পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহ ছাড়া অন্য যাদের উপাস্য বানানো হয় তারা সেদিন তা অস্বীকার করবে
২৮. ওয়া ইয়াওমা নাহশুরুহুম জামিয়ান ছুম্মা
নাক্বু-লু লিল্লাজি-না আশরাকূ মাকানাকুম আনতুম ওয়া শুরাকা-উকুম,
ফাযাইয়্যাল্না-বাইনাহুম ওয়া ক্বা-লা শুরাকা-উহুম মা কুনতুম
ইয়্যানা-তা'বুদূন।
২৯. ফাকাফা-বিল্লাহি শাহীদান বাইনানা ওয়া বাইনাকুম ইন কুনতুম আ'ন 'ইবাদাতিকুম লাগাফিলীন।
৩০. হুনা-লিকা তাবলূ কুল্লু নাফছিম মা আসলাফাত ওয়া রুদ্দূ ইলাল্লাহি মাওলা-হুমুল হাক্কি, ওয়া দাল্লা আনহুম মা কানূ ইয়াফতারূন।
[সুরা ইউনুস, আয়াত ২৮, ২৯, ৩০]
অনুবাদ : ২৮. আর সেদিন তো আমি এদের সবাইকে একত্র করব। তারপর যারা শিরক করেছে, তাদের বলব, তোমরা এবং তোমরা যাদের আল্লাহর শরিক বানিয়েছিলে, তারা যার যার জায়গায় অবস্থান করো। এরপর আমি তাদের মধ্যে (উপাস্য ও উপাসকের) যে সম্পর্ক ছিল, তা ঘুচিয়ে দেব। তখন তাদের শরিক উপাস্যরা বলবে, তোমরা তো আমাদের উপাসনা করতে না।
২৯. (এই উপাস্যরা আরো বলবে) আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীরূপ আল্লাহই যথেষ্ট (অর্থাৎ সত্য এই যে), তোমরা যে আমাদের উপাসনা করতে, সে ব্যাপারে আমরা মোটেই জ্ঞাত ছিলাম না।
৩০. এভাবেই সেদিন প্রত্যেকে জীবনে যা কিছু করে এসেছে তা পরিষ্কারভাবে জেনে নেবে। আর সবাইকে তাদের সত্যিকারের প্রভু আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তখন উপাস্য সম্পর্কে তারা দুনিয়ায় যা কিছু বানোয়াট উদ্ভাবন করেছিল, সেসব হারিয়ে যাবে।
ব্যাখ্যা : ২৮ নম্বর আয়াতে চমৎকার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে 'শিরক'-এর ভ্রান্ততা ও অসারতা সম্পর্কে। মুশরিকরা তাদের মনগড়া যেসব উপাস্যের উপাসনা করত তাদের হাশরের দিন মুখোমুখি করা হবে। তখন তারা অস্বীকার করবে যে না, তোমরা আমাদের উপাসনা করতে না। মুশরিকরা তো সাধারণত মূর্তিপূজা করে, তারা বিভিন্ন রকম অলৌকিক সত্তার ধারণা থেকে মূর্তি বানায়। তারা চন্দ্র-সূর্যর্, সাগর-নদী, পাহাড়-পর্বতসহ নানা প্রাকৃতিক শক্তির মধ্যে দৈবশক্তি কল্পনা করে মূর্তি বানায় অথবা সেগুলোর প্রতীকের প্রতি পূজা নিবেদন করে। আর তারা মানুষের আকারে যেসব মূর্তি বানায় সেগুলোর পেছনেও থাকে ঐতিহাসিক কোনো ক্ষমতাধর বা গুণী ব্যক্তি অথবা তাদের কোনো পূর্বপুরুষ, যাদের ওপর তারা দেবত্ব আরোপ করে থাকে। হাশরের দিন সেই তারা বা সেসব বস্তুর সত্তাকে যখন মুখোমুখি করা হবে তখন তারা বলবে_না, তোমরা আমাদের উপাসনা করতে না। অর্থাৎ আমরা তোমাদের উপাস্য ছিলাম না, এবং উপাস্য হওয়ার দাবিও আমরা করিনি। ২৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের আরেকটি বিবৃতি উল্লেখ করেছেন। হাশরের দিন তারা যখন জানতে পারবে যে লোকেরা সত্যিই তাদের উপাসনা করত, তখন তারা বলবে, এরা আমাদের উপাসনা করলেও আমরা সে ব্যাপারে মোটেও অবহিত ছিলাম না। অর্থাৎ যেসব ক্ষমতাধর ও গুণী ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাদের উপাস্য বানিয়ে পূজা করা হয়, তারা রোজ হাশরের দিন তা জানতে পেরে আল্লাহকে সাক্ষী করে বলবে যে এ ব্যাপারে তারা কিছু জানত না এবং তাদের কোনো দায়দায়িত্ব ছিল না। ৩০ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, হাশরের দিন প্রত্যেক মানুষ জীবনে যা কিছু করেছে, তার প্রকৃত অবস্থা জানতে পারবে। অর্থাৎ সেদিন তারা জানতে পারবে যে যা করেছে তার কোনটি সঠিক ছিল, কোনটি বেঠিক ছিল, কোনটি সত্য ছিল, কোনটি মিথ্যা ছিল, কোনটি উপকারী ছিল, কোনটি অপকারী ছিল। সেদিন সত্যজ্ঞানের দ্বারা সব কিছু পরীক্ষিত হয়ে যাবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৩০. হুনা-লিকা তাবলূ কুল্লু নাফছিম মা আসলাফাত ওয়া রুদ্দূ ইলাল্লাহি মাওলা-হুমুল হাক্কি, ওয়া দাল্লা আনহুম মা কানূ ইয়াফতারূন।
[সুরা ইউনুস, আয়াত ২৮, ২৯, ৩০]
অনুবাদ : ২৮. আর সেদিন তো আমি এদের সবাইকে একত্র করব। তারপর যারা শিরক করেছে, তাদের বলব, তোমরা এবং তোমরা যাদের আল্লাহর শরিক বানিয়েছিলে, তারা যার যার জায়গায় অবস্থান করো। এরপর আমি তাদের মধ্যে (উপাস্য ও উপাসকের) যে সম্পর্ক ছিল, তা ঘুচিয়ে দেব। তখন তাদের শরিক উপাস্যরা বলবে, তোমরা তো আমাদের উপাসনা করতে না।
২৯. (এই উপাস্যরা আরো বলবে) আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীরূপ আল্লাহই যথেষ্ট (অর্থাৎ সত্য এই যে), তোমরা যে আমাদের উপাসনা করতে, সে ব্যাপারে আমরা মোটেই জ্ঞাত ছিলাম না।
৩০. এভাবেই সেদিন প্রত্যেকে জীবনে যা কিছু করে এসেছে তা পরিষ্কারভাবে জেনে নেবে। আর সবাইকে তাদের সত্যিকারের প্রভু আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তখন উপাস্য সম্পর্কে তারা দুনিয়ায় যা কিছু বানোয়াট উদ্ভাবন করেছিল, সেসব হারিয়ে যাবে।
ব্যাখ্যা : ২৮ নম্বর আয়াতে চমৎকার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে 'শিরক'-এর ভ্রান্ততা ও অসারতা সম্পর্কে। মুশরিকরা তাদের মনগড়া যেসব উপাস্যের উপাসনা করত তাদের হাশরের দিন মুখোমুখি করা হবে। তখন তারা অস্বীকার করবে যে না, তোমরা আমাদের উপাসনা করতে না। মুশরিকরা তো সাধারণত মূর্তিপূজা করে, তারা বিভিন্ন রকম অলৌকিক সত্তার ধারণা থেকে মূর্তি বানায়। তারা চন্দ্র-সূর্যর্, সাগর-নদী, পাহাড়-পর্বতসহ নানা প্রাকৃতিক শক্তির মধ্যে দৈবশক্তি কল্পনা করে মূর্তি বানায় অথবা সেগুলোর প্রতীকের প্রতি পূজা নিবেদন করে। আর তারা মানুষের আকারে যেসব মূর্তি বানায় সেগুলোর পেছনেও থাকে ঐতিহাসিক কোনো ক্ষমতাধর বা গুণী ব্যক্তি অথবা তাদের কোনো পূর্বপুরুষ, যাদের ওপর তারা দেবত্ব আরোপ করে থাকে। হাশরের দিন সেই তারা বা সেসব বস্তুর সত্তাকে যখন মুখোমুখি করা হবে তখন তারা বলবে_না, তোমরা আমাদের উপাসনা করতে না। অর্থাৎ আমরা তোমাদের উপাস্য ছিলাম না, এবং উপাস্য হওয়ার দাবিও আমরা করিনি। ২৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের আরেকটি বিবৃতি উল্লেখ করেছেন। হাশরের দিন তারা যখন জানতে পারবে যে লোকেরা সত্যিই তাদের উপাসনা করত, তখন তারা বলবে, এরা আমাদের উপাসনা করলেও আমরা সে ব্যাপারে মোটেও অবহিত ছিলাম না। অর্থাৎ যেসব ক্ষমতাধর ও গুণী ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাদের উপাস্য বানিয়ে পূজা করা হয়, তারা রোজ হাশরের দিন তা জানতে পেরে আল্লাহকে সাক্ষী করে বলবে যে এ ব্যাপারে তারা কিছু জানত না এবং তাদের কোনো দায়দায়িত্ব ছিল না। ৩০ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, হাশরের দিন প্রত্যেক মানুষ জীবনে যা কিছু করেছে, তার প্রকৃত অবস্থা জানতে পারবে। অর্থাৎ সেদিন তারা জানতে পারবে যে যা করেছে তার কোনটি সঠিক ছিল, কোনটি বেঠিক ছিল, কোনটি সত্য ছিল, কোনটি মিথ্যা ছিল, কোনটি উপকারী ছিল, কোনটি অপকারী ছিল। সেদিন সত্যজ্ঞানের দ্বারা সব কিছু পরীক্ষিত হয়ে যাবে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments