কাতারে অভ্যুত্থান চেষ্টায় জড়িত ছিল তিন আরব দেশ
কাতারে
সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। সাবেক আমির শেখ হামাদ বিন
খলিফা আল থানি সিংহাসনে আরোহন করার এক বছর পরে এ ঘটনা ঘটেছিল। ব্যর্থ ওই
অভ্যুত্থানের নাম দেয়া হয়েছিল ‘অপারেশন আবু আলী’। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল সৌদি
আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন। এর পক্ষে প্রমাণও রয়েছে। প্রামাণ্য
আকারে এমন রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অনলাইন আল জাজিরা। এ ঘটনা নিয়ে প্রামাণ্য
চিত্র নির্মাণ করেছে আল জাজিরা। রোববার এর প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয়েছে। এতে
বলা হয়েছে, ওই অভ্যুত্থান করার চেষ্টা হয়েছিল ১৯৯৬ সালের পবিত্র রমজান
মাসে। ওই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তখনকার আমির শেখ হামাদ বিন খলিয়া আল থানিকে
ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই সময়ের পুলিশ
প্রধান ও সাবেক ওই আমিরের কাজিন শেখ হামাদ বিন জসিম বিন হামাদ আল থানি। আল
জাজিরার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে যে, ওই সময় অভ্যুত্থান ঘটানোর জন্য একটি
কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর নেতৃত্বে ছিলেন ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের
সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ও বর্তমানে আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ
মোহাম্মদ বিন জায়েদ। তার সঙ্গে ছিলেন বাহরাইনের তখনকার ক্রাউন প্রিন্স শেখ
হামাদ বিন ইসা আল খলিফা, সৌদি আরবের তখনকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ সুলতান
বিন আবদুল আজিজ, মিশরের প্রয়াত গোয়েন্দা প্রধান ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট
ওমর সুলায়মান। এই অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এমন একজন বলেছেন,
‘শেখ হামাদ বিন খলিফার বাসভবন ঘেরার করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল একদল মানুষকে
এবং তাকে বাসভবনে জিম্মি রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। ওই বাসভবনটি তখন ছিল
দোহা’র আল রাইয়ান রোডে।’ ১৯৯৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টায় এ অপারেশন
চালানোর পরিকল্পনা হয়েছিল। এর নির্দেশনা দিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের
বর্তমান আমির শেখ খলিফা বিন জায়েদ। সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ক স্থাপনার
নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর অভ্যুত্থান পরিকল্পনাকারীরা তাদের মিলিশিয়াদেরকে সৌদি
আরবের সীমান্ত পেরিয়ে কাতারে প্রবেশের সবুজ সংকেত দেয়ার পর্যায়ে ছিলেন।
কিন্তু সেই পরিকল্পনা ধরা পড়ে যায় এবং তা প্রতিহত করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহিন আল সুলাইতি বলেছেন, তারা যদি একবার নিয়ন্ত্রণ
তাদের কব্জায় নিয়ে নিতো এবং তাদের মিলিশিয়ারা ভিতরে প্রবেশ করতো, হোক সেটা
সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব বা বাহরাইনের, তারা রাস্তায় যাকে দেখতো তাকেই
হত্যা করতো। এতে তাদের কোনো বাছবিচার থাকতো না। কারণ, তাদের হারানোর কিছু
ছিল না। উল্লেখ্য, এখন থেকে আট মাস আগে কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশরসহ বেশ কতগুলো দেশ। তাদের
অভিযোগ দোহা সন্ত্রাসে সমর্থন দিচ্ছে। তবে কাতার জোরালোভাবে এ অভিযোগ
প্রত্যাখ্যান করেছে। এ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে যখন একরকম চাপা উত্তেজনা এখনও
রয়েছে তখনই এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করলো আল জাজিরা। তারা যে ডকুমেন্টারি
প্রকাশ করেছে তাতে অভ্যুত্থান চেষ্টার সঙ্গে জড়িত অনেকের সাক্ষাতকার নিয়েছে
আল জাজিরা।
No comments