টিসিবির তিন হাজার টন চিনি নিয়ে বন্দরে ভিড়েছে জাহাজ by আসিফ সিদ্দিকী,

বশেষে পরিশোধিত চিনি আমদানি শুরু করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি)। সাড়ে ১২ হাজার টন চিনি আমদানি চুক্তির বিপরীতে প্রথম চালানের তিন হাজার টন চিনি নিয়ে 'চিন শোয়ে ল' জাহাজটি এখন চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থান করছে। ৯ হাজার টন চিনি নিয়ে দ্বিতীয় জাহাজ 'জাল ভাহিনী' আসছে ২৫ নভেম্বর।আগে টিসিবি দেশীয় কারখানা থেকে উৎপাদিত চিনি সংগ্রহ করে ভর্তুকি দিয়ে কমমূল্যে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করত। এবারই প্রথম আমদানীকৃত চিনি দিয়ে দেশের চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে চিনি আমদানির উদ্যোগের নানা কথাবার্তা বলা হলেও এত দিন তা কার্যকর হয়নি।


বর্তমান সরকারের আমলে টিসিবির অধীন চিনি আমদানির উদ্যোগ এটাই প্রথম।গত ৩ অক্টোবর ভারতের উমা করপোরেশনের সঙ্গে সাড়ে ১২ হাজার টন পরিশোধিত চিনি আমদানির চুক্তি করে সরকার। প্রতি টন চিনির আমদানিমূল্য ধরা হয় ৭২৫ মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনির আমদানি খরচ ৫৬ টাকা ৫৫ পয়সা। প্রতিষ্ঠানটি এই দামে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত চিনি পেঁৗছে দেবে। পরিশোধিত চিনি আমদানিতে কোনো শুল্ক না থাকলেও বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন খরচ এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফলে প্রতি টন চিনি সরকারি গুদামে পেঁৗছা ও সংরক্ষণ পর্যন্ত খরচ দাঁড়াবে ৫৮ টাকা; কিন্তু বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকার ওপরে। যদিও ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ-এর ওয়েবসাইটে গতকালের চিনির বাজার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা। আমদানীকৃত ৫৮ টাকা দামের চিনি বাজারে কত টাকা দরে বিক্রি করা হবে_এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান চট্টগ্রাম টিসিবি আঞ্চলিক অফিসপ্রধান আকতার হোসেন। তিনি বলেন, এসব চিনি ভর্তুকি মূল্যে নাকি কেনা দামে বিক্রি করা হবে_এটা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
এ বিষয়ে টিসিবির সচিব আকতার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'চিনি গুদামে পেঁৗছার পর বাজার মূল্য বিবেচনায় নিয়ে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হবে। টিসিবির নির্ধারিত ডিলারদের মাধ্যমেই এসব চিনি বিক্রি হবে।'
আগে দেশীয় বাজার থেকে চিনি সংগ্রহ করা হলেও এখন কেন আমদানি করা হচ্ছে_এর উত্তরে সচিব বলেন, "রমজানে বাজার স্থিতিশীল রাখতে দেশীয় বাজার থেকে তাৎক্ষণিকভাবে চিনি কেনা হয়েছিল। এখন বাজার থেকে চিনি সংগ্রহ করলে বিষয়টি 'কৈয়ের তেলে কৈ ভাজা'র মতো হবে। দেশের মজুদ অক্ষত রাখতে আমরা আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি।"
জানা গেছে, চুক্তির অধীন মিয়ানমারের পতাকাবাহী 'চিন শোয়ে ল' জাহাজে করে তিন হাজার টন বস্তাভর্তি চিনির চালানটি গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে পেঁৗছে। গত ১১ নভেম্বর বিকেলে বন্দরের পাঁচ নম্বর জেটিতে ভিড়িয়ে জাহাজ থেকে চিনি খালাস শুরু হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম টিসিবি আঞ্চলিক অফিসপ্রধান আকতার হোসেন।
দেশে চিনির বর্তমান চাহিদা ১৩ লাখ টন। গত অর্থবছরে ১৯টি চিনিকল থেকে উৎপাদিত হয়েছে মাত্র ৬৩ হাজার টন। বাকি চিনি সরকারি ও বেসরকারি আমদানিকারকরা ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.