কালোদের প্রাধান্য কান উৎসবে by আলমগীর কবির কান
ব্ল্যাকস ম্যান ছবির কলাকুশলীদের সংবাদ সম্মেলন |
৭১
বছর আগে যখন কান চলচ্চিত্র উৎসবের যাত্রা শুরু হয়েছিল, তখন থেকেই গুরুত্ব
পেয়ে আসছে সামাজিক বৈষম্যগুলো। এ ব্যাপারগুলো দূর করতে যেসব চলচ্চিত্রে জোর
দেয়া হয়েছে সেগুলোকেই উৎসাহ দেয়া হয়েছে। এখন সে জায়গা দখল করেছে
‘ইউনিভার্সাল ক্রাইসিস’। বৈশ্বিক শান্তি এবং সমৃদ্ধি স্থাপনে চলচ্চিত্র এই
ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ। এ দিক
বিবেচনায় এবারের আসরে সবচেয়ে আধিপত্য দেখা গেছে কৃষ্ণাঙ্গদের।
উৎসবের অষ্টম দিনে মঙ্গলবার সকালে ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবির সংবাদ সম্মেলনে এসে কলাকুশলীরা সে কথাই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিলেন সবাইকে। আগের দিন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে হয়েছে এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার। প্রদর্শনী শেষে পর্দায় ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবির কলাকুশলীদের নাম ভেসে ওঠার পর থেকে চার মিনিট করতালি দিয়েছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর ছয় মিনিট দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান তারা। এ ছাড়া মাঝে গুনে গুনে ১২ বার হাততালি পড়েছে প্রেক্ষাগৃহে। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিখ্যাত নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান। প্রিমিয়ারের পর স্পাইক লিকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
উদ্বোধনী প্রদর্শনীর আগে পালে দো ফেস্টিভ্যাল ভবনের সামনে লাল গালিচায় হাজির হয়ে নজর কাড়েন স্পাইক লি। তার দুই হাতে ছিল দু’টি আংটি। একটিতে লেখা লাভ। আরেকটিতে হেট। পায়ে ছিল একজোড়া নাইকি জুতা। এর একটি সাদা, অন্যটি কালো। দু’টি জুতাতেই উল্লেখ রয়েছে ব্ল্যাকল্যান্সম্যান।
সত্তর দশকের কু ক্লাস ক্ল্যান (কেকেকে) আন্দোলনই এ ছবির বিষয়বস্তু। কালোদের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার সুবাদে নব্বই দশকে আফ্রিকান আমেরিকান কমিউনিটির মুখপাত্র শিল্পী হয়ে দাঁড়ান স্পাইক লি। সেই অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
এ ছবির গল্প কলোরাডোর আফ্রিকান-আমেরিকান পুলিশ অফিসার রন স্ট্যালওর্থকে ঘিরে। কেকেকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে শ্বেতাঙ্গ পরাক্রমশালী একটি সংগঠনের বেশ কয়েকটি কাজ ভেস্তে দিতে সক্ষম হন তিনি। তাকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। এ দু’টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলিউড অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটনের ছেলে জন ডেভিড ওয়াশিংটন ও স্টার ওয়ারস তারকা অ্যাডাম ড্রাইভার।
ব্ল্যাকল্যান্সম্যান তৈরি হয়েছে রন স্ট্যালওর্থের আত্মজীবনী অবলম্বনে। নিজের ছবির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত ও সামাজিক বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন স্পাইক লি। ১৯৯৭ সালে নির্মিত তার ফোর লিটল গার্লস প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয় অ্যালাবামায় বার্মিংহ্যামের ব্যাপটিস্ট চার্চে কেকেকে আন্দোলনে চার সদস্যের আক্রমণ। ১৯৬৩ সালের ওই ঘটনায় চার তরুণী নিহত হন। এ কারণে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে আফ্রিকান আমেরিকান কমিউনিটি।
ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবিতে অ্যাডাম ড্রাইভার ও জন ডেভিড ওয়াশিংটন ২৭ বছর পর কানের মূল প্রতিযোগিতায় পাওয়া গেল স্পাইক লির ছবি। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো কানে অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান করে নিলো তার কাজ। এর মধ্যে মূল প্রতিযোগিতায় ছিল ডু দ্য রাইট থিং (১৯৮৯) ও জঙ্গল ফিভার (১৯৯১)। ১৯৯৬ সালে গার্ল সিক্স দেখা গেছে আউট অব কম্পিটিশন বিভাগে। ২০০২ সালে তার টেন মিনিটস অর্ডার জায়গা পায় আঁ সার্তেন রিগার্দে। ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে ছিল ‘সামার অব স্যাম’।
১৯৮৯ সালে ডু দ্য রাইট থিং ছবির জন্য স্পাইক লি পাম দর জিততে যাচ্ছেন বলে ধরে নিয়েছিল সবাই। কিন্তু মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারকদের প্রধান উইম ওয়েন্দার্স পুরস্কারটি দিয়ে দেন স্টিভেন সোডারবার্গকে (সেক্স, লাইস অ্যান্ড ভিডিওটেপ)।
কাকতালীয় ব্যাপার হলো, একদিন আগে (১৩ মে) কানের এবারের আসরে জার্মান নির্মাতা উইম ওয়েন্দার্সের বানানো ‘পোপ ফ্রান্সিস : অ্যা ম্যান অব হিজ ওন ওয়ার্ড’ প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছে। এ ছবির মতো ব্ল্যাকল্যান্সম্যানও পরিবেশনার দায়িত্ব নিয়েছেন ফোকাস ফিচার্স।
যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিল শহরে কট্টর শ্বেতাঙ্গ ও বর্ণবাদবিরোধীদের মধ্যকার দাঙ্গার ঘটনার এক বছর পূর্ণ হওয়ার সময় আগামী ১০ আগস্ট ছবিটি মুক্তি পাবে।
এ দিকে বর্ণবাদবিরোধীদের সোচ্চার কণ্ঠস্বর ছিলেন যিনি, সেই নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মশতবর্ষ চলতি বছরই। এ উপলক্ষে এবারের কান উৎসবের সপ্তম দিনে স্পেশাল স্ক্রিনিং বিভাগে স্থান পেয়েছে ফ্রান্সের নিকোলাস শপো ও জিল পোর্ত পরিচালিত দ্য স্টেট অ্যাগেইনস্ট ম্যান্ডেলা অ্যান্ড দ্য আদারস।
সোমবার রাত ৮টায় সাল দ্যু সোসানতিয়েমে দেখানো হয় এটি। ১৯৬৩ ও ১৯৬৪ সালের ঐতিহাসিক বিচারকার্যক্রম ছিল ম্যান্ডেলাকে কেন্দ্র করে। তবে তার মতো মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া আরো আটজন ছিলেন সেখানে। নির্মম জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল তাদেরকেও। আদালতের সেসব অডিও নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্র। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে এতে।
উৎসবের অষ্টম দিনে মঙ্গলবার সকালে ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবির সংবাদ সম্মেলনে এসে কলাকুশলীরা সে কথাই নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিলেন সবাইকে। আগের দিন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গ্র্যান্ড থিয়েটার লুমিয়েরে হয়েছে এর ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার। প্রদর্শনী শেষে পর্দায় ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবির কলাকুশলীদের নাম ভেসে ওঠার পর থেকে চার মিনিট করতালি দিয়েছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর ছয় মিনিট দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান তারা। এ ছাড়া মাঝে গুনে গুনে ১২ বার হাততালি পড়েছে প্রেক্ষাগৃহে। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিখ্যাত নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান। প্রিমিয়ারের পর স্পাইক লিকে জড়িয়ে ধরেন তিনি।
উদ্বোধনী প্রদর্শনীর আগে পালে দো ফেস্টিভ্যাল ভবনের সামনে লাল গালিচায় হাজির হয়ে নজর কাড়েন স্পাইক লি। তার দুই হাতে ছিল দু’টি আংটি। একটিতে লেখা লাভ। আরেকটিতে হেট। পায়ে ছিল একজোড়া নাইকি জুতা। এর একটি সাদা, অন্যটি কালো। দু’টি জুতাতেই উল্লেখ রয়েছে ব্ল্যাকল্যান্সম্যান।
সত্তর দশকের কু ক্লাস ক্ল্যান (কেকেকে) আন্দোলনই এ ছবির বিষয়বস্তু। কালোদের পক্ষে সোচ্চার হওয়ার সুবাদে নব্বই দশকে আফ্রিকান আমেরিকান কমিউনিটির মুখপাত্র শিল্পী হয়ে দাঁড়ান স্পাইক লি। সেই অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
এ ছবির গল্প কলোরাডোর আফ্রিকান-আমেরিকান পুলিশ অফিসার রন স্ট্যালওর্থকে ঘিরে। কেকেকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে শ্বেতাঙ্গ পরাক্রমশালী একটি সংগঠনের বেশ কয়েকটি কাজ ভেস্তে দিতে সক্ষম হন তিনি। তাকে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় শ্বেতাঙ্গ পুলিশ। এ দু’টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন হলিউড অভিনেতা ডেনজেল ওয়াশিংটনের ছেলে জন ডেভিড ওয়াশিংটন ও স্টার ওয়ারস তারকা অ্যাডাম ড্রাইভার।
ব্ল্যাকল্যান্সম্যান তৈরি হয়েছে রন স্ট্যালওর্থের আত্মজীবনী অবলম্বনে। নিজের ছবির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতিগত ও সামাজিক বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন স্পাইক লি। ১৯৯৭ সালে নির্মিত তার ফোর লিটল গার্লস প্রামাণ্যচিত্রে তুলে ধরা হয় অ্যালাবামায় বার্মিংহ্যামের ব্যাপটিস্ট চার্চে কেকেকে আন্দোলনে চার সদস্যের আক্রমণ। ১৯৬৩ সালের ওই ঘটনায় চার তরুণী নিহত হন। এ কারণে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে আফ্রিকান আমেরিকান কমিউনিটি।
ব্ল্যাকল্যান্সম্যান ছবিতে অ্যাডাম ড্রাইভার ও জন ডেভিড ওয়াশিংটন ২৭ বছর পর কানের মূল প্রতিযোগিতায় পাওয়া গেল স্পাইক লির ছবি। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো কানে অফিসিয়াল সিলেকশনে স্থান করে নিলো তার কাজ। এর মধ্যে মূল প্রতিযোগিতায় ছিল ডু দ্য রাইট থিং (১৯৮৯) ও জঙ্গল ফিভার (১৯৯১)। ১৯৯৬ সালে গার্ল সিক্স দেখা গেছে আউট অব কম্পিটিশন বিভাগে। ২০০২ সালে তার টেন মিনিটস অর্ডার জায়গা পায় আঁ সার্তেন রিগার্দে। ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে ছিল ‘সামার অব স্যাম’।
১৯৮৯ সালে ডু দ্য রাইট থিং ছবির জন্য স্পাইক লি পাম দর জিততে যাচ্ছেন বলে ধরে নিয়েছিল সবাই। কিন্তু মূল প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারকদের প্রধান উইম ওয়েন্দার্স পুরস্কারটি দিয়ে দেন স্টিভেন সোডারবার্গকে (সেক্স, লাইস অ্যান্ড ভিডিওটেপ)।
কাকতালীয় ব্যাপার হলো, একদিন আগে (১৩ মে) কানের এবারের আসরে জার্মান নির্মাতা উইম ওয়েন্দার্সের বানানো ‘পোপ ফ্রান্সিস : অ্যা ম্যান অব হিজ ওন ওয়ার্ড’ প্রামাণ্যচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছে। এ ছবির মতো ব্ল্যাকল্যান্সম্যানও পরিবেশনার দায়িত্ব নিয়েছেন ফোকাস ফিচার্স।
যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিল শহরে কট্টর শ্বেতাঙ্গ ও বর্ণবাদবিরোধীদের মধ্যকার দাঙ্গার ঘটনার এক বছর পূর্ণ হওয়ার সময় আগামী ১০ আগস্ট ছবিটি মুক্তি পাবে।
এ দিকে বর্ণবাদবিরোধীদের সোচ্চার কণ্ঠস্বর ছিলেন যিনি, সেই নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মশতবর্ষ চলতি বছরই। এ উপলক্ষে এবারের কান উৎসবের সপ্তম দিনে স্পেশাল স্ক্রিনিং বিভাগে স্থান পেয়েছে ফ্রান্সের নিকোলাস শপো ও জিল পোর্ত পরিচালিত দ্য স্টেট অ্যাগেইনস্ট ম্যান্ডেলা অ্যান্ড দ্য আদারস।
সোমবার রাত ৮টায় সাল দ্যু সোসানতিয়েমে দেখানো হয় এটি। ১৯৬৩ ও ১৯৬৪ সালের ঐতিহাসিক বিচারকার্যক্রম ছিল ম্যান্ডেলাকে কেন্দ্র করে। তবে তার মতো মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া আরো আটজন ছিলেন সেখানে। নির্মম জেরার মুখে পড়তে হয়েছিল তাদেরকেও। আদালতের সেসব অডিও নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্র। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে এতে।
No comments