ইসরাইলি সেনাদের গুলি ও টিয়ারশেলবৃষ্টি, রক্তাক্ত গাজা
ড্রোনের সাহায্যে বৃষ্টির মতো টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ইসরাইলি সেনারা |
পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাসে (জেরুজালেম) মার্কিন
দূতাবাস উদ্বোধনের দিনে ইহুদিবাদি ইসরাইলি সেনারা নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের
ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। তাদের গুলি ও টিয়ারশেলের আঘাতে ৫২ ফিলিস্তিনি
শহীদ এবং ২,৪০০ জন আহত হয়েছেন। ২০১৪ সালের গাজা যুদ্ধের পর একদিনে
ফিলিস্তিনি হতাহতের এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বায়তুল
মুকাদ্দাস শহরে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের প্রতিবাদে গাজা উপত্যকার ইসরাইলি
দেয়াল ঘেঁষে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় নিরস্ত্র
বিক্ষোভকারীর উপর গাজার আকাশ থেকে ইসরাইলি ড্রোন হামলা হয়। কাটাতাঁরের
বেড়ার ওপার থেকে ইসরাইলি সেনারা ছুঁড়তে থাকে গুলি। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে
ইসরাইলি সেনাদের ছোঁড়া টিয়ারশেল আকাশ থেকে পড়তে থাকে বৃষ্টির মতো। আর এ
ঘটনায় হাজারো বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনি গুলি আর টিয়ারশেলের আঘাতে হতাহতের শিকার
হয়।
হুইল চেয়ারে বসে ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলতি নিক্ষেপ করছেন এক ফিলিস্তিনি
স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় এদিনের বিক্ষোভে অনেক বেশি ফিলিস্তিনি
অংশ নিয়েছে। এছাড়া পশ্চিম তীর, বেথেলহেমেও বিক্ষোভ করেছে হাজারো
ফিলিস্তিনি। সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ১৮ বছরের কম বয়সী ৬ শিশু এবং হুইলচেয়ারে
চলাফেরা করা এক ব্যক্তিও আছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে
হুইলচেয়ারে বসা এক ফিলিস্তিনিকে গুলতি দিয়ে পাথর ছুড়তে দেখা যায়।
নিজ
মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে গত ৩০ মার্চ থেকে ভূমি দিবস পালন করছেন
ফিলিস্তিনিরা। তখন থেকে আজকের আগ পর্যন্ত ইসরাইলি সেনারা গুলি করে ৪৫
ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।
ইহুদিবাদি
ইসরাইল প্রতিষ্ঠার ৭০তম বর্ষপূর্তির দিনে বায়তুল মুকাদ্দাসে মার্কিন
দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করা নিয়ে তেল আবিব উৎসবের ঘোষণা দেয় যা
ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। কারণ প্রতি বছর এই দিনটিকে ফিলিস্তিনিরা
নাকাবা বা বিপর্যয়ের দিন হিসেবে পালন করে থাকেন।
১৯৪৮ সালের এই দিনে ইহুদিবাদী ইসরাইল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে তাদের ঘর-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে।তখন থেকে এসব ফিলিস্তিনি বিভিন্ন দেশে উদ্বাস্তু হিসেবে জীবনযাপন করছেন।
No comments