সৌদি যুবরাজ সালমানের ব্রিটেন সফর কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ?
সৌদি
আরবের তরুণ যুবরাজ মোহামেদ বিন সালমান দেশটির প্রধান নন, দায়িত্বও
নিয়েছেন মাত্র ৯ মাস হলো। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর তার এই প্রথম বিশ্ব
সফরে তিনি ব্রিটেনে লালগালিচা সংবর্ধনাই পেতে চলেছেন। ব্রিটিশ
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও বাকিংহ্যাম প্যালেসে রানীর সঙ্গে দুপুরের
খাবার, প্রিন্স অফ ওয়েলস আর ডিউক অফ কেমব্রিজের সঙ্গে রাতের খাবারও
রয়েছে তার কর্মসূচির তালিকায়। কিন্তু কেন এতোটা গুরুত্ব পাচ্ছেন বিশ্ব
রাজনীতিতে নতুন আসা এই যুবরাজ? এর কারণ শুধুমাত্র এটা নয় যে, তিনি সৌদি
আরবের নেপথ্য শাসক। আরেকটি বড় কারণ ব্রেক্সিটের পর সৌদি আরবের সঙ্গে
ব্রিটেনের সম্পর্ক অন্য মাত্রা পেতে যাচ্ছে। এর বাইরে আরো কয়েকটি কারণও
রয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে নিরাপত্তাগত কারণে ব্রিটেনের গভীর সম্পর্ক
রয়েছে। ব্রিটেনে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে গোপন তথ্য দিয়েছে সৌদি আরব।
আবার ইরানের হুমকি মোকাবেলায় সাইবার বিশেষজ্ঞের সহায়তা চাইছে সৌদিরা।
মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির কাছে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্রও বিক্রি করছে
ব্রিটেন,
যার উপর হাজার হাজার ব্রিটিশের চাকরি টিকে রয়েছে বলে মন্ত্রীরা
মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সৌদি যুবরাজের এই সফর হয়তো তারচেয়েও বেশি কিছু।
সৌদি আরবে যে অর্থনৈতিক সংস্কার শুরু করেছেন যুবরাজ সালমান, সেই সংস্কারের
দিকে তিনি আন্তর্জাতিক সমর্থনও আদায় করতে চাইছেন। বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত
করাও তার অন্যতম উদ্দেশ্য। ২০৩০ সালের মধ্যে তেলের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে
বাজার নির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাইছেন সৌদি যুবরাজ। আর এখানেই ব্রিটিশ
ব্যবসায়ীদের অনেক সুযোগ রয়ে গেছে। শিক্ষা, বিনোদন, পর্যটন, স্বাস্থ্য- সব
খাতেই ব্রিটিশদের দক্ষতা রয়েছে, যা তাদের দেশটিতেও নতুন বাজারে অনেকটা
এগিয়ে রাখবে। আবার সৌদি আরব থেকেও বিনিয়োগ পেতে চায় যুক্তরাজ্য। বিশেষ
করে সৌদি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি, আরামকোকে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে পেতে
চাইছে ব্রিটিশরা। অন্য কথায় বলতে গেলে, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের নতুন
বন্ধু, নতুন বাজার আর অর্থের যোগান দরকার হবে। আর এসবের জন্য সৌদিরা
ব্রিটেনের তালিকার একেবারে উপরের সাড়িতেই রয়েছে। বিবিসি।
No comments