সরকারের ব্যয় সংকোচনের প্রতিবাদে গ্রিসে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট

র্মঘটে অচল রাজধানী এথেন্সসহ পুরো গ্রিস। সরকারের ব্যয় সংকোচনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষের ধর্মঘট ও বিক্ষোভ। রাজধানী এথেন্সে অর্ধলাখেরও বেশি বিক্ষোভকারী কেন্দ্রীয় সিনট্যাগমা স্কয়ারে অবস্থান নিয়েছেন। এর পাশেই রয়েছে পার্লামেন্ট ভবন। পুলিশ জানায়, গতকাল বুধবার শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার এ ধর্মঘটে ৬০ হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারী গ্রিসের বিভিন্ন শহর অভিমুখে এগিয়ে যাচ্ছেন। ১৫ হাজার মানুষ দেশের দ্বিতীয় শহর থেসালুনিকিতে বিক্ষোভ করছেন। পাওয়া গেছে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের খবরও। ঋণখেলাপি থেকে বাঁচতে গ্রিসের আরো অর্থ দরকার।


সেই অর্থের জন্যই আন্তর্জাতিক দাতাদের দাবি অনুযায়ী ব্যয় সংকোচন করছে গ্রিক সরকার, যা পার্লামেন্টে অনুমোদনের অপেক্ষায়। সরকারের নতুন ব্যয় সংকোচনের প্রতিবাদে দুই দিনের সাধারণ ধর্মঘট পালন করছে ইউনিয়নগুলো। বিক্ষোভকারীরা রাজধানীর কেন্দ্রীয় সিনট্যাগমা স্কয়ারে অবস্থান নেওয়ায় ওই এলাকার দুটি মেট্রো রেলস্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে শহরে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ নামানো হয়েছে। বিভিন্ন দেশের অ্যাম্বেসিসহ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা পাহারা দিচ্ছে পুলিশ। এক বিক্ষোভকারী জানালেন, সরকারের পতন অনিবার্য। সরকারের বেতন কমানো ও চাকরিচ্যুতি পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভিন্ন সরকারি ভবন আটক করে রেখেছে।'আমি একটি বেসরকারি কম্পানিতে চাকরি করি। এখন চাকরি যায় যায় অবস্থায় আছি। আমাদের বসেরা বর্তমান সংকটের সুযোগ নিচ্ছেন। যাকে-তাকে চাকরিচ্যুত করছেন। সরকারের বিবেকহীন পদক্ষেপ এখন মন্দ থেকে আরো বাজে অবস্থার দিকে যাচ্ছে। এতে দেশের সামান্য মঙ্গলও নেই। আমরা সবাই এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই আমরা এখন বেপরোয়া।' বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪৫ বছরের এক নারী জানান, বেসরকারি কর্মচারীদের প্রধান ইউনিয়ন জিএসইই ও সরকারি কর্মচারীদের প্রধান ইউনিয়ন অ্যাদিদি সরকারবিরোধী এ ধর্মঘট ও বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিলেও তাতে অংশ নিয়েছেন সাধারণ গ্রিকরা। সরকারি চাকুরে, চিকিৎসক, শিক্ষক, গাড়ির ড্রাইভার, নাবিক, ব্যবসায়ীসহ এতে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন পেশাজীবীরা। রেস্টুরেন্ট মালিক, পেট্রল স্টেশন কর্মচারীসহ অনেক ব্যবসায়ী তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। বুধবার এয়ার ট্রাফিক কনট্রোলাররাও ১২ ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি পালন করেন। সরকারের নতুন ব্যয় সংকোচন নীতিতে রয়েছ_যৌথ বেতন সংস্কার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন মুজরি ব্যবস্থা, কয়েক হাজার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাময়িক চাকরিচ্যুতি। ইইউ ও আইএমএফ থেকে গত বছর প্রতিশ্রুত ১১০ বিলিয়ন ইউরো ঋণ পাওয়ার জন্য তাদের দাবি অনুযায়ী সরকারকে এ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। ঋণখেলাপি থেকে বাঁচতে মধ্য নভেম্বরে গ্রিক সরকারকে তাদের দেনা পরিশোধ করতে হবে। এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.