গুরুতর অসুস্থ স্ক্রিপাল, রাশিয়াকে হুশিয়ারি ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
পক্ষত্যাগ
করা সাবেক গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপালের অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার পেছনে যদি
রুশ সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তবে তার জোরালো জবাব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের উইল্টশায়ারের
স্যালিসবুরিতে রোববার ৬৬ বছর বয়সী স্ক্রিপাল ও তার মেয়ে ৩৩ বছর বয়সী
ইউলিয়াকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গেছে। তখন থেকে তারা গুরুতর অসুস্থ অবস্থায়
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রয়েছেন। বিবিসি নিউজনাইটের
কূটনীতিবিষয়ক সম্পাদক মার্ক আরবান বলেন, স্ক্রিপাল ও তার মেয়ের অবস্থা আরও
খারাপের দিকে যেতে পারে। বরিস জনসন বলেন, এ অবস্থায় তিনি কোনো দেশের দিকে
আঙুল তুলছেন না। কিন্তু রাশিয়ার বাহিনী হচ্ছে অশুভ ও ধ্বংসাত্মক। এ ঘটনায়
নিজেদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। ডাউনিং স্ট্রিট
জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যামবার রুড সরকারের জরুরি অবস্থা মোকাবেলায়
গঠিত কমিটি কোবরার সঙ্গে স্যালিসবুরির ঘটনার তদন্ত নিয়ে আলোচনায় বসবেন।
স্ক্রিপালের স্বজনরা বিবিবি রাশিয়াকে বলেছে, তিনি মনে করতেন রাশিয়ার বিশেষ
বাহিনী যে কোনো সময় তার পিছু নিতে পারে। গত দুই বছরে সাবেক এই রুশ কর্নেলের
স্ত্রী, বড় ভাই ও তার সন্তানের রহস্যজনক কারণে মৃত্যু হয়েছে। সের্গেই
স্ক্রিপাল একসময় রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্নেল ছিলেন। ২০০৬ সালে
তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ ওঠে। রাশিয়ায় তার ১৩ বছরের কারাদণ্ড
হয়েছিল। ২০১০ সালে মার্কিন গুপ্তচর অদলবদলের সময় তিনি ছাড়া পান। পরবর্তীতে
তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয় নেন। ফ্রিয়া চার্চ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,
বেঞ্চে একটি জুটি বসে ছিল। একজন বৃদ্ধ, অপরজন তুরুণী। বৃদ্ধের শরীরে এলিয়ে
ছিল তরুণীটি। দেখে মনে হচ্ছিল, তরুণীটি সম্ভবত মারা গেছেন।
অপরদিকে বৃদ্ধটি
আকাশের দিকে তাকিয়ে অদ্ভূতভাবে হাত নাড়ছিলেন। দেখে মনে হয়েছে, তারা
অত্যন্ত কড়া কোনো কিছু গ্রহণ করেছিল। সিসিটিভির ফুটেজে দেখা গেছে, তারা
অচেতন হয়ে পড়ে থাকার আগে জিজ্জি রেস্তারাঁর পাশ দিয়ে হাঁটছিলেন। এরপর থেকে
পুলিশ ওই রেস্তোরাঁটি বন্ধ করে রেখেছে। তবে যে বস্তুটির সংস্পর্শে গিয়ে
তারা অচেতন হয়ে পড়েন, বিজ্ঞানীরা এখনও তা ধরতে পারেননি। হাউস অফ কমনসে দেয়া
বক্তৃতায় বরিস জনসন বলেন, ২০০৬ সালে বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার লিটভিনেনকোর
মৃত্যুর মতো আর কোনো ঘটনা ঘটকা, তা আমরা চাই না। তিনি বলেন, আমি বিশ্বের
সরকারগুলোকে বলতে চাই, যুক্তরাজ্যের মাটিতে নিরপরাধ কোনো মানুষের জীবন কেড়ে
নেয়ার চেষ্টা করলে শাস্তি কিংবা নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড়া পাওয়া যাবে না।
বিশ্বব্যাপী রাশিয়ার অশুভ তৎপরতা বন্ধের কার্যক্রম নেতৃত্ব দিয়েছিল
যুক্তরাজ্য বলে জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে রাশিয়া বলেছে, কী
কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, সে সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। ব্রিটিশ
পুলিশ চাইলে তারা সহযোগিতায় প্রস্তুত রয়েছে। ব্রিটেনের রুশ দূতাবাস জানায়,
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে রাশিয়ার বিশেষ বাহিনী পরিকল্পিত অভিযান চালিয়েছে বলে
একটা ছাপ তৈরি করেছে। কিন্তু তা সম্পূর্ণ অসত্য। বরিস জনসনের মন্তব্যের
জবাবে রুশ দূতাবাস জানায়, মনে হচ্ছে, রাশিয়া বিরোধী আরেকটি অপপ্রচারের
পাণ্ডুলিপি লেখা হয়েছে।
No comments