ক্ষমতার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা মানুষটি by সাইফুল সামিন
একেই বলে নিয়তি! এই ক’দিন আগেই বিক্ষোভকারীদের ‘ইঁদুর’ ও ‘তেলাপোকা’ বলে অভিহিত করেছিলেন গাদ্দাফি। অথচ শেষ মুহূর্তে নিজের জীবন বাঁচাতে সেই মানুষটিই ইঁদুরের মতো আশ্রয় নিয়েছিলেন ময়লা-আবর্জনায় ভরা পানি নিষ্কাষণের একটি সুরঙ্গপথে। আর সেই আশ্রয়স্থলই তাঁর কাল হয়ে দাঁড়ায়। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন গাদ্দাফি। এই দীর্ঘ সময় ক্ষমতাকে টেকসই করতে বিরোধীদের নির্মমভাবে দমন করেছেন।
জন্ম দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের। আর লিবিয়ার তেল সম্পদের বিনিময়ে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। এত কিছুর পরও ক্ষমতার নেশায় তিনি ছিলেন বুঁদ। আর এই ক্ষমতার লোভের কারণেই গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁকে অত্যন্ত করুণভাবে জীবন দিতে হলো। বিশ্লেষকদের মতে, নির্মমতা ও দমন-পীড়নই ছিল গাদ্দাফির ক্ষমতার উত্স। এ কারণেই তিনি ৪২ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় টিকে থাকতে পেরেছেন। আর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে আফ্রিকা অঞ্চলে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটিয়েছেন।
গাদ্দাফির পক্ষত্যাগী বিচারমন্ত্রী মুস্তফা মোহাম্মদ আবদেল জলিল জানান, লকারবি বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন গাদ্দাফি। তা ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও অনেক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর চরদের বিরুদ্ধে বার্লিনের একটি নাইট ক্লাবে বোমা হামলা, এক ব্রিটিশ পুলিশকে হত্যাসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, লিবিয়ায় গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এনটিসি দাবি করেছে, ত্রিপোলিতে তাঁরা বেশ কয়েকটি গণকবরের সন্ধান পেয়েছে। বিরুদ্ধ মতালম্বীদের হত্যা করে এসব গণকবরে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
গাদ্দাফির নির্মমতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে এনটিসির জ্যেষ্ঠ সদস্য মোহাম্মদ সায়েহ বলেছেন, এই পিশাচের কারণে লিবিয়া ৭০ হাজার শ্রেষ্ঠ মানুষ হারিয়েছে।
আরব বিশ্বে প্রথম বিক্ষোভ দেখা যায় তিউনিসিয়ায়। জনতার বিক্ষোভের মুখে এ বছর ১৪ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি জনতার ওপর শক্তি প্রয়োগ করার সাহস দেখাননি। মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি আলোচনারও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লিবিয়ার পরিস্থিতি ছিল একেবারেই ভিন্ন। ক্ষমতা ধরে রাখতে মুয়াম্মার গাদ্দাফি ছিলেন মরিয়া। এ জন্য গণহত্যা চালাতেও তিনি দ্বিধা করেননি।
চার দশকের শাসনামলে গাদ্দাফি একচ্ছত্রভাবে কেবল ক্ষমতাই উপভোগ করেননি, গড়ে তুলেছেন সম্পদের সুবিশাল পাহাড়। লিবিয়া বিশ্বের অন্যতম তেল সরবরাহকারী দেশ। বিশ্লেষকদের মতে, এই তেল সম্পদের বিনিময়ে লিবিয়া যে অর্থ উপার্জন করেছে, তার সিংহভাগই গেছে গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের পকেটে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ টিম নিব্লকের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের সম্পদের পরিমাণ অগণিত। দুবাই, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পারস্য উপসাগর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাংকে গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অনেক গোপন ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাঁদের এসব ব্যাংক হিসাবে কয়েক’শ কোটি ডলার অর্থ জমা রয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশে তাঁরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগও করেছেন। এই অর্থ এসেছে দেশটির তেল খাত থেকে।
গাদ্দাফির ব্যাপারে এতদিন পশ্চিমারা ছিল নিশ্চুপ। এমনকি ব্রিটিশ সরকার গাদ্দাফির কাছে বিপুল অস্ত্র পর্যন্ত বিক্রি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমাদের এই স্বৈরশাসক-প্রীতিই গাদ্দাফিকে ভয়ংকর করে তুলেছিল।
আসলে গাদ্দাফির ব্যাপারে পশ্চিমাদের এই নীরবতার মূলে ছিল তেলের রাজনীতি। আর সেই তেলের অন্যতম জোগানদাতা ছিলেন গাদ্দাফি। কিন্তু সম্প্রতি গাদ্দাফি তাঁদের প্রতিকূলে চলে গিয়েছিলেন। তাই সুযোগ বুঝে লিবিয়ায় গাদ্দাফি বিরোধী জন-অসন্তোষ দেখা দেওয়ার পরই পশ্চিমারা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেন।
সমালোচকদের মতে, লিবিয়ায় একটি কারজাই মার্কা সরকার বসিয়ে দেশটির তেল সম্পদ সহজে করায়ত্ত করার জন্যই পশ্চিমারা গাদ্দাফিকে হটাতে এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। লিবিয়ায় গাদ্দাফি এখন কেবলই ইতিহাস। কিন্তু যে মুক্তির জন্য দেশটির জনগণ যুদ্ধ করেছে, গাদ্দাফিবিহীন লিবিয়ার জনগণ সেই মুক্তির স্বাদ পাবেন কিনা, সময়ই তা বলে দেবে।
গাদ্দাফির পক্ষত্যাগী বিচারমন্ত্রী মুস্তফা মোহাম্মদ আবদেল জলিল জানান, লকারবি বিমান হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন গাদ্দাফি। তা ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আরও অনেক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর চরদের বিরুদ্ধে বার্লিনের একটি নাইট ক্লাবে বোমা হামলা, এক ব্রিটিশ পুলিশকে হত্যাসহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, লিবিয়ায় গাদ্দাফিবিরোধী বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এনটিসি দাবি করেছে, ত্রিপোলিতে তাঁরা বেশ কয়েকটি গণকবরের সন্ধান পেয়েছে। বিরুদ্ধ মতালম্বীদের হত্যা করে এসব গণকবরে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
গাদ্দাফির নির্মমতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে এনটিসির জ্যেষ্ঠ সদস্য মোহাম্মদ সায়েহ বলেছেন, এই পিশাচের কারণে লিবিয়া ৭০ হাজার শ্রেষ্ঠ মানুষ হারিয়েছে।
আরব বিশ্বে প্রথম বিক্ষোভ দেখা যায় তিউনিসিয়ায়। জনতার বিক্ষোভের মুখে এ বছর ১৪ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি জনতার ওপর শক্তি প্রয়োগ করার সাহস দেখাননি। মিসরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারক শক্তি প্রয়োগের পাশাপাশি আলোচনারও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লিবিয়ার পরিস্থিতি ছিল একেবারেই ভিন্ন। ক্ষমতা ধরে রাখতে মুয়াম্মার গাদ্দাফি ছিলেন মরিয়া। এ জন্য গণহত্যা চালাতেও তিনি দ্বিধা করেননি।
চার দশকের শাসনামলে গাদ্দাফি একচ্ছত্রভাবে কেবল ক্ষমতাই উপভোগ করেননি, গড়ে তুলেছেন সম্পদের সুবিশাল পাহাড়। লিবিয়া বিশ্বের অন্যতম তেল সরবরাহকারী দেশ। বিশ্লেষকদের মতে, এই তেল সম্পদের বিনিময়ে লিবিয়া যে অর্থ উপার্জন করেছে, তার সিংহভাগই গেছে গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের পকেটে।
মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ টিম নিব্লকের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ পত্রিকা গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের সম্পদের পরিমাণ অগণিত। দুবাই, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পারস্য উপসাগর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ডসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যাংকে গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অনেক গোপন ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাঁদের এসব ব্যাংক হিসাবে কয়েক’শ কোটি ডলার অর্থ জমা রয়েছে। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশে তাঁরা বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগও করেছেন। এই অর্থ এসেছে দেশটির তেল খাত থেকে।
গাদ্দাফির ব্যাপারে এতদিন পশ্চিমারা ছিল নিশ্চুপ। এমনকি ব্রিটিশ সরকার গাদ্দাফির কাছে বিপুল অস্ত্র পর্যন্ত বিক্রি করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমাদের এই স্বৈরশাসক-প্রীতিই গাদ্দাফিকে ভয়ংকর করে তুলেছিল।
আসলে গাদ্দাফির ব্যাপারে পশ্চিমাদের এই নীরবতার মূলে ছিল তেলের রাজনীতি। আর সেই তেলের অন্যতম জোগানদাতা ছিলেন গাদ্দাফি। কিন্তু সম্প্রতি গাদ্দাফি তাঁদের প্রতিকূলে চলে গিয়েছিলেন। তাই সুযোগ বুঝে লিবিয়ায় গাদ্দাফি বিরোধী জন-অসন্তোষ দেখা দেওয়ার পরই পশ্চিমারা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেন।
সমালোচকদের মতে, লিবিয়ায় একটি কারজাই মার্কা সরকার বসিয়ে দেশটির তেল সম্পদ সহজে করায়ত্ত করার জন্যই পশ্চিমারা গাদ্দাফিকে হটাতে এ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। লিবিয়ায় গাদ্দাফি এখন কেবলই ইতিহাস। কিন্তু যে মুক্তির জন্য দেশটির জনগণ যুদ্ধ করেছে, গাদ্দাফিবিহীন লিবিয়ার জনগণ সেই মুক্তির স্বাদ পাবেন কিনা, সময়ই তা বলে দেবে।
No comments