ব্রিটেনে যাযাবর বসতি ডেল ফার্ম উচ্ছেদ অভিযান

ব্রিটেনে যাযাবরদের সবচেয়ে বড় অবৈধ বসতি এলাকাটি খালি করার প্রক্রিয়া গতকাল বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। এলাকাটি খালি করার চেষ্টার শুরুর দিকে সেখানে বসবাসকারী আইরিশ যাযাবর এবং মানবাধিকারকর্মীদের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। তারা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়ে এবং একটি ক্যারাভানে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশের টেজার গানে (গুলির পরিবর্তে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ব্যবহার করা হয়) দুজন আহত হয়। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই ঘটনায়।


এক দশক ধরে আইনি লড়াই চলার পর গত সোমবার ব্রিটেনের আপিল আদালত লন্ডনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় এসেঙ্ কাউন্টির ডেল ফার্ম এলাকা থেকে যাযাবরদের উচ্ছেদের ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় দেন। গতকাল সূর্যোদয়ের আগেই অর্ধশতাধিক দাঙ্গা পুলিশ সেখানে অভিযান শুরু করে। উচ্ছেদ ঠেকাতে ছয় একর জমির ওপর বসবাসকারী আইরিশ যাযাবরদের সঙ্গে আগে থেকেই মানবাধিকারকর্মীরা অবস্থান নেন। শুরুতেই প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশ। যাযাবররা ক্যাম্পের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। পুলিশ অবশ্য ক্যাম্পের সামনে দিয়ে না ঢুকে পেছন দিয়ে তাদের অভিযান শুরু করে।
পুলিশ জানিয়েছে, সহিংসতা হতে পারে, এমন তথ্য তাদের কাছে ছিল। স্থানীয় পরিষদের নেতা জানান, যাযাবররা পুলিশ কর্মকর্তাদের লোহার রড দিয়ে মারধরের ভয় দেখান। যাযাবররাও পুলিশের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করে। এক অধিবাসী জানান, পুলিশ তাঁকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। এসেঙ্ পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, 'গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা যায়, বিক্ষোভকারী যাযাবররা পুলিশ ও কাউন্টির প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য নানান ধরনের জিনিস জড়ো করে রাখে। সেখানে শুরুতে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা প্রবেশ করেন, তাঁদের ওপর দাহ্য বস্তু ছুড়ে মারা হয়, ইটপাটকেল ও তরল পদার্থ দিয়ে হামলা চালানো হয়। তবে ওই পুলিশ কর্মকর্তাদের এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি ছিল।'
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (বাসিলডন কাউন্টি) প্রায় এক দশক ধরে আইরিশ যাযাবরদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়েছে। নিম্ন আদালত তাদের উচ্ছেদের রায় দেন গত মাসেই। যাযাবররা আপিল করলে গত সোমবার আদালত তাদের উচ্ছেদের রায়ের বিরুদ্ধে আর কোনো আবেদন করার পথ রুদ্ধ করে দেন। এই জমির মালিকানা যাযাবরদের হলেও সেখানে কোনো স্থাপনা তৈরির অনুমোদন তাদের ছিল না। কিন্তু এখানে ৫১টি অননুমোদিত প্লটের ওপর যাযাবররা ক্যারাভান ও কাঠ দিয়ে বানানো বাড়িতে বসত গড়ে তুলেছিল। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.