এগুচ্ছে বাংলাদেশের শূটিং, নেতৃত্বে মেয়েরাই by রুমেল খান
নিজের সুকন্যা সাদিয়া যখন শূটিংয়ে আসেননি।
বাবা সৈয়দ সরওয়ার আলম চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অফিস সেক্রেটারি।
নিবাস হাটহাজারী। স্বপ্ন দেখতেন এদেশের মেয়েরা সমাজের সর্বসত্মরে, সব পেশায়
এগিয়ে আসবে, দেশ ও জাতির উন্নয়নে উলেস্নখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
বদলে দেবে সমাজকে, দেশকে। কিন্তু তেমন কোন লণ না দেখে একদিন মনের হতাশা
থেকে লিখেই ফেললেন বাংলার নারীদের নিয়ে একটি গান। সময়ের পরিক্রমায় তার সেই
হতাশা আজ অনেকটাই প্রশমিত। সেটা তার মেয়েরই কল্যাণে। এমন 'সোনার মেয়ে'কে
নিয়ে তার গর্বের শেষ নেই, 'আমার মেয়ে আমার দুঃখ দূর করেছে। আমি তার জন্য
গর্বিত।' এসএ গেমসের পর এবার কমনওয়েলথ শূটিংয়েও স্বর্ণ জিতলেন আপনার মেয়ে
সাদিয়া, কেমন লাগছে? _এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে আবেগে আপস্নুত হয়ে পড়লেন
সাদিয়ার বাবা, বারবার মুছলেন অশ্রম্নজল, 'দেশের গ-ি ছাড়িয়ে আনত্মর্জাতিক
পরিম-লেও আমার মেয়ের নাম এত অল্প বয়সে ছড়িয়ে পড়েছে, দেশের জন্য সম্মান বয়ে
এনেছে, এ যে আমার জন্য কত বড় সম্মানের_তা বলে বোঝাতে পারব না।'
অষ্টম কমনওয়েলথ শূটিং আসর শেষ করে রবিবার বাংলাদেশ শূটিং দল ভারতের দিলস্নী থেকে ঢাকায় ফিরে আসে। এ আসরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অসামান্য_মোট ছয়টি পদক। দু'টি স্বর্ণ, দু'টি রৌপ্য ও দু'টি ব্রোঞ্জ। একথা বলার আর অপো রাখে না, কোন আনত্মর্জাতিক শূটিং আসরে বাংলাদেশ দলের এটাই হচ্ছে এখন পর্যনত্ম সেরা ও স্মরণীয় সাফল্য। বাংলাদেশ শূটিং ফেডারেশন হযরত শাহ্জালাল আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরে পদকজয়ী শূটারদের এক সংবর্ধনা দেয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সকাল নয়টার পরিবর্তে শুরম্ন হয় বেলা তিনটায়। কারণ শূটারদের বিমানের বিলম্বিত যাত্রা। তাতে অবশ্য আনন্দের কোন ঘাটতি হয়নি। দুপুরে গুলশান শূটিং কমপেস্নক্স থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা হয় বাংলাদেশ শূটিং ফেডারেশনের কর্মকর্তা, পদকজয়ী শূটারদের আত্মীয় ও পরিবার পরিজন। গাড়িতে ওঠার আগে তখন আলাপচারিতা হয় শূটার সাদিয়ার বাবার সঙ্গে। তার তিন ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে সাদিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়। কমনওয়েলথ শূটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সাদিয়ার পদক প্রাপ্তির পেছনে কোচ মোহাম্মদ আলমগীরের অবদানের কথা স্মরণ করলেন সাদিয়ার বাবা। তাছাড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বাবলুসহ সংশিস্নষ্ট সবার আনত্মরিকতার প্রশংসাও করলেন, বিশেষ করে বাবলুর কথার সঙ্গে কাজের মিলের প্রসঙ্গ উলেস্নখ করলেন। সাদিয়া যেন আরও অনেক উন্নতি করে, সেজন্য মেয়ের জন্য দোয়া করলেন সৈয়দ সরওয়ার আলম। পরিবারের সমর্থন ছাড়া মেয়ে কি এতদূর আসতে পারত কিনা_এ প্রশ্নের জবাবে সব কৃতিত্ব দিলেন তার স্ত্রী ও গৃহবধূ কাজী সালেহা বেগমকেই, 'আমি আর ওকে কি এমন সমর্থন বা সাহায্য করেছি, যা করার সব তো আমার স্ত্রী-ই করেছেন ও এখনও করছেন।'
কথা হয় ইশতিয়াক আহমেদ বাবলুর সঙ্গে। তিনি জানান, 'বাংলাদেশের এই স্মরণীয় শূটিং সাফল্যে আমি ভীষণ আনন্দিত। তবে সত্যি বলতে কি, এতটা আমরা আশা করিনি। কারণ সবে এসএ গেমস শেষ হলো। কোনরকম গ্যাপ ছাড়াই বা স্বল্প অনুশীলনকে পুঁজি করে দিলস্নী যাওয়ায় আমরা শূটারদের মোটেও কোনরকম প্রত্যাশার চাপ দেইনি। ভেবেছিলাম, ওরা মোটামুটি করবে। তবে ওরা যে ভেতরে ভেতরে ঠিকই সিরিয়াস ছিল, দৃঢ় মনোবলের অধিকারী ছিল, এটা আমাকে বিস্মিত করেছে।' 'কোচ হিসেবে আমি নিশ্চয়ই প্রীত।' বললেন চট্টগ্রামের রাউজান নিবাসী ও সাদিয়ার কোচ মোহাম্মদ আলমগীর। ৪৫ বছর বয়সী এ কোচের মূল্যায়ন, 'এই আসরে অংশ নেয়ার মাধ্যমে ওরা কোন মানে বা পর্যায়ে আছে, সেটা ভালভাবে যাচাইয়ের অবকাশ পেয়েছে। কেননা, এসএ গেমসের চেয়ে কমনওয়েলথ শূটিং চ্যাম্পিয়নশিপের গুরম্নত্ব অনেক বেশি।' সাদিয়ার সম্পর্কে তার অনুভূতি, 'সাদিয়া আমার মেয়ের মতো। ওর সাফল্য শুধু আমিই গর্বিত নই, পুরো দেশ আজ গর্বিত।' শূটিং রেঞ্জে দেশের অন্যতম সেরা শূটার আসিফ হোসেন খানকে দেখে অবাক হলাম। 'আপনি এখানে? দিলস্নী থেকে পেস্নন তো ঢাকায় এখনও ল্যান্ড করেনি।' রহস্য ভাঙলেন আসিফ, 'টুর্নামেন্ট শেষ হবার আগেই আমার ইভেন্ট শেষ হওয়ায় আমি আর শোভন আগেই (গতকাল) দেশে ফিরেছি।' এসএ গেমসের মত দিলস্নীর টুনর্ামেন্টেরও স্বর্ণ পাননি, কেমন অনুভূতি হচ্ছে? 'গোল্ড না পাওয়ার দুঃখ ভুলেছি রত্না-সাদিয়ার স্বর্ণজয়ের মাধ্যমে। ওখান থেকে ফিরে আসার আগেই ওদের জয়ের দৃশ্যটা নিজ চোখে দেখে এসেছি, খুব মজাও করেছি, মিউজিকের তালে তালে নেচেছি। শাহানা আপা, সাবরিনা আপার পর নতুন প্রজন্ম হিসেবে রত্না-সাদিয়া-তৃপ্তিদের উত্থান নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।' বিমান থেকে নেমে সকল আনুষ্ঠানিকতা সেরে ৪নং ভিআইপি লাউঞ্জে সদলবলে শূটিং দল প্রবেশ করা মাত্রই এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফুলের মালা দিয়ে তাদের বরণ করে নেন ফেডারেশনের কর্তা ব্যক্তিরা। মিষ্টিমুখ, ফটোসেশন, আড্ডা, সেলফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে আলাপন_ ইত্যাদি শেষ হলে 'বাংলাদেশের শূটিংয়ের রত্ন' রত্নার অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানান, 'আমার চেহারা দেখেই বোঝা যায়, কতটা খুশি আমি। খুবই ভাল লাগছে।' শূটিং নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? 'ইচ্ছে আছে, অলিম্পিকের আগে সবগুলো ইন্টারন্যাশনাল টুনর্ামেন্টে অংশ নেব। একটা একটা করে সিঁড়ি টপকানোর চেষ্টা করছি।' এবার যে স্বর্ণ জিতবেন, কতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন? 'দেখুন, সবার তো বটেই, নিজের প্রত্যাশাও সব সময়ই উঁচু ছিল। তবে এটা নিশ্চয়ই মানবেন, কেউ কিন্তু তার নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ জয়ের নিরাপত্তা দিতে পারে না। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমি কেবল চেষ্টা করতে পারি।' আগামীতে ইন্দো-বাংলা গেমস, এশিয়ান গেমস, বিশ্বকাপ প্রভৃতি আসর নিয়ে কি ভাবছেন? ভাবনা একটাই_ভাল ট্রেনিং। এটার কোন বিকল্প নেই। উন্নত প্রশিণ ছাড়া অংশ নিলে প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব নয়। তখন মানসিক চাপটা আরও বেড়ে যায়। শূটিং অনেকটাই মেন্টালি গেম। আর এটাকে রিকভারি করে ভাল ট্রেনিং।' রত্নার সঙ্গে একমত পোষণ করলেন সাদিয়াও। সেই সঙ্গে যোগ করলেন, 'ভাল ও বিদেশী কোচের অধীনে আমরা যদি প্রশিণ নেই, তাহলে আশা করা যায় অলিম্পিক থেকেও আমরা পদক পাব। তা না হলে সম্ভব নয়।' এসএ গেমসের পর কমনওয়েলথ শূটিংয়েও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে সাদিয়ার বেলায়। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের দলগত ইভেন্টে সোনা জেতার পর একক ইভেন্টে সেটা আর অর্জন করতে পারছেন না। এর কারণ কি? 'আমি আসলে শেষের দিকে নাভর্াস হয়ে পড়ি। তাছাড়া এবার দলগত ও একক ইভেন্ট পরপর দু'দিনে হওয়ায় মনোসংযোগও সেভাবে ধরে রাখতে পারিনি। এটাও একটা ব্যাপার। তাছাড়া বলতেই হয়, রত্না আপু আমার চেয়ে আমার চেয়ে অনেক ভাল শূটার (পাশে দাঁড়ানো রত্না হেসে ফেলেন)।' সংবধনর্ার সময় দেখা গেল রত্নাকে জড়িয়ে তার মা আঞ্জুমান আরা কাঁদছেন। বাবা মোঃ রফিকুল ইসলাম, রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার (সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার) চেষ্টা করছেন আবেগ নিয়ন্ত্রণের। পাশেই দাঁড়িয়ে রত্নার স্বামী মোহাইমেনুল কাওনাইন কাঁকন। কথা হয় ঝিনাইদহ থেকে বিএসএস কমপিস্নট করা রত্নার স্বামীর সঙ্গে। নিজের খালাত বোন রত্নাকে ভালবেসে বিয়ে করেন ২০০৫ সালে। স্ত্রীর এই উদ্ভাসিত সাফল্যে দারম্নণ উলস্নসিত তিনি, 'শুধু স্বামী হিসেবে না, দেশের একজন নাগরিক হিসেবেও আমি রত্নার এই কৃতিত্বে মুগ্ধ।' রত্নার কোন গুণটি বেশি ভাল লাগে? 'ও কখনই মিথ্যে বলতে পারে না। কথা বলে একদম সরাসরি। তাছাড়া যখনই সময় পায়, সেলফোনে আমার খোঁজ নেয়। আমিও অতটা পারি না।'
কথা প্রসঙ্গে জানালেন, 'আমার যতটুকু সাধ্য আছে, আমি রত্নাকে তার ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করব। বিয়ের পর পরই ও আমাকে বলেছিল, আমি চাইলে সে শূটিং ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু আমি শুনিনি। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবলু ভাই রত্নাকে অনত্মত ২০১২ সালের অলিম্পিক পর্যনত্ম সনত্মান না নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি বলেছি, ২০১২ নয়, প্রয়োজনে ২০১৬ সাল পর্যনত্ম আমি অপো করব। তবুও রত্না এগিয়ে যাক, এই কামনা করি। ওর কল্যাণেই আমি আমার এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে ফিরে পেয়েছি।' কিভাবে? 'কয়েকদিন আগে একটি পত্রিকায় রত্নার ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়, সেখানে আমার নামটাও আসে। সেটা পড়ে আমার ছোটবেলার এক বন্ধু, কাস সিক্সের পর যার সঙ্গে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সে আমার সন্ধান পায়। এটা আমার জন্য খুব আনন্দের।' 'কি, আমার নামে কি বদনাম করা হচ্ছে?' আলোচনায় এসে যোগ দিলেন রত্না। কাঁকনের পাশে বসলেন। স্বামী হিসেবে কাঁকন কেমন, শূটিংয়ের জন্য কতটা ছাড় দেয় আপনাকে? 'সত্যি বলতে কি, বাবা-মায়ের পর কাঁকন-ই আমাকে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট ও হেল্প করছে। নইলে আমি এ পর্যনত্ম কখনই আসতে পারতাম না। নিজেকে খুব লাকি মনে করি। কেননা, মাসের পর মাস ওকে ছেড়ে ক্যাম্পে থাকতে হয়, তবুও ওর কোন আপে বা অভিযোগ নেই। আমি তো বিয়ের পর এজন্য শূটিংই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ওর জন্যই পারিনি। তাহলে বুঝতেই পারছেন, কেমন স্বামী পেয়েছি।' আরেক শূটার তৃপ্তি দত্তকে দেখা গেল রম্নমের এক কোনায় মস্নানমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, 'না, মন খারাপ না। একটু টায়ার্ড। নিজে সফল না হলেও দল ভাল করায় সে দুঃখ ভুলে গেছি। তাছাড়া ব্যক্তির চেয়ে দল সবসময়ই বড়। এবার না পারলেও আগামীতে নিশ্চয়ই পারব।' কথাগুলো বলার সময় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মনে হল তাকে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকেই। রাসেল এমপি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'শূটাররা দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছে, তাই তাদেরকে আনত্মরিক অভিনন্দন। তাদের এই সাফল্য আমাদের প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিল। তারা যেন আগামীতে অলিম্পিক থেকে স্বর্ণ জিততে পারে, এজন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য সবরকম পদপে নিতে সচেষ্ট থাকবে। ১৩ মাসের নিবিড় প্রশিণের কারণেই সদ্য সমাপ্ত এসএ গেমসে বাংলাদেশ ১৮টি স্বর্ণ জিততে সম হয়েছিল। আগামীতেও তারা যেন ভাল ও উন্নত মানের বিদেশী কোচের অধীনে কন্টিনিউ প্র্যাকটিস করতে পারে, অচিরেই সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ চেয়ে আরও অনেক বেশি সফলতা দেশের জন্য বয়ে আনবে শূটাররা। প্রধানমন্ত্রী একজন ক্রীড়ানুরাগী। আমি আশা করি, শূটারদের এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য তিনি তাদের প্রাপ্তির জন্য পুরস্কৃত করবেন।' বিওএ মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদ রত্না-সাদিয়ার গলায় ঝোলানো গোল্ড মেডেল দেখে বললেন, 'এরকম মেডেল অলিম্পিক থেকেও চাই কিন্তু। মনে সাহস রাখবে।
তোমরা অবশ্যই পারবে। নিজেদের কমিটমেন্টটা ধরে রাখবে। আজ তোমাদের সংবর্ধনা দিতে কত লোক এসেছে, আগামীতে আরও আসবে, আরও বেশি সম্মান পাবে।' কুতুবউদ্দিন আহমেদ শূটারদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাদের জন্য একটি সুখবরও শোনালেন, 'এখন থেকে আপাতত ২০১২ সালের অলিম্পিক পর্যনত্ম শূটারদের জন্য শেলটেক প্রাইভেট লিঃ স্পন্সর করবে। তাদের ভাতা হিসেবে মাসে দেয়া হবে দশ হাজার টাকা। পরবতর্ীতে প্রয়োজনে স্পন্সরের মেয়াদ ও অর্থের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।'
তার এ ঘোষণায় অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত শূটার রত্না, সাদিয়া, সাবরিনা, তৃপ্তি, আসিফ, বাকি, শোভন ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়ে। অবিরাম হাততালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে সভাস্থল। সংবর্ধনা শেষে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। অনুষ্ঠান শেষ হলে বিমানবন্দর থেকে শূটারদের নিয়ে পুষ্প সজ্জিত বিশেষ ট্রাকটি ঢাকার বিভিন্ন সড়কে এক আনন্দ র্যালি যাত্রা করে। তাদের সঙ্গে ছিল অর্কেস্ট্রো দল। তাদের বিউগল ও বাজনার তালে তালে নগরবাসীও উৎসুক হয়েছে, আনন্দ প্রকাশ করেছে। তারই প্রমাণ পাওয়া গেল বনানীর কাছে এসে জ্যামে পড়ার পর। এক চিপস বিক্রেতা অর্কেস্ট্রো দলের বাদ্যের তালে তালে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নাচতে লাগলেন। একপর্যায়ে তিনি শূটারদের বহনকারী ট্রাকেই উঠে গেলেন। ট্রাকে তার অপূর্ব নৃত্যশৈলী অব্যাহত রইল মিনিট তিনেক। শূটাররা তো বটেই, আশপাশের পথচারীরাও ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছিলেন। সকলের চোখে মুখে পরিতৃপ্তির ছাপ।
অষ্টম কমনওয়েলথ শূটিং আসর শেষ করে রবিবার বাংলাদেশ শূটিং দল ভারতের দিলস্নী থেকে ঢাকায় ফিরে আসে। এ আসরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অসামান্য_মোট ছয়টি পদক। দু'টি স্বর্ণ, দু'টি রৌপ্য ও দু'টি ব্রোঞ্জ। একথা বলার আর অপো রাখে না, কোন আনত্মর্জাতিক শূটিং আসরে বাংলাদেশ দলের এটাই হচ্ছে এখন পর্যনত্ম সেরা ও স্মরণীয় সাফল্য। বাংলাদেশ শূটিং ফেডারেশন হযরত শাহ্জালাল আনত্মর্জাতিক বিমানবন্দরে পদকজয়ী শূটারদের এক সংবর্ধনা দেয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সকাল নয়টার পরিবর্তে শুরম্ন হয় বেলা তিনটায়। কারণ শূটারদের বিমানের বিলম্বিত যাত্রা। তাতে অবশ্য আনন্দের কোন ঘাটতি হয়নি। দুপুরে গুলশান শূটিং কমপেস্নক্স থেকে এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা হয় বাংলাদেশ শূটিং ফেডারেশনের কর্মকর্তা, পদকজয়ী শূটারদের আত্মীয় ও পরিবার পরিজন। গাড়িতে ওঠার আগে তখন আলাপচারিতা হয় শূটার সাদিয়ার বাবার সঙ্গে। তার তিন ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে সাদিয়ার অবস্থান দ্বিতীয়। কমনওয়েলথ শূটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সাদিয়ার পদক প্রাপ্তির পেছনে কোচ মোহাম্মদ আলমগীরের অবদানের কথা স্মরণ করলেন সাদিয়ার বাবা। তাছাড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বাবলুসহ সংশিস্নষ্ট সবার আনত্মরিকতার প্রশংসাও করলেন, বিশেষ করে বাবলুর কথার সঙ্গে কাজের মিলের প্রসঙ্গ উলেস্নখ করলেন। সাদিয়া যেন আরও অনেক উন্নতি করে, সেজন্য মেয়ের জন্য দোয়া করলেন সৈয়দ সরওয়ার আলম। পরিবারের সমর্থন ছাড়া মেয়ে কি এতদূর আসতে পারত কিনা_এ প্রশ্নের জবাবে সব কৃতিত্ব দিলেন তার স্ত্রী ও গৃহবধূ কাজী সালেহা বেগমকেই, 'আমি আর ওকে কি এমন সমর্থন বা সাহায্য করেছি, যা করার সব তো আমার স্ত্রী-ই করেছেন ও এখনও করছেন।'
কথা হয় ইশতিয়াক আহমেদ বাবলুর সঙ্গে। তিনি জানান, 'বাংলাদেশের এই স্মরণীয় শূটিং সাফল্যে আমি ভীষণ আনন্দিত। তবে সত্যি বলতে কি, এতটা আমরা আশা করিনি। কারণ সবে এসএ গেমস শেষ হলো। কোনরকম গ্যাপ ছাড়াই বা স্বল্প অনুশীলনকে পুঁজি করে দিলস্নী যাওয়ায় আমরা শূটারদের মোটেও কোনরকম প্রত্যাশার চাপ দেইনি। ভেবেছিলাম, ওরা মোটামুটি করবে। তবে ওরা যে ভেতরে ভেতরে ঠিকই সিরিয়াস ছিল, দৃঢ় মনোবলের অধিকারী ছিল, এটা আমাকে বিস্মিত করেছে।' 'কোচ হিসেবে আমি নিশ্চয়ই প্রীত।' বললেন চট্টগ্রামের রাউজান নিবাসী ও সাদিয়ার কোচ মোহাম্মদ আলমগীর। ৪৫ বছর বয়সী এ কোচের মূল্যায়ন, 'এই আসরে অংশ নেয়ার মাধ্যমে ওরা কোন মানে বা পর্যায়ে আছে, সেটা ভালভাবে যাচাইয়ের অবকাশ পেয়েছে। কেননা, এসএ গেমসের চেয়ে কমনওয়েলথ শূটিং চ্যাম্পিয়নশিপের গুরম্নত্ব অনেক বেশি।' সাদিয়ার সম্পর্কে তার অনুভূতি, 'সাদিয়া আমার মেয়ের মতো। ওর সাফল্য শুধু আমিই গর্বিত নই, পুরো দেশ আজ গর্বিত।' শূটিং রেঞ্জে দেশের অন্যতম সেরা শূটার আসিফ হোসেন খানকে দেখে অবাক হলাম। 'আপনি এখানে? দিলস্নী থেকে পেস্নন তো ঢাকায় এখনও ল্যান্ড করেনি।' রহস্য ভাঙলেন আসিফ, 'টুর্নামেন্ট শেষ হবার আগেই আমার ইভেন্ট শেষ হওয়ায় আমি আর শোভন আগেই (গতকাল) দেশে ফিরেছি।' এসএ গেমসের মত দিলস্নীর টুনর্ামেন্টেরও স্বর্ণ পাননি, কেমন অনুভূতি হচ্ছে? 'গোল্ড না পাওয়ার দুঃখ ভুলেছি রত্না-সাদিয়ার স্বর্ণজয়ের মাধ্যমে। ওখান থেকে ফিরে আসার আগেই ওদের জয়ের দৃশ্যটা নিজ চোখে দেখে এসেছি, খুব মজাও করেছি, মিউজিকের তালে তালে নেচেছি। শাহানা আপা, সাবরিনা আপার পর নতুন প্রজন্ম হিসেবে রত্না-সাদিয়া-তৃপ্তিদের উত্থান নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।' বিমান থেকে নেমে সকল আনুষ্ঠানিকতা সেরে ৪নং ভিআইপি লাউঞ্জে সদলবলে শূটিং দল প্রবেশ করা মাত্রই এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফুলের মালা দিয়ে তাদের বরণ করে নেন ফেডারেশনের কর্তা ব্যক্তিরা। মিষ্টিমুখ, ফটোসেশন, আড্ডা, সেলফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে আলাপন_ ইত্যাদি শেষ হলে 'বাংলাদেশের শূটিংয়ের রত্ন' রত্নার অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তিনি উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে জানান, 'আমার চেহারা দেখেই বোঝা যায়, কতটা খুশি আমি। খুবই ভাল লাগছে।' শূটিং নিয়ে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? 'ইচ্ছে আছে, অলিম্পিকের আগে সবগুলো ইন্টারন্যাশনাল টুনর্ামেন্টে অংশ নেব। একটা একটা করে সিঁড়ি টপকানোর চেষ্টা করছি।' এবার যে স্বর্ণ জিতবেন, কতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন? 'দেখুন, সবার তো বটেই, নিজের প্রত্যাশাও সব সময়ই উঁচু ছিল। তবে এটা নিশ্চয়ই মানবেন, কেউ কিন্তু তার নিজের জয়ের ব্যাপারে শতভাগ জয়ের নিরাপত্তা দিতে পারে না। আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমি কেবল চেষ্টা করতে পারি।' আগামীতে ইন্দো-বাংলা গেমস, এশিয়ান গেমস, বিশ্বকাপ প্রভৃতি আসর নিয়ে কি ভাবছেন? ভাবনা একটাই_ভাল ট্রেনিং। এটার কোন বিকল্প নেই। উন্নত প্রশিণ ছাড়া অংশ নিলে প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব নয়। তখন মানসিক চাপটা আরও বেড়ে যায়। শূটিং অনেকটাই মেন্টালি গেম। আর এটাকে রিকভারি করে ভাল ট্রেনিং।' রত্নার সঙ্গে একমত পোষণ করলেন সাদিয়াও। সেই সঙ্গে যোগ করলেন, 'ভাল ও বিদেশী কোচের অধীনে আমরা যদি প্রশিণ নেই, তাহলে আশা করা যায় অলিম্পিক থেকেও আমরা পদক পাব। তা না হলে সম্ভব নয়।' এসএ গেমসের পর কমনওয়েলথ শূটিংয়েও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে সাদিয়ার বেলায়। ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের দলগত ইভেন্টে সোনা জেতার পর একক ইভেন্টে সেটা আর অর্জন করতে পারছেন না। এর কারণ কি? 'আমি আসলে শেষের দিকে নাভর্াস হয়ে পড়ি। তাছাড়া এবার দলগত ও একক ইভেন্ট পরপর দু'দিনে হওয়ায় মনোসংযোগও সেভাবে ধরে রাখতে পারিনি। এটাও একটা ব্যাপার। তাছাড়া বলতেই হয়, রত্না আপু আমার চেয়ে আমার চেয়ে অনেক ভাল শূটার (পাশে দাঁড়ানো রত্না হেসে ফেলেন)।' সংবধনর্ার সময় দেখা গেল রত্নাকে জড়িয়ে তার মা আঞ্জুমান আরা কাঁদছেন। বাবা মোঃ রফিকুল ইসলাম, রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার (সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার) চেষ্টা করছেন আবেগ নিয়ন্ত্রণের। পাশেই দাঁড়িয়ে রত্নার স্বামী মোহাইমেনুল কাওনাইন কাঁকন। কথা হয় ঝিনাইদহ থেকে বিএসএস কমপিস্নট করা রত্নার স্বামীর সঙ্গে। নিজের খালাত বোন রত্নাকে ভালবেসে বিয়ে করেন ২০০৫ সালে। স্ত্রীর এই উদ্ভাসিত সাফল্যে দারম্নণ উলস্নসিত তিনি, 'শুধু স্বামী হিসেবে না, দেশের একজন নাগরিক হিসেবেও আমি রত্নার এই কৃতিত্বে মুগ্ধ।' রত্নার কোন গুণটি বেশি ভাল লাগে? 'ও কখনই মিথ্যে বলতে পারে না। কথা বলে একদম সরাসরি। তাছাড়া যখনই সময় পায়, সেলফোনে আমার খোঁজ নেয়। আমিও অতটা পারি না।'
কথা প্রসঙ্গে জানালেন, 'আমার যতটুকু সাধ্য আছে, আমি রত্নাকে তার ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করব। বিয়ের পর পরই ও আমাকে বলেছিল, আমি চাইলে সে শূটিং ছেড়ে দিতে রাজি। কিন্তু আমি শুনিনি। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবলু ভাই রত্নাকে অনত্মত ২০১২ সালের অলিম্পিক পর্যনত্ম সনত্মান না নিতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি বলেছি, ২০১২ নয়, প্রয়োজনে ২০১৬ সাল পর্যনত্ম আমি অপো করব। তবুও রত্না এগিয়ে যাক, এই কামনা করি। ওর কল্যাণেই আমি আমার এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে ফিরে পেয়েছি।' কিভাবে? 'কয়েকদিন আগে একটি পত্রিকায় রত্নার ইন্টারভিউ প্রকাশিত হয়, সেখানে আমার নামটাও আসে। সেটা পড়ে আমার ছোটবেলার এক বন্ধু, কাস সিক্সের পর যার সঙ্গে আমার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সে আমার সন্ধান পায়। এটা আমার জন্য খুব আনন্দের।' 'কি, আমার নামে কি বদনাম করা হচ্ছে?' আলোচনায় এসে যোগ দিলেন রত্না। কাঁকনের পাশে বসলেন। স্বামী হিসেবে কাঁকন কেমন, শূটিংয়ের জন্য কতটা ছাড় দেয় আপনাকে? 'সত্যি বলতে কি, বাবা-মায়ের পর কাঁকন-ই আমাকে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট ও হেল্প করছে। নইলে আমি এ পর্যনত্ম কখনই আসতে পারতাম না। নিজেকে খুব লাকি মনে করি। কেননা, মাসের পর মাস ওকে ছেড়ে ক্যাম্পে থাকতে হয়, তবুও ওর কোন আপে বা অভিযোগ নেই। আমি তো বিয়ের পর এজন্য শূটিংই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ওর জন্যই পারিনি। তাহলে বুঝতেই পারছেন, কেমন স্বামী পেয়েছি।' আরেক শূটার তৃপ্তি দত্তকে দেখা গেল রম্নমের এক কোনায় মস্নানমুখে দাঁড়িয়ে আছেন। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, 'না, মন খারাপ না। একটু টায়ার্ড। নিজে সফল না হলেও দল ভাল করায় সে দুঃখ ভুলে গেছি। তাছাড়া ব্যক্তির চেয়ে দল সবসময়ই বড়। এবার না পারলেও আগামীতে নিশ্চয়ই পারব।' কথাগুলো বলার সময় দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ মনে হল তাকে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদসহ আরও অনেকেই। রাসেল এমপি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, 'শূটাররা দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করেছে, তাই তাদেরকে আনত্মরিক অভিনন্দন। তাদের এই সাফল্য আমাদের প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিল। তারা যেন আগামীতে অলিম্পিক থেকে স্বর্ণ জিততে পারে, এজন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্ভাব্য সবরকম পদপে নিতে সচেষ্ট থাকবে। ১৩ মাসের নিবিড় প্রশিণের কারণেই সদ্য সমাপ্ত এসএ গেমসে বাংলাদেশ ১৮টি স্বর্ণ জিততে সম হয়েছিল। আগামীতেও তারা যেন ভাল ও উন্নত মানের বিদেশী কোচের অধীনে কন্টিনিউ প্র্যাকটিস করতে পারে, অচিরেই সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আশা করি, ভবিষ্যতে এ চেয়ে আরও অনেক বেশি সফলতা দেশের জন্য বয়ে আনবে শূটাররা। প্রধানমন্ত্রী একজন ক্রীড়ানুরাগী। আমি আশা করি, শূটারদের এই প্রত্যাশা পূরণের জন্য তিনি তাদের প্রাপ্তির জন্য পুরস্কৃত করবেন।' বিওএ মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদ রত্না-সাদিয়ার গলায় ঝোলানো গোল্ড মেডেল দেখে বললেন, 'এরকম মেডেল অলিম্পিক থেকেও চাই কিন্তু। মনে সাহস রাখবে।
তোমরা অবশ্যই পারবে। নিজেদের কমিটমেন্টটা ধরে রাখবে। আজ তোমাদের সংবর্ধনা দিতে কত লোক এসেছে, আগামীতে আরও আসবে, আরও বেশি সম্মান পাবে।' কুতুবউদ্দিন আহমেদ শূটারদের অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাদের জন্য একটি সুখবরও শোনালেন, 'এখন থেকে আপাতত ২০১২ সালের অলিম্পিক পর্যনত্ম শূটারদের জন্য শেলটেক প্রাইভেট লিঃ স্পন্সর করবে। তাদের ভাতা হিসেবে মাসে দেয়া হবে দশ হাজার টাকা। পরবতর্ীতে প্রয়োজনে স্পন্সরের মেয়াদ ও অর্থের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে।'
তার এ ঘোষণায় অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত শূটার রত্না, সাদিয়া, সাবরিনা, তৃপ্তি, আসিফ, বাকি, শোভন ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়ে। অবিরাম হাততালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে সভাস্থল। সংবর্ধনা শেষে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। অনুষ্ঠান শেষ হলে বিমানবন্দর থেকে শূটারদের নিয়ে পুষ্প সজ্জিত বিশেষ ট্রাকটি ঢাকার বিভিন্ন সড়কে এক আনন্দ র্যালি যাত্রা করে। তাদের সঙ্গে ছিল অর্কেস্ট্রো দল। তাদের বিউগল ও বাজনার তালে তালে নগরবাসীও উৎসুক হয়েছে, আনন্দ প্রকাশ করেছে। তারই প্রমাণ পাওয়া গেল বনানীর কাছে এসে জ্যামে পড়ার পর। এক চিপস বিক্রেতা অর্কেস্ট্রো দলের বাদ্যের তালে তালে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নাচতে লাগলেন। একপর্যায়ে তিনি শূটারদের বহনকারী ট্রাকেই উঠে গেলেন। ট্রাকে তার অপূর্ব নৃত্যশৈলী অব্যাহত রইল মিনিট তিনেক। শূটাররা তো বটেই, আশপাশের পথচারীরাও ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করছিলেন। সকলের চোখে মুখে পরিতৃপ্তির ছাপ।
No comments