প্রাথমিক ও এবতেদায়ির ফলও গ্রেডিং পদ্ধতিতে-পরীক্ষার্থী ২৬ লাখ, শুরু ২৩ নভেম্বর by অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য

প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এবতেদায়ি মাদ্রাসার সমাপনী পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী ২৩ নভেম্বর। ইতিমধ্যে রুটিন ঘোষণা করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এ বছর বিদ্যালয় থেকে অংশ নিচ্ছে ২৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৪২ জন পরীক্ষার্থী। আর মাদ্রাসা থেকে অংশ নিচ্ছে তিন লাখ ২০ হাজার ৯৮১ জন ছাত্রছাত্রী। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, চলতি বছর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফল গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হবে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশের পরীক্ষা পদ্ধতির ফল থেকে প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ ও তৃতীয় বিভাগ উঠে গেল। বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা মিলে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮২৩।


পরীক্ষায় এবার ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের অংশগ্রহণের হার বেশি। এর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীতে দুই লাখ এবং এবতেদায়িতে ২০ হাজার ছাত্রী বেশি। এ পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে প্রাথমিকে বৃত্তি দেওয়া হবে। আলাদা পরীক্ষা নেওয়া হবে না।
পরীক্ষার উত্তরপত্র সংশ্লিষ্ট উপজেলায় বসে মূল্যায়ন করা হবে। তবে প্রধান পরীক্ষক আসবেন অন্য উপজেলা থেকে। প্রধান পরীক্ষকের বিষয়টি চলতি বছর থেকে নতুন সংযোজন করা হয়েছে। অর্থাৎ এক উপজেলার প্রধান পরীক্ষক আরেক উপজেলার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষ কালের কণ্ঠকে বলেন, চলতি বছর থেকে এ পরীক্ষার ফল গ্রেডিং পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হবে। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার গ্রেডিং পদ্ধতির মতো প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর গ্রেডিং বিন্যাস করা হয়েছে। ফল প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ না হয়ে হবে 'এ-প্লাস', 'এ', 'বি'_এভাবে। মহাপরিচালক আরো বলেন, এবার পরীক্ষায় প্রতিবন্ধীদের জন্য অতিরিক্ত ১৫ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রধান পরীক্ষক হিসেবে ভিন্ন উপজেলার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার সারা দেশে ছয় হাজার ১৬৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে। কোনো কেন্দ্রে নকলের অভিযোগ পাওয়া গেলে ওই কেন্দ্র বাতিল করা হবে, কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট ছাড়া কেউ হলে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে কেন্দ্রসচিবদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (সংস্থাপন) মো. ফসিউল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। গত বছর যারা এ পরীক্ষায় ফেল করেছে, তারাও এবার পরীক্ষায় অংশ নেবে। পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উৎসাহ বাড়ার কারণে পরীক্ষার্থী বেড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ছোটদের এসএসসিখ্যাত এ পরীক্ষায় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অংশ নিচ্ছে ২৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৪২ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৬৪৭ এবং ছাত্রী ১২ লাখ ৫০ হাজার ১৯৫ জন। প্রাথমিকে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা রংপুর বিভাগে দুই লাখ ৮৬ হাজার ৮৪৫, রাজশাহী বিভাগে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৮২৪, খুলনা বিভাগে দুই লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৫ জন, ঢাকা বিভাগে সাত লাখ ২৯ হাজার ৪৭৫, চট্টগ্রাম বিভাগে চার লাখ ৭৪ হাজার ৯৫৮ জন, বরিশাল বিভাগে এক লাখ ৩৬ হাজার ২৪১ জন এবং সিলেট বিভাগে এক লাখ ৬০ হাজার ২৮২ জন।
এবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষাও একই দিনে শুরু হচ্ছে। তিন লাখ ২০ হাজার ৯৮১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৫০ হাজার ৫১ এবং ছাত্রী এক লাখ ৭০ হাজার ৯৩০ জন। এখানেও ছাত্রীর সংখ্যা ২০ হাজার বেশি।
এ ছাড়া বিদেশের আটটি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। এসব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৩২। এর মধ্যে ২৮৫ জন ছাত্র এবং ৩৪৭ জন ছাত্রী। ইতিমধ্যেই প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র বিদেশের কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.