দুর্দিন পিছু ছাড়ছে না কৃষকের- ধারাবাহিক লোকসানে বাড়ছে হতাশা by আশরাফ আলী
দুর্দিন পিছু ছাড়ছে না কৃষকের। আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে কৃষির উৎপাদন
আশানুরূপ বাড়লেও খরচ উঠছে না। সরকারের বাজার মনিটরিং না থাকায় হতাশা
বাড়ছে কৃষকের।
এক দিকে কৃষি উপকরণের পাশাপাশি
কৃষিশ্রমিকের মজুরি ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে, অন্য দিকে কৃষক তার উৎপাদিত
পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় এ খাতের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি
হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে টানা লোকসান দিয়ে অনেকেই এখন দেনার দায়ে
সর্বস্বান্ত হওয়ার পথে। কেউ কেউ কৃষিকাজ ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছেন।
অথচ কৃষকের উৎপাদিত ফসল তার হাত ছাড়া হলেই দাম বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক
হারে। কৃষিপণ্য মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়া-আড়তদারদের হাতে চলে আসার কিছু
দিনের মধ্যেই দাম বাড়তে থাকে। মাত্র মাস দুয়েকের ব্যবধানে চালের দাম
বেড়েছে মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা; অর্থৎ কেজিতে ১০ টাকার ওপরে। ফলে কৃষক
লোকসান দিলেও লাভ করছে মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণী। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে না পারলে এক সময় প্রান্তিক কৃষক ও কৃষিশ্রমিক
খুঁজেই পাওয়া যাবে না। এতে গোটা কৃষিই মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলে
কৃষি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের প্রান্তিক কৃষক ধান, পাট, গম, আলুসহ নানা রকম সবজি চাষ করে শুধু লোকসানই গুনছেন না, অনেকে সর্বস্বান্তও হয়েছেন। অনেকে লোকসানি পণ্যের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মওসুমে উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে ধান-চাল বিক্রি করে কৃষককে বড় ধরনের লোকসান দিতে হয়েছে। দাম না পেয়ে গত বছর দেশের হিমাগারগুলোতে লাখ লাখ টন আলু পচে গেছে। এতে আলুচাষি ও হিমাগার মালিকদের লোকসান গুনতে হয়েছে শত শত কোটি টাকা। আর্থিকভাবে তিগ্রস্ত কৃষক পরের মওসুমে ধান, পাট ও আলুর আবাদই কমিয়ে দিয়েছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চলতি বছর। এ বছর ভরা মওসুমেও বাজারে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। দ্বিগুণ লোকসান গুনতে হয়েছে উত্তরের সবজিচাষিদের। শুধু কৃষকই নয়, লোকসান দিয়েছেন গরু-মুরগির খামারি ও মৎস্য চাষিরাও। এর ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা এসব পণ্যের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। যার প্রভার পড়ছে বাজারে। বর্তমানে বাজারে সব ধরনের কৃষিপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। আবাদ কমিয়ে দেয়ায় ফলন কম হয়েছে, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণেই বাজারে কৃষিপণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী বলে কৃষি অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন।
এ দিকে গত বছরজুড়ে বোরো, আউশ ও আমন মওসুমে প্রত্যাশিত ভালো ফলন হলেও উৎপাদক কৃষক তার ন্যায্য দাম পাননি। প্রধান ফসল ধান, পাট ও আলুসহ বেশির ভাগ ফসলে উৎপাদন খরচও ওঠেনি কৃষকের। গত বোরো মওসুমে প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৫ টাকা ৭৬ পয়সা। চাল আকারে এ খরচ ২৪ টাকা ২৭ পয়সা। অথচ স্থানীয় বাজারগুলোতে চাল বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে। আর প্রতি কেজি আমন চালের উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৪ টাকা ৭৬ পয়সা। বাজারে বিক্রি হয়েছে ২০-২২ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ মওসুমের শুরু থেকেই কৃষিপণ্যের দাম কমতে থাকলেও কৃষকের হাতছাড়া হলেই বাজারে তা দেড়-দুইগুণ বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম না পেলেও মধ্যস্বত্বভোগী আধা শহুরের এক শ্রেণীর মানুষের পকেট ভারী হচ্ছে। তারা ফুলেফেপে মোটা-তাজা হচ্ছে। আর ধীরে ধীরে কঙ্কালসার হচ্ছেন দেশের প্রান্তিক কৃষক। এ অবস্থায় হাজার হাজার কৃষিশ্রমিক গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে ঠেলাগাড়ি ও রিকশা চালিয়ে দিনমজুরি করছেন।
এ প্রসঙ্গে কৃষি অর্থনীতিবিদ ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, মওসুমের শুরুতেই যদি সরকার ব্যাপক আকারে উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি দামে ধান-চাল কেনার উদ্যোগ নিতÑ তাহলে কৃষককে লোকসান দিয়ে তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে হতো না। কৃষকও বেশি দামে সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারত। তিনি বলেন, কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বাজার পরিস্থিতির ওপর সরকারকে বেশি করে নজর দিতে হবে। কৃষকের স্বার্থ রায় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় এর নেতিবাচক প্রভাবে কৃষক হতাশ হবে।
যদিও খাদ্যমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেছেন, সরকারের গুদামের ধারণমতার সীমাবদ্ধতার কারণেই ইচ্ছে করলেই ব্যাপক হারে ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। বোরোর দরপতন সামাল দিতে ১০ থেকে ১২ লাখ টন চাল কেনা হবে। গত বোরো মওসুমে প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৫ টাকা ৭৬ পয়সা। চাল আকারে এ খরচ ২৪ টাকা ২৭ পয়সা। সরকার এ ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে তিন টাকা লাভ ধরে ২৮ টাকা কেজি দরে চাল কিনেছে। আবার প্রতি কেজি আমন চালের উৎপদনে ব্যয় হয়েছে ২৪ টাকা ৭৬ পয়সা। সব দিক বিবেচনা করে ২৬ টাকায় চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বছর বোরোর আবাদ ও উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান-চালের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে কৃষক লাভবান হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমনের উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টন। এত বিপুল পরিমাণ ধান থেকে সরকার যা কেনে তা বাজারে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না।
ড. মাহবুব বলেন, ফসলের উৎপাদন ভালো হলেও ভালো নেই দেশের প্রান্তিক কৃষক। আমনের বাজার দর কম হওয়ায় স্বস্তিতে নেই কৃষকেরা। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের অল্প চাল-ধান কেনার পরিকল্পনায় ধানের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ে, কমতে থাকে দাম। প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৬০০-৬৫০ টাকা হলেও কৃষক বিক্রি করেছে ৫০০-৫৫০ টাকা। চড়া দামে ইউরিয়া সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচ দিয়ে উৎপাদিত ধানে লোকসান গুনছে কৃষক। তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে চলতি বোরো মওসুমেও কৃষকদের অতিরিক্ত খরচ গুনতে হবে। ইতোমধ্যে শৈত্যপ্রবাহে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বোরো চারা নষ্ট হয়ে গেছে।
আমেরিকার ইলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, কৃষিপণ্য বিপণনে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দেশের কৃষকের মধ্য বিরূপ প্রভাব পড়বে। ধান-পাটের উৎপাদন ভালো হলে এবং ভালো বাজারদর পেলে কৃষক ভালো থাকে। কৃষকের হাতে টাকা থাকলে ব্যবসায়ীরাও ভালো থাকে। আর কৃষকের হাতে টাকা থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা থাকে।
ডিএইর সূত্র জানায়, গত বছর তিন মওসুমে দেশে চাল উৎপাদন হয়েছে তিন কোটি ৪৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৪ টন। এর মধ্যে বোরোর উৎপাদন ছিল এক কোটি ৮৬ লাখ ১৭ হাজার টন, আউশের উৎপাদন ছিল ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টন এবং আমনের উৎপাদন ছিল এক কোটি ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৪ টন। চালের এ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ। ফলে দেশে খাদ্য সঙ্কটের ঝুঁকি অনেকাংশে কমলেও সার্বিকভাবে দেশের মানুষ ভালো নেই। তবে খাদ্যপ্রাপ্তি নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো হা-হুতাশও নেই।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের প্রান্তিক কৃষক ধান, পাট, গম, আলুসহ নানা রকম সবজি চাষ করে শুধু লোকসানই গুনছেন না, অনেকে সর্বস্বান্তও হয়েছেন। অনেকে লোকসানি পণ্যের আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। মওসুমে উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে ধান-চাল বিক্রি করে কৃষককে বড় ধরনের লোকসান দিতে হয়েছে। দাম না পেয়ে গত বছর দেশের হিমাগারগুলোতে লাখ লাখ টন আলু পচে গেছে। এতে আলুচাষি ও হিমাগার মালিকদের লোকসান গুনতে হয়েছে শত শত কোটি টাকা। আর্থিকভাবে তিগ্রস্ত কৃষক পরের মওসুমে ধান, পাট ও আলুর আবাদই কমিয়ে দিয়েছেন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চলতি বছর। এ বছর ভরা মওসুমেও বাজারে ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। দ্বিগুণ লোকসান গুনতে হয়েছে উত্তরের সবজিচাষিদের। শুধু কৃষকই নয়, লোকসান দিয়েছেন গরু-মুরগির খামারি ও মৎস্য চাষিরাও। এর ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা এসব পণ্যের উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন। যার প্রভার পড়ছে বাজারে। বর্তমানে বাজারে সব ধরনের কৃষিপণ্যের দাম বাড়তির দিকে। আবাদ কমিয়ে দেয়ায় ফলন কম হয়েছে, বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণেই বাজারে কৃষিপণ্যের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী বলে কৃষি অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন।
এ দিকে গত বছরজুড়ে বোরো, আউশ ও আমন মওসুমে প্রত্যাশিত ভালো ফলন হলেও উৎপাদক কৃষক তার ন্যায্য দাম পাননি। প্রধান ফসল ধান, পাট ও আলুসহ বেশির ভাগ ফসলে উৎপাদন খরচও ওঠেনি কৃষকের। গত বোরো মওসুমে প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৫ টাকা ৭৬ পয়সা। চাল আকারে এ খরচ ২৪ টাকা ২৭ পয়সা। অথচ স্থানীয় বাজারগুলোতে চাল বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে। আর প্রতি কেজি আমন চালের উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২৪ টাকা ৭৬ পয়সা। বাজারে বিক্রি হয়েছে ২০-২২ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ মওসুমের শুরু থেকেই কৃষিপণ্যের দাম কমতে থাকলেও কৃষকের হাতছাড়া হলেই বাজারে তা দেড়-দুইগুণ বেড়ে গেছে। ফলে উৎপাদক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম না পেলেও মধ্যস্বত্বভোগী আধা শহুরের এক শ্রেণীর মানুষের পকেট ভারী হচ্ছে। তারা ফুলেফেপে মোটা-তাজা হচ্ছে। আর ধীরে ধীরে কঙ্কালসার হচ্ছেন দেশের প্রান্তিক কৃষক। এ অবস্থায় হাজার হাজার কৃষিশ্রমিক গ্রাম ছেড়ে শহরে এসে ঠেলাগাড়ি ও রিকশা চালিয়ে দিনমজুরি করছেন।
এ প্রসঙ্গে কৃষি অর্থনীতিবিদ ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, মওসুমের শুরুতেই যদি সরকার ব্যাপক আকারে উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি দামে ধান-চাল কেনার উদ্যোগ নিতÑ তাহলে কৃষককে লোকসান দিয়ে তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে হতো না। কৃষকও বেশি দামে সরকারের কাছে বিক্রি করে লাভবান হতে পারত। তিনি বলেন, কৃষিপণ্যের উৎপাদন ও বাজার পরিস্থিতির ওপর সরকারকে বেশি করে নজর দিতে হবে। কৃষকের স্বার্থ রায় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় এর নেতিবাচক প্রভাবে কৃষক হতাশ হবে।
যদিও খাদ্যমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেছেন, সরকারের গুদামের ধারণমতার সীমাবদ্ধতার কারণেই ইচ্ছে করলেই ব্যাপক হারে ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। বোরোর দরপতন সামাল দিতে ১০ থেকে ১২ লাখ টন চাল কেনা হবে। গত বোরো মওসুমে প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৫ টাকা ৭৬ পয়সা। চাল আকারে এ খরচ ২৪ টাকা ২৭ পয়সা। সরকার এ ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে তিন টাকা লাভ ধরে ২৮ টাকা কেজি দরে চাল কিনেছে। আবার প্রতি কেজি আমন চালের উৎপদনে ব্যয় হয়েছে ২৪ টাকা ৭৬ পয়সা। সব দিক বিবেচনা করে ২৬ টাকায় চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ বছর বোরোর আবাদ ও উৎপাদন ভালো হয়েছে। ধান-চালের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে কৃষক লাভবান হবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর আমনের উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৩০ লাখ টন। এত বিপুল পরিমাণ ধান থেকে সরকার যা কেনে তা বাজারে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না।
ড. মাহবুব বলেন, ফসলের উৎপাদন ভালো হলেও ভালো নেই দেশের প্রান্তিক কৃষক। আমনের বাজার দর কম হওয়ায় স্বস্তিতে নেই কৃষকেরা। অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের অল্প চাল-ধান কেনার পরিকল্পনায় ধানের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ে, কমতে থাকে দাম। প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৬০০-৬৫০ টাকা হলেও কৃষক বিক্রি করেছে ৫০০-৫৫০ টাকা। চড়া দামে ইউরিয়া সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচ দিয়ে উৎপাদিত ধানে লোকসান গুনছে কৃষক। তেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে চলতি বোরো মওসুমেও কৃষকদের অতিরিক্ত খরচ গুনতে হবে। ইতোমধ্যে শৈত্যপ্রবাহে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বোরো চারা নষ্ট হয়ে গেছে।
আমেরিকার ইলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, কৃষিপণ্য বিপণনে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দেশের কৃষকের মধ্য বিরূপ প্রভাব পড়বে। ধান-পাটের উৎপাদন ভালো হলে এবং ভালো বাজারদর পেলে কৃষক ভালো থাকে। কৃষকের হাতে টাকা থাকলে ব্যবসায়ীরাও ভালো থাকে। আর কৃষকের হাতে টাকা থাকলে গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা থাকে।
ডিএইর সূত্র জানায়, গত বছর তিন মওসুমে দেশে চাল উৎপাদন হয়েছে তিন কোটি ৪৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৬৪ টন। এর মধ্যে বোরোর উৎপাদন ছিল এক কোটি ৮৬ লাখ ১৭ হাজার টন, আউশের উৎপাদন ছিল ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টন এবং আমনের উৎপাদন ছিল এক কোটি ৩৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৬৪ টন। চালের এ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ। ফলে দেশে খাদ্য সঙ্কটের ঝুঁকি অনেকাংশে কমলেও সার্বিকভাবে দেশের মানুষ ভালো নেই। তবে খাদ্যপ্রাপ্তি নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো হা-হুতাশও নেই।
No comments