পাখি-গানের পাখি এশীয় তেলশালিক by সীমান্ত দীপু
বাংলাদেশে শালিক খুবই পরিচিত একটি পাখি। শালিক চেনেন না এমন মানুষ এ দেশে পাওয়া যাবে না। শহর-গ্রামে সব স্থানেই পাখিটির উপস্থিতি। ঘর থেকে বের হলেই গো-শালিক আর ভাত-শালিকের আনাগোনা চোখে পড়ে। বর্ষায় বাড়ির আশপাশের প্রায় সব গাছে দেখা যায় শালিকের বাসা।এ দুই জাতের শালিকের ভিড়ে অন্য জাতের শালিকের খোঁজ হয়তো আমরা কেউই রাখি না। খয়রালেজ কাঠশালিক, ঝুঁটি শালিক, গাঙ শালিক এই তিনটি প্রজাতিও আমাদের দেশে বেশ ভালো অবস্থায় আছে। গত বছর আমাদের সুন্দরবন থেকে শালিক পরিবারে একটি নতুন নাম যোগ হয়েছে। এর নাম বেগুনি পিঠ শালিক।
এ দেশে মোট ১২ জাতের শালিক আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে কম দেখা যায় চিতিপাখ গো-শালিক, বামুনি কাঠশালিক, গোলাপি কাঠশালিক ও ধলাতলা শালিক। আরেকটি প্রজাতি এর আগে খুবই কম দেখা যেত। এর নাম এশীয় তেলশালিক। বাংলাদেশের সবচেয়ে বিরল শালিক এটি।
সমপ্রতি এশীয় তেলশালিককে দেখা গেল কঙ্বাজারে। কঙ্বাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কয়েকটি তেলশালিকের দেখা মেলে। এর আগে চট্টগ্রাম ও সিলেটের বন থেকে মাত্র একবার করে পাখিটি দেখার তথ্য আছে। এ মাসের শুরুতে যে এশীয় তেলশালিকের দল দেখা গেছে, সেগুলো ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। এতে ধারণা করা হয়, এ দলে বা এর আশপাশে প্রাপ্তবয়স্ক পাখিও ছিল। নিশ্চয় এ দেশে তারা প্রজননও করে।
এশীয় তেলশালিক একটি মাঝারি আকারের গানের পাখি। দেখতে খুবই সুন্দর। উজ্জ্বল দিবালোকে প্রাপ্তবয়স্ক পাখির চকচকে পালকে আলো পড়লে গায়ের রঙ সবুজ থেকে বেগুনিতে পরিবর্তিত হয়। এর চোখ
গাঢ় লাল। ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা ও নখর কালো। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন।
এশীয় তেলশালিক সাধারণত ট্রপিক্যাল এলাকার বনে দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও পাওয়া যায় ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও ফিলিপাইনে। শহরে বা বন্দরেও এদের দেখা মেলে। আম, কলা, পেঁপেসহ নরম খাবার এদের প্রথম পছন্দ। মাঝেমধ্যে পোকামাকড়ও খায়। বেশ চেঁচামেচি করে খাবার খায় এবং দলবেঁধে রাতে ঘুমাতে যায়। মার্চ-জুনে প্রজনন করে। এ সময় এরা কাঠঠোকরার গর্তে বাসা বাঁধে। গর্ত না পেলে গাছের ফাটলে ঘাস, কাগজ ও আবর্জনা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো কালচে বাদামি তিলাসহ নীল, সংখ্যায় তিনটি।
এই প্রজাতির শালিক রক্ষায় গবেষণা খুবই জরুরি। আমাদের উপকূলীয় ও পাহাড়ি বনগুলোতে জরিপ করে এর আবাসস্থল শনাক্ত করতে হবে। এরপর বাসা করার জন্য সামান্য জায়গা ছেড়ে দিলেই পাখিটি হয়তো আমাদের দেশে আরো বহুকাল টিকে থাকবে।
লেখক : সেক্রেটারি, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব
ছবি : সায়েম
সমপ্রতি এশীয় তেলশালিককে দেখা গেল কঙ্বাজারে। কঙ্বাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে কয়েকটি তেলশালিকের দেখা মেলে। এর আগে চট্টগ্রাম ও সিলেটের বন থেকে মাত্র একবার করে পাখিটি দেখার তথ্য আছে। এ মাসের শুরুতে যে এশীয় তেলশালিকের দল দেখা গেছে, সেগুলো ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক। এতে ধারণা করা হয়, এ দলে বা এর আশপাশে প্রাপ্তবয়স্ক পাখিও ছিল। নিশ্চয় এ দেশে তারা প্রজননও করে।
এশীয় তেলশালিক একটি মাঝারি আকারের গানের পাখি। দেখতে খুবই সুন্দর। উজ্জ্বল দিবালোকে প্রাপ্তবয়স্ক পাখির চকচকে পালকে আলো পড়লে গায়ের রঙ সবুজ থেকে বেগুনিতে পরিবর্তিত হয়। এর চোখ
গাঢ় লাল। ঠোঁট, পা, পায়ের পাতা ও নখর কালো। ছেলে ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন।
এশীয় তেলশালিক সাধারণত ট্রপিক্যাল এলাকার বনে দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও পাওয়া যায় ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও ফিলিপাইনে। শহরে বা বন্দরেও এদের দেখা মেলে। আম, কলা, পেঁপেসহ নরম খাবার এদের প্রথম পছন্দ। মাঝেমধ্যে পোকামাকড়ও খায়। বেশ চেঁচামেচি করে খাবার খায় এবং দলবেঁধে রাতে ঘুমাতে যায়। মার্চ-জুনে প্রজনন করে। এ সময় এরা কাঠঠোকরার গর্তে বাসা বাঁধে। গর্ত না পেলে গাছের ফাটলে ঘাস, কাগজ ও আবর্জনা দিয়ে বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমগুলো কালচে বাদামি তিলাসহ নীল, সংখ্যায় তিনটি।
এই প্রজাতির শালিক রক্ষায় গবেষণা খুবই জরুরি। আমাদের উপকূলীয় ও পাহাড়ি বনগুলোতে জরিপ করে এর আবাসস্থল শনাক্ত করতে হবে। এরপর বাসা করার জন্য সামান্য জায়গা ছেড়ে দিলেই পাখিটি হয়তো আমাদের দেশে আরো বহুকাল টিকে থাকবে।
লেখক : সেক্রেটারি, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব
ছবি : সায়েম
No comments