ভারত-চীন টানাপোড়েন, দিল্লিতে হচ্ছে না দালাইলামার অনুষ্ঠান
ভারত-চীনের
সম্পর্ক স্পর্শকাতর সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ায় এবার দিল্লীতে হচ্ছে না
তিব্বতের নেতা দালাইলামার নির্বাসন বার্ষিকীর অনুষ্ঠান। সম্প্রতি এ
অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগ দিতে
নিষেধ করে সরকার। চীনের সঙ্গে তিক্ততা আর না বাড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া
হয়েছে বলে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলের নোটে স্পষ্ট ইঙ্গিত করা
হয়েছে। এরপরই দালাইলামার অনুষ্ঠান দিল্লির পরিবর্তে ধর্মশালায় করার
সিদ্ধান্ত নেয় তিব্বতের প্রবাসী সরকারের কর্মকর্তারা। দালাইলামার
নির্বাসনের বার্ষিকী উপলক্ষে ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল দিল্লিতে দুটি অনুষ্ঠানের
আয়োজন করেছিল তিব্বত সরকার। রাজঘাটে মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর সমাধিতে
হওয়ার কথা ছিল সর্বধর্ম প্রার্থনাসভা। পরের দিন ‘ধন্যবাদ ভারত’ শীর্ষক
অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল ত্যাগরাজ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। দুটি অনুষ্ঠানেই
হাজির থাকার কথা ছিল দালাইলামার। কিন্তু সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব বিজয়
গোখলের একটি নোট সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তাতে গোখলে মন্ত্রিপরিষদ
সচিব পি কে সিংহকে জানান, ভারত-চীনের সম্পর্ক স্পর্শকাতর সময়ের মধ্যে দিয়ে
যাচ্ছে।
ফলে দালাইলামার অনুষ্ঠানে কেন্দ্র বা রাজ্যের শীর্ষ কর্মকর্তারা
হাজির থাকতে পারবেন না। এই নোট অনুযায়ী নির্দেশ জারি করেন মন্ত্রিপরিষদ
সচিব। এদিকে চীনের সঙ্গে তিক্ততা এ়ড়াতে দালাইলামার অনুষ্ঠান কার্যত বয়কট
করার এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে ভারতের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়। এরপর হোলির ছুটির মধ্যেই সুষমা স্বরাজের মন্ত্রণালয় বিবৃতি
দিয়ে জানায়, দালাইলামাকে নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট। তিনি শ্রদ্ধেয়
ধর্মগুরু ও ভারতবাসী তাকে গভীর সম্মান করেন। ভারতে তার ধর্মাচরণের পূর্ণ
অধিকার রয়েছে। মঙ্গলবার নির্বাসিত তিব্বত সরকার জানায়, ‘ধন্যবাদ ভারত’
শীর্ষক অনুষ্ঠানটি ধর্মশালায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজঘাটের অনুষ্ঠান
আপাতত বাতিল। দিল্লির অবস্থান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিব্বত সরকারের মুখপাত্র
সোনম দাগপো বলেন, ‘ভারত তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা। ভারত সরকারের
সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান করি। এ নিয়ে আমাদের আর কিছু বলার নেই।’ তবে ভারত
সরকার দালাইলামার অনুষ্ঠান স্থানান্তর করতে অনুরোধ করেনি বলে দাবি
সোনমের। উল্লেখ্য, চীনের আপত্তি অগ্রাহ্য করে ভারতে নির্বাসিত তিব্বতি
ধর্মগুরু ও নেতা দালাইলামাকে বেশ কয়েকবার বিতর্কিত অরুণাচল সফরের অনুমতি
দেয় দিল্লি। এনিয়ে উভয় দেশের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা যায়।
No comments