পরিবর্তনের সময় এখন-বললেন স্টুয়ার্ট ল by সঞ্জয় সাহা পিয়াল,
একষট্টির পরের সকাল। বাজারে আসা শীতের নতুন সবজির মতোই বাংলাদেশ দলের সবাইকে সজীব, টাটকা, সতেজ আর স্বাস্থ্যকর লাগছিল গতকাল। আগের রাতে চট্টগ্রাম ক্লাবে কোচ স্টুয়ার্ট ল'র বার্থডে পার্টি থেকে এসেই যে যার বিছানায়। তারপরও সবার আগে ঘুম থেকে উঠে একা একাই মাঠে চলে এলেন তামিম ইকবাল। নিজেই চাবি খুঁজে ড্রেসিংরুমের দরজা খুললেন, ফিল্ডিং কোচ জেসন সুইফটকে নিয়ে নেটে কাটালেন অনেকক্ষণ। এরপর মুশফিকরা দলবেঁধে এসে হৈহৈ করে ফুটবল খেললেন। ছেলেদের ফুরফুরে মেজাজে রেখে কোচও এক ফাঁকে গিয়ে ঢুঁ মেরে এলেন চটে ঢাকা টেস্টের তিন নম্বর পিচটির দিকে।
একটু দূরে, যেখানে আগের সন্ধ্যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬১ রানে সমাধি হয়েছিল। সেই ঐতিহাসিক ৫ নম্বর উইকেটটির দিকে একবার ফিরেও তাকালেন না স্টুয়ার্ট ল। এক রাতের মধ্যেই কি তবে অতীত হয়ে গেল '৬১'? 'ওরকম একটি জয় আমাদের সবাইকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। এখানে যখন আমরা এসেছিলাম তখন আমাদের হারানোর কিছুই ছিল না, তারপরও আমাদের ছেলেরা সেদিন দারুণ পারফর্ম করেছে। আমরা যেটা চেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত সেটাই পেয়েছি। আমার মনে হয়, ওয়ানডে ম্যাচেই ছেলেরা এ মাঠটি সম্পর্কে জেনে গেছে। তবে এখন আমরা টেস্ট খেলতে নামছি। এটা ক্রিকেটের ভিন্ন ফরম্যাট, যেখানে ভিন্ন সব পরিকল্পনা থাকে।' স্টুয়ার্ট ল'র মধ্যে ৬১-র সুখানুভূতির রেশটা ছিল ঠিকই, সে সঙ্গে টেস্টের সচেতনতাও।
আর সে কারণেই অনেক শক্ত হতে হয়েছে তাকে। দলের সবাই যখন টিমবাসে চড়ে সাগরিকায় এসেছিলেন, তখন হোটেল থেকেই চারজনকে বিদায় জানিয়ে আসতে হয়েছে তাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার ফ্লাইটের সেই যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, অলক কাপালি, আবদুর রাজ্জাক ও শফিউল ইসলাম। তাদের রেখে যাওয়া হোটেল রুমগুলো অবশ্য সন্ধ্যাতেই ভরে যায় রকিবুল, শাহাদাত আর ইলিয়াস সানির উপস্থিতিতে। একসঙ্গে এত নাম পরিবর্তনে যারা ঘাবড়ে গিয়েছেন, তাদেরই আশ্বস্ত করলেন কোচ স্টুয়ার্ট ল। 'এটা নতুনদের জন্য একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। হতে পারে সময়টা এখন পরিবর্তনের। যেখানে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা আছে। আমার মনে হয়, আমাদের টেস্ট দলটিকে এখনও একটি ইউনিটে আনা যায়। এটা এমন একটা সময় যখন কেউ নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে আগামী ১০ বছরের জন্য টেস্ট এরিনায় দেশের হয়ে খেলতে পারবে।' কোচের এ হাসি হাসি মুখে বলা কথাগুলোর মধ্যেই যেন আশরাফুলের টেস্ট ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা লুকিয়েছিল।
রাখঢাক না করেই তাই কোচের কাছে জিজ্ঞাসাটা ছিল এমন_ তাহলে কি আশরাফুলের টেস্ট ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুব মারল? চতুর কোচ একটু ঘুরিয়েই উত্তর দিলেন। 'এটা সত্যিই মজার একটি ব্যাপার। এই আশরাফুলকেই ওয়ানডে সিরিজের সময় মিডিয়া বাদ দিতে বলেছিল। এখন তারাই আবার প্রশ্ন করছে কেন তাকে টেস্ট থেকে বাদ দেওয়া হলো। সত্যি কথা বলতে কী, ড্রেসিংরুমে আশরাফুল দারুণ একজন। জিম, অনুশীলন, ফিটনেস ট্রেনিং_ সবখানেই সে ভীষণ একাগ্র। আমার মনে হয়, তার সমর্থকরাও এমন এক আশরাফুলকে মাঠে দেখতে চান যে কি-না পারফর্মার।'
কিন্তু যে ছেলে জিম্বাবুয়েতে টেস্ট ভালো খেলল তাকে কেন পরের টেস্ট সিরিজে রাখা হয়নি? উত্তরটা আরও পরিষ্কার করলেন স্টুয়ার্ট ল এখানেই। 'জিম্বাবুয়েতে সে অন্য ম্যাচগুলো থেকে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পায়নি। মাঠে সে বলগুলো দারুণ মারতে পারে, দুঃখজনক হলেও সত্য, তাকে আউট হতে হয় ওই দারুণ শটগুলোতেই। তবে সত্যটা হলো, ভালো খেলোয়াড় হয়েই নয়, দলে থাকতে হলে সবাইকে পারফর্ম করেই থাকতে হবে। যদি কেউ দলে থাকতে চায় তাকে পারফর্ম করতেই হবে। শুধু ওকে বললেই হবে না, দেশের হয়ে খেলতে নামলে পারফর্ম তাকে করতেই হবে।' এতটা খোলামেলাভাবে উত্তর দেবেন কোচ তা অনেকেই ভাবেননি।
অনেকের মতো শুধু পরিবর্তনের স্লোগান নয়, কাজেও পরিবর্তনের প্রমাণ দিয়েছেন কোচ স্টুয়ার্ট ল। যার প্রথম উদাহরণই হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। যাকে কি-না ফর্মের কারণেই টেস্ট স্কোয়াড থেকে বাদ দিয়েছেন; কিন্তু শুভগত, নাসির, ইলিয়াস সানির মতো নবাগতদের দিয়ে পারবেন কি ল তার টেস্ট ভিশন পূরণ করতে? দু'ম্যাচের এ সিরিজে কী রেজাল্ট চাইছেন ল? 'বেসিক ক্রিকেট। আমার বিশ্বাস ছেলেরা যদি তাদের বেসিক ক্রিকেটটা খেলতে পারে তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেন, বিশ্বের যে কোনো দলের সঙ্গেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবে বাংলাদেশ। আমার মনে হয়, সেই দিন থেকে খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন আমাদের ব্যাটসম্যানরা একেকজন বড় বড় স্কোর করবে। আর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে...।' দার্শনিক কিংবা স্বপ্নচারীর মতো নন, একজন বাস্তববাদী মানুষ হিসেবেই স্টুয়ার্ট ল মনে করেন, বাংলাদেশের এ দলটির মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার সব ক্ষমতাই আছে।
আর সে কারণেই অনেক শক্ত হতে হয়েছে তাকে। দলের সবাই যখন টিমবাসে চড়ে সাগরিকায় এসেছিলেন, তখন হোটেল থেকেই চারজনকে বিদায় জানিয়ে আসতে হয়েছে তাকে। বিকেল সাড়ে ৩টার ফ্লাইটের সেই যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল, অলক কাপালি, আবদুর রাজ্জাক ও শফিউল ইসলাম। তাদের রেখে যাওয়া হোটেল রুমগুলো অবশ্য সন্ধ্যাতেই ভরে যায় রকিবুল, শাহাদাত আর ইলিয়াস সানির উপস্থিতিতে। একসঙ্গে এত নাম পরিবর্তনে যারা ঘাবড়ে গিয়েছেন, তাদেরই আশ্বস্ত করলেন কোচ স্টুয়ার্ট ল। 'এটা নতুনদের জন্য একটা সুযোগ এনে দিয়েছে। হতে পারে সময়টা এখন পরিবর্তনের। যেখানে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা আছে। আমার মনে হয়, আমাদের টেস্ট দলটিকে এখনও একটি ইউনিটে আনা যায়। এটা এমন একটা সময় যখন কেউ নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে আগামী ১০ বছরের জন্য টেস্ট এরিনায় দেশের হয়ে খেলতে পারবে।' কোচের এ হাসি হাসি মুখে বলা কথাগুলোর মধ্যেই যেন আশরাফুলের টেস্ট ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা লুকিয়েছিল।
রাখঢাক না করেই তাই কোচের কাছে জিজ্ঞাসাটা ছিল এমন_ তাহলে কি আশরাফুলের টেস্ট ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুব মারল? চতুর কোচ একটু ঘুরিয়েই উত্তর দিলেন। 'এটা সত্যিই মজার একটি ব্যাপার। এই আশরাফুলকেই ওয়ানডে সিরিজের সময় মিডিয়া বাদ দিতে বলেছিল। এখন তারাই আবার প্রশ্ন করছে কেন তাকে টেস্ট থেকে বাদ দেওয়া হলো। সত্যি কথা বলতে কী, ড্রেসিংরুমে আশরাফুল দারুণ একজন। জিম, অনুশীলন, ফিটনেস ট্রেনিং_ সবখানেই সে ভীষণ একাগ্র। আমার মনে হয়, তার সমর্থকরাও এমন এক আশরাফুলকে মাঠে দেখতে চান যে কি-না পারফর্মার।'
কিন্তু যে ছেলে জিম্বাবুয়েতে টেস্ট ভালো খেলল তাকে কেন পরের টেস্ট সিরিজে রাখা হয়নি? উত্তরটা আরও পরিষ্কার করলেন স্টুয়ার্ট ল এখানেই। 'জিম্বাবুয়েতে সে অন্য ম্যাচগুলো থেকে আত্মবিশ্বাস খুঁজে পায়নি। মাঠে সে বলগুলো দারুণ মারতে পারে, দুঃখজনক হলেও সত্য, তাকে আউট হতে হয় ওই দারুণ শটগুলোতেই। তবে সত্যটা হলো, ভালো খেলোয়াড় হয়েই নয়, দলে থাকতে হলে সবাইকে পারফর্ম করেই থাকতে হবে। যদি কেউ দলে থাকতে চায় তাকে পারফর্ম করতেই হবে। শুধু ওকে বললেই হবে না, দেশের হয়ে খেলতে নামলে পারফর্ম তাকে করতেই হবে।' এতটা খোলামেলাভাবে উত্তর দেবেন কোচ তা অনেকেই ভাবেননি।
অনেকের মতো শুধু পরিবর্তনের স্লোগান নয়, কাজেও পরিবর্তনের প্রমাণ দিয়েছেন কোচ স্টুয়ার্ট ল। যার প্রথম উদাহরণই হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। যাকে কি-না ফর্মের কারণেই টেস্ট স্কোয়াড থেকে বাদ দিয়েছেন; কিন্তু শুভগত, নাসির, ইলিয়াস সানির মতো নবাগতদের দিয়ে পারবেন কি ল তার টেস্ট ভিশন পূরণ করতে? দু'ম্যাচের এ সিরিজে কী রেজাল্ট চাইছেন ল? 'বেসিক ক্রিকেট। আমার বিশ্বাস ছেলেরা যদি তাদের বেসিক ক্রিকেটটা খেলতে পারে তাহলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেন, বিশ্বের যে কোনো দলের সঙ্গেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবে বাংলাদেশ। আমার মনে হয়, সেই দিন থেকে খুব বেশি দূরে নেই, যেদিন আমাদের ব্যাটসম্যানরা একেকজন বড় বড় স্কোর করবে। আর দলকে এগিয়ে নিয়ে যাবে...।' দার্শনিক কিংবা স্বপ্নচারীর মতো নন, একজন বাস্তববাদী মানুষ হিসেবেই স্টুয়ার্ট ল মনে করেন, বাংলাদেশের এ দলটির মধ্যে এগিয়ে যাওয়ার সব ক্ষমতাই আছে।
No comments