‘ওদের পুড়িয়ে ফেল, গুলি করো, মেরে ফেল’ -মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইসরায়েলিদের উল্লাস
পৃথিবীর
বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার খ্যাত গাজা উপত্যকা ও ইসরায়েলের দখলীকৃত
জেরুজালেমের মধ্যকার দূরত্ব মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। সোমবার জেরুজালেমে সঙ্গীত
পরিবেশনার মধ্য দিয়ে যখন মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি
টানা হচ্ছিলো, গাজায় তখনও নিহত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ গোনার কাজটি সম্পন্ন
হয়নি সম্ভবত। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই তাদের এক
প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের সিদ্ধান্তের
প্রতিবাদে সেখানে বিক্ষোভে নামা নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর এদিন বেদম
প্রহারের পাশাপাশি আটক-গ্রেফতারসহ নানান ধারার দমনপীড়ন চালানো হয়। আর যে
ইসরায়েলিরা সেই অনুষ্ঠান দেখতে এসেছিলেন, তারা এতে উল্লাস প্রকাশ করে। তারা
শ্লোগান তোলে বিক্ষোভরতদের পুড়িয়ে কিংবা গুলি করে হত্যা করা হোক।
গত বছরের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সোমবার যে সময়ে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের ঘোষণা বাস্তবায়িত হচ্ছে বাইরে তখন বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিরা। মিডলইস্ট আই তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দূতাবাসের বাইরে অনেক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে বেদম পেটানোর পাশাপাশি গ্রেফতারসহ বিভিন্ন ধারার নিপীড়ন চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আর ইসরায়েলিরা সেই নিপীড়নের ঘটনা উপভোগ করেছে।
উল্লেখ্য, ইহুদি ধর্মের নামে, ‘জায়নবাদ’ নামের মতবাদের মধ্য দিয়েই ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইসরায়েল রাষ্ট্র। জায়নবাদ ইহুদি ধর্মের দর্শন নয়, এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ; অলীক রূপকথায় যে মতবাদের শরীর গড়ে উঠেছে। জায়নবাদের ভাষ্য, জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত পবিত্র নগরীতে স্রষ্টা তাদের অধিকার ফিরিয়ে নিতে বলেছিল! ইতিহাসে নজর ফেরালে দেখা যায়, ১৮ শতক থেকে জায়নবাদ নামের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিরা তাদের বর্ণবাদী ধারণার বিস্তার ঘটিয়ে দখল হওয়া ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম দেন। জায়নবাদের মাধ্যমে তখন থেকে আজ পর্যন্ত ইহুদি জনগণের মনে ফিলিস্তিনবিরোধী বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। সেই বিদ্বেষ বুকে নিয়ে এদিন জেরুজালেমে ইসরায়েলি দূতাবাস স্থাপনের পক্ষে আনন্দ-মিছিলে অংশ নেওয়া ইসরায়েলি নাগরিকরা বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের দমনপীড়ন উপভোগ করেছে। তারা শ্লোগান তুলেছে, ‘ওদের পুড়িয়ে ফেল’, ‘গুলি করো’, ‘হত্যা করো’ বলে ।
১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ অবৈধ বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকে ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। সোমবার দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে জোরালো হওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে সীমান্ত এলাকার ওই বিক্ষোভে অংশ নেন লাখো মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি। এদিন নিহত ৫৮ ফিলিস্তিনিকে নিয়ে গ্রেট রিটার্ন মার্চ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে নিহত হওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এদিনের কর্মসূচিতে নিহতদের মধ্যে ছয় শিশু এবং একজন প্যারামেডিক রয়েছেন। ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একদিনে এত সংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনা এটাই প্রথম।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের প্রশংসা করে একে ‘ঐতিহাসিক’ মুহুর্ত বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘ কী আনন্দের দিন! প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইতিহাসকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ইতিহাস রচনা করেছেন।’ নেতানিয়াহু বলেন, ‘আজ এখানে পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, আমাদের সবচেয়ে ভালো মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস চালু হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই শহরে দূতাবাস খোলার মাধ্যমে সর্বত্র সত্য ছড়িয়ে দেবে’।
জেরুজালেমে হোয়াইট হাউসের দুই গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প যখন সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ করছিলেন, ফিলিস্তিনিরা তখন হতাহতদের নিয়ে ব্যস্ত। বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ম্যাসাকার আখ্যা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। হতাহতদের স্মরণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।
গত বছরের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সোমবার যে সময়ে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের ঘোষণা বাস্তবায়িত হচ্ছে বাইরে তখন বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিরা। মিডলইস্ট আই তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দূতাবাসের বাইরে অনেক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে বেদম পেটানোর পাশাপাশি গ্রেফতারসহ বিভিন্ন ধারার নিপীড়ন চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আর ইসরায়েলিরা সেই নিপীড়নের ঘটনা উপভোগ করেছে।
উল্লেখ্য, ইহুদি ধর্মের নামে, ‘জায়নবাদ’ নামের মতবাদের মধ্য দিয়েই ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইসরায়েল রাষ্ট্র। জায়নবাদ ইহুদি ধর্মের দর্শন নয়, এটি একটি রাজনৈতিক মতবাদ; অলীক রূপকথায় যে মতবাদের শরীর গড়ে উঠেছে। জায়নবাদের ভাষ্য, জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত পবিত্র নগরীতে স্রষ্টা তাদের অধিকার ফিরিয়ে নিতে বলেছিল! ইতিহাসে নজর ফেরালে দেখা যায়, ১৮ শতক থেকে জায়নবাদ নামের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইউরোপসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা ইহুদিরা তাদের বর্ণবাদী ধারণার বিস্তার ঘটিয়ে দখল হওয়া ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম দেন। জায়নবাদের মাধ্যমে তখন থেকে আজ পর্যন্ত ইহুদি জনগণের মনে ফিলিস্তিনবিরোধী বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। সেই বিদ্বেষ বুকে নিয়ে এদিন জেরুজালেমে ইসরায়েলি দূতাবাস স্থাপনের পক্ষে আনন্দ-মিছিলে অংশ নেওয়া ইসরায়েলি নাগরিকরা বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি সেনাদের দমনপীড়ন উপভোগ করেছে। তারা শ্লোগান তুলেছে, ‘ওদের পুড়িয়ে ফেল’, ‘গুলি করো’, ‘হত্যা করো’ বলে ।
১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ অবৈধ বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকে ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। সোমবার দূতাবাস স্থানান্তরের প্রতিবাদে জোরালো হওয়া বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে সীমান্ত এলাকার ওই বিক্ষোভে অংশ নেন লাখো মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি। এদিন নিহত ৫৮ ফিলিস্তিনিকে নিয়ে গ্রেট রিটার্ন মার্চ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে নিহত হওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এদিনের কর্মসূচিতে নিহতদের মধ্যে ছয় শিশু এবং একজন প্যারামেডিক রয়েছেন। ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর একদিনে এত সংখ্যক ফিলিস্তিনি নিহতের ঘটনা এটাই প্রথম।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের প্রশংসা করে একে ‘ঐতিহাসিক’ মুহুর্ত বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। নেতানিয়াহু বলেন, ‘ কী আনন্দের দিন! প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইতিহাসকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আপনি ইতিহাস রচনা করেছেন।’ নেতানিয়াহু বলেন, ‘আজ এখানে পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র, আমাদের সবচেয়ে ভালো মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস চালু হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই শহরে দূতাবাস খোলার মাধ্যমে সর্বত্র সত্য ছড়িয়ে দেবে’।
জেরুজালেমে হোয়াইট হাউসের দুই গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প যখন সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ করছিলেন, ফিলিস্তিনিরা তখন হতাহতদের নিয়ে ব্যস্ত। বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ম্যাসাকার আখ্যা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। হতাহতদের স্মরণে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন তিনি।
No comments