশিষ্টজনই সার্কের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বা হতাশা প্রকাশ করে থাকেন। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠনের সাফল্য আমাদের রীতিমতো ঈর্ষান্বিত করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় তো অভিন্ন মুদ্রাই চালু হয়ে গেছে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে অবাধে চলাচলের সুযোগ রয়েছে। বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে কার্পণ্য করে না। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আসিয়ানও বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে চলেছে। কিন্তু আমাদের বোধগম্য হয় না, দুই যুগেরও বেশি সময়ে সার্ক কেন কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিটি শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণায় আমরা ভালো ভালো আশ্বাস পাই। আশায় বুক বাঁধি, হয়তো অচিরেই সার্ক তার সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য সুতোর একটি টানেই সার্ক যেন আবার তার গতি হারিয়ে ফেলে। কী সেই অদৃশ্য সুতো! কেন আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারছি না? পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ হয়তো এ ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবে। তাই এবারের ঘোষণায় সেই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা একটি ভালো দিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বায়নের এই যুগে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ও প্রতিযোগিতায় সফল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এ ধরনের আঞ্চলিক সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। দুঃখজনক হলেও সত্য, দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিতিশীল রাজনীতি, দেশগুলোর নেতাদের দৃঢ় মনোবল আর উদার মনোভাবের অভাব সার্ককে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে কাঙ্ক্ষিত গতিতে এগিয়ে যেতে দিচ্ছে না। আমরা আশা করি, নিজেদের স্বার্থেই সার্কভুক্ত দেশগুলো আদ্দু ঘোষণার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে এবার অন্তত যথেষ্ট সদিচ্ছার পরিচয় দেবে। সার্ক হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে সত্যিকার পথপ্রদর্শক।
এবার ছিল সার্কের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলন। আর সার্কের বয়স প্রায় তিন দশক অতিক্রম করতে যাচ্ছে। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে কিংবা সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নে এই সময়ে সার্ক যে ভূমিকা রাখতে পারত কিংবা তার রাখা উচিত ছিল, কার্যত সার্ক তা রাখতে পারেনি। পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, আন্তরাষ্ট্রীয় কিংবা আঞ্চলিক বিরোধ নিরসনেও সার্কের ভূমিকা খুবই গৌণ। এসব কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক বিশিষ্টজনই সার্কের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বা হতাশা প্রকাশ করে থাকেন। অথচ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা অন্যান্য আঞ্চলিক সংগঠনের সাফল্য আমাদের রীতিমতো ঈর্ষান্বিত করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় তো অভিন্ন মুদ্রাই চালু হয়ে গেছে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে অবাধে চলাচলের সুযোগ রয়েছে। বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে কার্পণ্য করে না। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আসিয়ানও বেশ ভালো ভূমিকা পালন করে চলেছে। কিন্তু আমাদের বোধগম্য হয় না, দুই যুগেরও বেশি সময়ে সার্ক কেন কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিটি শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণায় আমরা ভালো ভালো আশ্বাস পাই। আশায় বুক বাঁধি, হয়তো অচিরেই সার্ক তার সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য সুতোর একটি টানেই সার্ক যেন আবার তার গতি হারিয়ে ফেলে। কী সেই অদৃশ্য সুতো! কেন আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠতে পারছি না? পর্যবেক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ হয়তো এ ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখতে পারবে। তাই এবারের ঘোষণায় সেই বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হওয়াটা একটি ভালো দিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বায়নের এই যুগে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ও প্রতিযোগিতায় সফল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এ ধরনের আঞ্চলিক সংগঠনের গুরুত্ব অপরিসীম। দুঃখজনক হলেও সত্য, দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিতিশীল রাজনীতি, দেশগুলোর নেতাদের দৃঢ় মনোবল আর উদার মনোভাবের অভাব সার্ককে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে কাঙ্ক্ষিত গতিতে এগিয়ে যেতে দিচ্ছে না। আমরা আশা করি, নিজেদের স্বার্থেই সার্কভুক্ত দেশগুলো আদ্দু ঘোষণার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে এবার অন্তত যথেষ্ট সদিচ্ছার পরিচয় দেবে। সার্ক হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নে সত্যিকার পথপ্রদর্শক।
No comments