বাড়ি মাতিয়ে রাখতো জায়ান: এমন মৃত্যু মানা যায় না by কাজী সোহাগ
খেলাধুলা
আর হাসি আনন্দে পুরো বাড়ি মাতিয়ে রাখতো জায়ান চৌধুরী। বিকেল হলেই বনানীর
দুই নম্বর রোডের ৯নং বাড়ির সামনের জায়গাতে শোনা যেতো তার চিৎকারের শব্দ। বল
আর ব্যাট নিয়ে ছিল তার ছোটাছুটি। সবচেয়ে প্রিয় তার ক্রিকেট খেলা। মাঝে
মাঝে নানা শেখ সেলিমকে টেনে নিয়ে আসতো ক্রিকেট খেলতে। বাধ্য করতো বল করাতে।
নাতির এ আবদারে খুব ভালোভাবেই সাড়া দিতেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম। মেতে উঠতেন ক্রিকেট খেলায়। তাদের সঙ্গে কখনও যোগ দিতেন শেখ সেলিমের স্ত্রীও। এসবই এখন স্মৃতি।
গত বুধবারও (১৭ই এপ্রিল) এ বাড়ির আঙ্গিনায় খেলায় মেতেছিল জায়ান চৌধুরী। পরদিনই বৃহস্পতিবার দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যান শেখ সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া। তারা ওঠেন সেখানকার পাঁচ তারকা হোটেল সাংগ্রিলা’য়। রোববার সকালে সেখানে সকালের নাস্তা করতে জায়ানকে সঙ্গে নিয়ে নিচে নামেন জামাতা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স। আর হোটেল কক্ষে ছোট ছেলেকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন সোনিয়া। এ সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নিহত হয় জায়ান। মারাত্মক আহত হন প্রিন্স। চারদিন থেকে গতকাল সকাল ১১টায় দেশে ফেরার কথা ছিল জায়ানদের। জায়ান ঢাকায় সানবীম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। শ্রীলংকায় ঘটে যাওয়া বোমা হামলায় নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়ে থেমে যায় জায়ানের সব চঞ্চলতা। মাত্র চার দিনের ব্যবধানেই নীরব হয়ে পড়েছে বনানীর শেখ সেলিমের বাসা। নাতিকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন তিনি। তাদের নিয়ে একবাড়িতেই বসবাস ছিল তার।
জায়ানের চঞ্চলতা ছুঁয়ে যেতো প্রতিবেশিদেরও। তাই তো জায়ানের মৃত্যুর খবরে তারা ভিড় জমান শেখ সেলিমের বাসায়। স্মৃতিচারণ করেন নানা দিনের, নানা ঘটনার। ১০ নম্বর বাসার ড্রাইভার জাহিদ মানবজমিনকে জানান, ছেলেটার জন্য সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। প্রতিদিন বিকেল হলেই সে বাড়ির সামনের জায়গাতে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠত। অনেক সময় বল বাইরে চলে আসত। আমি নিজে গিয়ে বলটা দিয়ে আসতাম। দেখতাম তার ক্রিকেট খেলা।
পাশে বড় মাঠ থাকলেও সেখানে সে খেলতে যেতো না। বাড়ির সামনের জায়গাটুকুই ছিল তার সবচেয়ে প্রিয়। বাড়ির কেয়ারটেকার, নিরাপত্তা রক্ষী আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করত। মাঝে মাঝে দেখতাম বাবার হাত ধরে মসজিদে যাচ্ছে নামাজ পড়তে। তিনি বলেন, এরকম হাসিখুশি শিশুর মুত্যু মেনে নেয়া কঠিন। বিকেল হলেই মনে পড়বে জায়ানকে আর তার ক্রিকেট খেলাকে। প্রায় একই অনুভূতি জানান শেখ সেলিমের বাড়ির দুই কেয়ারটেকার। বিষন্ন মনে তারা বলেন, জায়ানের কারণে বিকেলের সময়টা আমাদেরও ভালো কাটত। বড় হয়ে সে ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে চেয়েছিল। পড়াশোনা শেষ হতেই ওপর থেকে নিচে নেমে আসত। খেলায় মেতে উঠত আমাদের সঙ্গে। তারা জানান, শেখ সেলিম স্যার ও ম্যাডাম এ শোক কিভাবে সইবেন জানি না। কারণ জায়ান ছিল তাদের সবচেয়ে বেশি আদরের, বেশি প্রিয়। তার যে কোন আবদার সহজেই পূরণ করতেন তারা। খেলা থেকে শুরু করে ঘাড়ে ওঠা, কোলে ওঠা এসবই ছিল তার আবদারের মূল বিষয়।
জায়ানের মৃত্যুতে শেখ সেলিমের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গতকাল সকালে বনানীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকবিহ্বল সবাই। ১০-১২ জন হাফেজ বাসার নিচতলায় কোরআন খতম দিচ্ছেন। বাসার সামনে ও রাস্তার দুই পাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কাউকে বাসায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। শেখ সেলিমের বড় ছেলে শেখ ফাহিমের ছেলে শেখ জায়াদান প্রায় সমবয়সী জায়ানের। মৃত্যুর বিষয়টি ঠিক না বুঝলেও তার মনে নানা প্রশ্ন। সে জানতে চায় কিভাবে মারা গেলো জায়ান। বোমায় মারা গেছে শুনে সে বললো-লাফ দিতে পারল না জায়ান। তাহলে তো বোমা তার গায়ে লাগত না। মাঝে মাঝে জায়ানের খেলার সঙ্গীও হতো জায়াদান। জায়ান চৌধুরীর মরদেহ আগামীকাল শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে আনা হবে। এদিন আছর নামাজের পর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে তার জানাজা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে হামলায় আহত শেখ সেলিমের জামাতা মশিউল হক চৌধুরী সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে এখনই দেশে আনা হচ্ছে না। গতকাল শেখ সেলিমের বাড়িতে তাকে সান্ত্বনা দিতে যান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা। তারা জানান, এরইমধ্যে ব্রুনাই সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ও শেখ সেলিমের ছেলে শেখ ফাহিম শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছেন। ঢাকা থেকে গতকাল সেখানে গিয়েছেন শেখ সেলিমের স্ত্রী ও আরেক ছেলে শেখ নাইম। নাতি নিহত হওয়ায় খবরে ভেঙে পড়েছেন শেখ সেলিম। নেতাকর্মীরা তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
তার বাসায় আসেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার ওই হামলায় শেখ সেলিমের জামাই প্রিন্স বাজেভাবে আহত হয়েছেন। তার পায়ে বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তিনি মুভ করতে পারবেন না। তিনি বলেন ব্রেকফাস্ট করার জন্য জামাই এবং তার ছেলে জায়ান চৌধুরী হোটেলের নিচে অবস্থান করছিলেন। এসময় একজন দৌঁড়ে এসে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে ঘটায়। এতে জায়ান নিহত হয়। হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, হামলার ঘটনার সময় জায়ানের মা সোনিয়া ছোট ছেলেকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন হোটেল কক্ষে। কিন্তু বিস্ফোরণের ভয়াবহতা তাদেরকেও আঘাত করে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শেখ সেলিমের মেয়ে সোনিয়া। এদিকে ব্রুনাইয়ে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে জায়ান ও প্রিন্সের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেন।
গত বুধবারও (১৭ই এপ্রিল) এ বাড়ির আঙ্গিনায় খেলায় মেতেছিল জায়ান চৌধুরী। পরদিনই বৃহস্পতিবার দুই ছেলে ও স্বামীকে নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে যান শেখ সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া। তারা ওঠেন সেখানকার পাঁচ তারকা হোটেল সাংগ্রিলা’য়। রোববার সকালে সেখানে সকালের নাস্তা করতে জায়ানকে সঙ্গে নিয়ে নিচে নামেন জামাতা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স। আর হোটেল কক্ষে ছোট ছেলেকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন সোনিয়া। এ সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে নিহত হয় জায়ান। মারাত্মক আহত হন প্রিন্স। চারদিন থেকে গতকাল সকাল ১১টায় দেশে ফেরার কথা ছিল জায়ানদের। জায়ান ঢাকায় সানবীম স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। শ্রীলংকায় ঘটে যাওয়া বোমা হামলায় নির্মম মৃত্যুর শিকার হয়ে থেমে যায় জায়ানের সব চঞ্চলতা। মাত্র চার দিনের ব্যবধানেই নীরব হয়ে পড়েছে বনানীর শেখ সেলিমের বাসা। নাতিকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন তিনি। তাদের নিয়ে একবাড়িতেই বসবাস ছিল তার।
জায়ানের চঞ্চলতা ছুঁয়ে যেতো প্রতিবেশিদেরও। তাই তো জায়ানের মৃত্যুর খবরে তারা ভিড় জমান শেখ সেলিমের বাসায়। স্মৃতিচারণ করেন নানা দিনের, নানা ঘটনার। ১০ নম্বর বাসার ড্রাইভার জাহিদ মানবজমিনকে জানান, ছেলেটার জন্য সত্যিই খুব খারাপ লাগছে। প্রতিদিন বিকেল হলেই সে বাড়ির সামনের জায়গাতে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠত। অনেক সময় বল বাইরে চলে আসত। আমি নিজে গিয়ে বলটা দিয়ে আসতাম। দেখতাম তার ক্রিকেট খেলা।
পাশে বড় মাঠ থাকলেও সেখানে সে খেলতে যেতো না। বাড়ির সামনের জায়গাটুকুই ছিল তার সবচেয়ে প্রিয়। বাড়ির কেয়ারটেকার, নিরাপত্তা রক্ষী আর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সে ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করত। মাঝে মাঝে দেখতাম বাবার হাত ধরে মসজিদে যাচ্ছে নামাজ পড়তে। তিনি বলেন, এরকম হাসিখুশি শিশুর মুত্যু মেনে নেয়া কঠিন। বিকেল হলেই মনে পড়বে জায়ানকে আর তার ক্রিকেট খেলাকে। প্রায় একই অনুভূতি জানান শেখ সেলিমের বাড়ির দুই কেয়ারটেকার। বিষন্ন মনে তারা বলেন, জায়ানের কারণে বিকেলের সময়টা আমাদেরও ভালো কাটত। বড় হয়ে সে ক্রিকেট খেলোয়াড় হতে চেয়েছিল। পড়াশোনা শেষ হতেই ওপর থেকে নিচে নেমে আসত। খেলায় মেতে উঠত আমাদের সঙ্গে। তারা জানান, শেখ সেলিম স্যার ও ম্যাডাম এ শোক কিভাবে সইবেন জানি না। কারণ জায়ান ছিল তাদের সবচেয়ে বেশি আদরের, বেশি প্রিয়। তার যে কোন আবদার সহজেই পূরণ করতেন তারা। খেলা থেকে শুরু করে ঘাড়ে ওঠা, কোলে ওঠা এসবই ছিল তার আবদারের মূল বিষয়।
জায়ানের মৃত্যুতে শেখ সেলিমের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। গতকাল সকালে বনানীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকবিহ্বল সবাই। ১০-১২ জন হাফেজ বাসার নিচতলায় কোরআন খতম দিচ্ছেন। বাসার সামনে ও রাস্তার দুই পাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নিকটাত্মীয় ছাড়া অন্য কাউকে বাসায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। শেখ সেলিমের বড় ছেলে শেখ ফাহিমের ছেলে শেখ জায়াদান প্রায় সমবয়সী জায়ানের। মৃত্যুর বিষয়টি ঠিক না বুঝলেও তার মনে নানা প্রশ্ন। সে জানতে চায় কিভাবে মারা গেলো জায়ান। বোমায় মারা গেছে শুনে সে বললো-লাফ দিতে পারল না জায়ান। তাহলে তো বোমা তার গায়ে লাগত না। মাঝে মাঝে জায়ানের খেলার সঙ্গীও হতো জায়াদান। জায়ান চৌধুরীর মরদেহ আগামীকাল শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে আনা হবে। এদিন আছর নামাজের পর বনানীর চেয়ারম্যান বাড়ি মাঠে তার জানাজা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
তবে হামলায় আহত শেখ সেলিমের জামাতা মশিউল হক চৌধুরী সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে এখনই দেশে আনা হচ্ছে না। গতকাল শেখ সেলিমের বাড়িতে তাকে সান্ত্বনা দিতে যান আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা। তারা জানান, এরইমধ্যে ব্রুনাই সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ও শেখ সেলিমের ছেলে শেখ ফাহিম শ্রীলঙ্কায় পৌঁছেছেন। ঢাকা থেকে গতকাল সেখানে গিয়েছেন শেখ সেলিমের স্ত্রী ও আরেক ছেলে শেখ নাইম। নাতি নিহত হওয়ায় খবরে ভেঙে পড়েছেন শেখ সেলিম। নেতাকর্মীরা তাকে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছেন।
তার বাসায় আসেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার ওই হামলায় শেখ সেলিমের জামাই প্রিন্স বাজেভাবে আহত হয়েছেন। তার পায়ে বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তিনি মুভ করতে পারবেন না। তিনি বলেন ব্রেকফাস্ট করার জন্য জামাই এবং তার ছেলে জায়ান চৌধুরী হোটেলের নিচে অবস্থান করছিলেন। এসময় একজন দৌঁড়ে এসে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে ঘটায়। এতে জায়ান নিহত হয়। হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, হামলার ঘটনার সময় জায়ানের মা সোনিয়া ছোট ছেলেকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন হোটেল কক্ষে। কিন্তু বিস্ফোরণের ভয়াবহতা তাদেরকেও আঘাত করে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শেখ সেলিমের মেয়ে সোনিয়া। এদিকে ব্রুনাইয়ে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে জায়ান ও প্রিন্সের জন্য সকলের দোয়া কামনা করেন।
No comments