শিকলে বেঁধে দুই গৃহকর্মীকে বর্বর নির্যাতন
দেড়
বছর ধরে বাসায় আটকে শিকল দিয়ে বেঁধে দুই গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতন করা
হতো। এমনকি প্রায়ই তাদের হাতের আঙ্গুলে সুঁই ফুটানো হতো। নির্যাতন সইতে না
পেরে কৌশলে অসুস্থ্য এক গৃহকর্মী পালিয়ে গিয়ে কতিপয় ব্যক্তির কাছে বিষয়টি
অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহকর্মীকে নিয়ে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে
নির্যাতনকারী দম্পত্তিকে আটক ও অপর গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছেন। ঘটনাটি
বরিশাল নগরীর বাজার রোড এলাকার। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এসএম
রুহুল আমিন জানান, গৃহকর্তা বাজার রোডের এ অ্যান্ড জে এন্টারপ্রাইজের মালিক
জুয়েল আহমেদ ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান দিনা দীর্ঘদিন থেকে দুই গৃহকর্মীকে
কারণে অকারণে অমানুষিক নির্যাতনের পর বাসায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখতো। দুই
গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের প্রমান মিলেছে তাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ
প্রত্যঙ্গে ক্ষতের চিহ্ন। পুলিশ কশিনার আরও জানান, নির্যাতন সইতে না পেরে
আশফিয়া (১৩) নামের এক গৃহকর্মী সোমবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে পালিয়ে নগরীর
দক্ষিণ বাঘিয়া এলাকায় আশ্রয় নেয়। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ আশফিয়াকে
উদ্ধারের পর পুলিশের কাছে সে নির্যাতনের বর্ননা করে।
পরবর্তীতে তাকে
(আশফিয়া) সাথে নিয়ে রাতেই জুয়েল আহমেদের নগরীর বাজার রোডের বাসায় অভিযান
চালিয়ে অপর নির্যাতিত গৃহকর্মী আয়শাকে (১২) উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ওই
বাসায় নির্যাতনের কাজে ব্যবহৃত শিকল উদ্ধারসহ গৃহকর্মীদের অভিযোগের সত্যতা
পেয়ে পুলিশ গৃহকর্তা জুয়েল ও তার স্ত্রী দিনাকে আটক করেন। নির্যাতনের শিকার
আশফিয়া জানায়, জুয়েল আহমেদের বাড়িতে দেড়বছর যাবৎ গৃহকর্মী হিসেবে সে কাজ
করতো। প্রায়ই গৃহকর্তী ইশরাত জাহান দিনা ও গৃহকর্তা জুয়েল আহমেদ তার উপর
নির্মম নির্যাতন চালাতো। এমনকি তার পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে আংগুলে সুই
ফুটো করে নির্যাতন করতো। নির্যাতন সইতে না পেরে সে পালিয়ে যায়। ওই দম্পত্তি
আয়েশা নামের আরেক গৃকর্মীকেও নির্যাতন করতেন বলে জানায় আশফিয়া। বরিশাল
মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন,
নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনায়
থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অপরদিকে নির্যাতনের শিকার দুই
গৃহকর্মীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
No comments