স্মরণ-সেই পটুয়া শিল্পীর কথা by জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
তিনি এলেন, আঁকলেন, এঁকে জয় করলেন, আঁকতে
আঁকতেই চলে গেলেন। শিল্পী কামরুল হাসান, যাঁর পরিচিতি ছিল পটুয়া। পট থেকে
পটুয়া। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের সমসাময়িক ও স্বকীয়তায় উজ্জ্বল এই
শিল্পীর জন্ম কলকাতায়। বাবা মুহাম্মদ হাসিম। লেখাপড়া করেছেন কলকাতা মডেল
এমই স্কুলে।
এরপর কলকাতা মাদ্রাসা ও কলকাতা ইনস্টিটিউট অব
আর্টসে পড়াশোনা করেন। ফাইন আর্টস থেকে পাস করেন ১৯৪৭ সালে। ভৌত অনুশীলনে
তাঁর অনেক কৌতূহল ছিল। ভারত বিভাগের পর তিনি চলে আসেন ঢাকায়।
১৯৪৮ সালে জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে তিনি গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস স্থাপন করেন। বর্তমানে তা ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস নামে পরিচিত। রাজনৈতিক বিশ্বাসে ছিলেন বামপন্থী। সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িত থাকা এই শিল্পী ১৯৬৯ সালের অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও রেডিওর কলা বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
জীবিকার জন্য তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের নকশাকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রচার বিভাগে শিল্প বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিল্পী হিসেবে তিনি অর্জন করেছেন অনেক। স্বাধীনতাযুদ্ধকালে জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে আঁকা 'এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে' শীর্ষক পোস্টারটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে তিনি শিবনারায়ণ দাসের ডিজাইনে তৈরি আমাদের জাতীয় পতাকাটির বর্তমান রূপ দেন। স্বৈরাচারী এরশাদের শাসনামলে তিনি এক চোখের একটি ছবি আঁকেন। ছবির ক্যাপশন ছিল- 'দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে'।
ভারত, হংকং, মালয়েশিয়া, জাপানসহ পৃথিবীর বহু দেশে তিনি বহুবার প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। পুরস্কারও জীবনে কম পাননি। পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল (১৯৬৫), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৭৯), বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা (১৯৮৪), বাংলা একাডেমীর ফেলো (১৯৮৫)।
১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবিতা উৎসবে উপস্থিত থাকাকালে কামরুল হাসান একটি ছবির স্কেচ করতে করতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
১৯৪৮ সালে জয়নুল আবেদিনের সঙ্গে তিনি গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস স্থাপন করেন। বর্তমানে তা ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস নামে পরিচিত। রাজনৈতিক বিশ্বাসে ছিলেন বামপন্থী। সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িত থাকা এই শিল্পী ১৯৬৯ সালের অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও রেডিওর কলা বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।
জীবিকার জন্য তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত চারুকলা ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করেন এবং ১৯৬০ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের নকশাকেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রচার বিভাগে শিল্প বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
শিল্পী হিসেবে তিনি অর্জন করেছেন অনেক। স্বাধীনতাযুদ্ধকালে জেনারেল ইয়াহিয়ার মুখের ছবি দিয়ে আঁকা 'এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে' শীর্ষক পোস্টারটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৭২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে তিনি শিবনারায়ণ দাসের ডিজাইনে তৈরি আমাদের জাতীয় পতাকাটির বর্তমান রূপ দেন। স্বৈরাচারী এরশাদের শাসনামলে তিনি এক চোখের একটি ছবি আঁকেন। ছবির ক্যাপশন ছিল- 'দেশ আজ বিশ্ববেহায়ার খপ্পরে'।
ভারত, হংকং, মালয়েশিয়া, জাপানসহ পৃথিবীর বহু দেশে তিনি বহুবার প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। পুরস্কারও জীবনে কম পাননি। পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল (১৯৬৫), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৭৯), বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা (১৯৮৪), বাংলা একাডেমীর ফেলো (১৯৮৫)।
১৯৮৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় কবিতা উৎসবে উপস্থিত থাকাকালে কামরুল হাসান একটি ছবির স্কেচ করতে করতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
জাহাঙ্গীর হোসেন অরুণ
No comments