পোশাক শিল্পের অবদান বাড়লেও পরিবেশের জন্য উদ্বেগজনক -অ্যাকশন এইডের প্রতিবেদন
পোশাক
শিল্পখাত দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেও, পরিবেশের জন্য খুবই
উদ্বেগজনক। শিল্পের ক্রমাগত বিকাশের ফলে উৎপাদিত বর্জ্যের কারণে ব্যাপকভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন থেকেই সব পক্ষকে
একসঙ্গে কাজ করতে হবে। গত ২১ এপ্রিল ঢাকার ব্র্যাক সেন্টারে অ্যাকশন এইড
বাংলাদেশ এবং ফ্যাশন রেভোলিউশন আয়োজিত ‘ভয়েসেস অ্যান্ড সল্যুশনস’
প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ঢাকা
উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এছাড়া সেমিনারে
বক্তব্য রাখেন জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান, নিউ এজ
গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক ও বিজিএমইএ পরিচালক শরীফ জহির এবং কিউটেক্স সল্যুশন লিমিটেডের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক তহুরা খানম। অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ
কবিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফ্যাশন রেভুল্যুশনের
কান্ট্রি ডিরেক্টর নওশীন খায়ের।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিবেশের উপর পোশাক শিল্পখাতের এই নেতিবাচক প্রভাব কমাতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প কলকারখানার পানি, জ্বালানী ব্যবহার হ্রাস করে বর্জ্য নিষ্কাশন কমানো প্রয়োজন।
প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন শিল্পের প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বাজার রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। তবে এই ফ্যাশন খাতই আবার পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দূষণকারী খাত। ফ্যাশন খাত বিশ্বের ২০ শতাংশ বর্জ্য পানি এবং ১০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের জন্য দায়ী। একই সঙ্গে তুলা চাষ ২০ শতাংশ কীটনাশক বস্তু এবং ১০ শতাংশ কীটনাশক উৎপাদনের জন্য দায়ী। এ খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ বর্জ্য পুনরায় ব্যবহার করা যায়। ফলে ৮৫ শতাংশ বর্জ্যই প্রকৃতিতে ফেরত আসে বলেও উল্লেখ্য করা প্রতিবেদনে।
এতে আরো বলা হয়, শিল্প কারখানার সকল ক্ষেত্র, যেমন কাটা, সেলাই, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও তৈরি পোশাক উৎপাদনে বায়ু, পানি ও মাটি দূষণ করে থাকে। বেশিরভাগ কারখানা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় তাদের বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের এক গবেষণা মতে, প্রতিবছর পোশাক শিল্প কারখানায় পোশাক ও তুলা ধৌতকরণ এবং রঙ-এর কাজে ১৫০০ বিলিয়ন লিটার পানি ব্যবহার করা হয়। কারখানাগুলো ব্যবহারের পর এই বিষাক্ত পানি নদী এবং খালে নিষ্কাশন করে। নওশীন খায়ের প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ইউএনএফসিসি’র মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ফ্যাশন শিল্পের জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস এবং বর্জ্য নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবে ৬০ শতাংশ।
২০৫০ সালের মধ্যে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন হবে বর্তমানে বিদ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদের তিনগুণ। তাই এ নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনতে টেকসই ফ্যাশন শিল্পের দিকে ধাবমান হওয়া জরুরি। ফারাহ কবির বলেন, পানি দূষণের ফলে একদিকে কমছে মাছের সংখ্যা অপরদিকে হ্রাস পাচ্ছে চাষের উপযোগী জমি। বেশিরভাগ স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীদের জীবিকা এখন ঝুঁঁকিপূর্ণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এছাড়া ফ্যাশন শিল্পের কারণে বাংলাদেশ তার ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ হারাচ্ছে বলেও জানানো হয় সেমিনারে। তবে পোশাক শিল্পের সামগ্রিক প্রভাব এবং স্থায়ী প্রক্রিয়ার ওপর ব্যাপক গবেষণা নেই বলে জানান বক্তারা। স্বচ্ছতা এবং গবেষণার মাধ্যমে আরো প্রমাণভিত্তিক তথ্যের প্রয়োজন বলে মত দেন আলোচকরা।
প্রধান অতিথি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করছিলাম তখন আমাদের এ সম্পর্কে সচেতনার শিক্ষা কেউ দেয়নি। আমি যখন নিজেই ৯০’র দিকে ব্যবসা শুরু করি তখন কিন্তু কেউ আমাকে বলেনি পানি কোন দিক দিয়ে প্রবাহিত করবো। তিনি বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিল্পকারখানা থেকে নিষ্কাশিত বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে হবে। মেয়র বলেন, অংশীদারদের মধ্যেই এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পোশাক শিল্পখাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব না এড়িয়ে নিজেদের ব্যবহারে ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।
বিজিএমইএ-এর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান জানান, বর্জ্য নিষ্কাশনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। এজন্য কর্মচারী ও শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
বিজিএমইএর সদ্য নির্বাচিত পরিচালক শরীফ জহির বলেন, কাঁচামাল দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করলে বর্জ্যের পরিমাণ আরো কমিয়ে আনা সম্ভব। পরিবেশবান্ধব মেশিন ব্যবহারসহ ভালো উদ্যোগগুলো প্রচারের মাধ্যমে অংশীদারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এই সমস্যার সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, পরিবেশের উপর পোশাক শিল্পখাতের এই নেতিবাচক প্রভাব কমাতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিল্প কলকারখানার পানি, জ্বালানী ব্যবহার হ্রাস করে বর্জ্য নিষ্কাশন কমানো প্রয়োজন।
প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন শিল্পের প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের বাজার রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। তবে এই ফ্যাশন খাতই আবার পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দূষণকারী খাত। ফ্যাশন খাত বিশ্বের ২০ শতাংশ বর্জ্য পানি এবং ১০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের জন্য দায়ী। একই সঙ্গে তুলা চাষ ২০ শতাংশ কীটনাশক বস্তু এবং ১০ শতাংশ কীটনাশক উৎপাদনের জন্য দায়ী। এ খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ বর্জ্য পুনরায় ব্যবহার করা যায়। ফলে ৮৫ শতাংশ বর্জ্যই প্রকৃতিতে ফেরত আসে বলেও উল্লেখ্য করা প্রতিবেদনে।
এতে আরো বলা হয়, শিল্প কারখানার সকল ক্ষেত্র, যেমন কাটা, সেলাই, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও তৈরি পোশাক উৎপাদনে বায়ু, পানি ও মাটি দূষণ করে থাকে। বেশিরভাগ কারখানা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় তাদের বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের এক গবেষণা মতে, প্রতিবছর পোশাক শিল্প কারখানায় পোশাক ও তুলা ধৌতকরণ এবং রঙ-এর কাজে ১৫০০ বিলিয়ন লিটার পানি ব্যবহার করা হয়। কারখানাগুলো ব্যবহারের পর এই বিষাক্ত পানি নদী এবং খালে নিষ্কাশন করে। নওশীন খায়ের প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ইউএনএফসিসি’র মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ফ্যাশন শিল্পের জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস এবং বর্জ্য নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবে ৬০ শতাংশ।
২০৫০ সালের মধ্যে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন হবে বর্তমানে বিদ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদের তিনগুণ। তাই এ নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনতে টেকসই ফ্যাশন শিল্পের দিকে ধাবমান হওয়া জরুরি। ফারাহ কবির বলেন, পানি দূষণের ফলে একদিকে কমছে মাছের সংখ্যা অপরদিকে হ্রাস পাচ্ছে চাষের উপযোগী জমি। বেশিরভাগ স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবীদের জীবিকা এখন ঝুঁঁকিপূর্ণ। পরিস্থিতি সামাল দিতে সব পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এছাড়া ফ্যাশন শিল্পের কারণে বাংলাদেশ তার ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ হারাচ্ছে বলেও জানানো হয় সেমিনারে। তবে পোশাক শিল্পের সামগ্রিক প্রভাব এবং স্থায়ী প্রক্রিয়ার ওপর ব্যাপক গবেষণা নেই বলে জানান বক্তারা। স্বচ্ছতা এবং গবেষণার মাধ্যমে আরো প্রমাণভিত্তিক তথ্যের প্রয়োজন বলে মত দেন আলোচকরা।
প্রধান অতিথি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করছিলাম তখন আমাদের এ সম্পর্কে সচেতনার শিক্ষা কেউ দেয়নি। আমি যখন নিজেই ৯০’র দিকে ব্যবসা শুরু করি তখন কিন্তু কেউ আমাকে বলেনি পানি কোন দিক দিয়ে প্রবাহিত করবো। তিনি বলেন, সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিল্পকারখানা থেকে নিষ্কাশিত বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে হবে। মেয়র বলেন, অংশীদারদের মধ্যেই এখনো সচেতনতার অভাব রয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে পোশাক শিল্পখাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। নিজেদের দায়িত্ব না এড়িয়ে নিজেদের ব্যবহারে ও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।
বিজিএমইএ-এর সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান জানান, বর্জ্য নিষ্কাশনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। এজন্য কর্মচারী ও শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
বিজিএমইএর সদ্য নির্বাচিত পরিচালক শরীফ জহির বলেন, কাঁচামাল দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করলে বর্জ্যের পরিমাণ আরো কমিয়ে আনা সম্ভব। পরিবেশবান্ধব মেশিন ব্যবহারসহ ভালো উদ্যোগগুলো প্রচারের মাধ্যমে অংশীদারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এই সমস্যার সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
No comments