সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করতে রাষ্ট্রপতি বিরত থাকবেন- মানবতাবিরোধী অপরাধ- সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধনের দাবি করেছেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম by বিকাশ দত্ত
ন্যায় বিচারের স্বার্থে এবং অপরাধীর
শাস্তি নিশ্চিত করতে এবার প্রসিকিউশন পক্ষ সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধনের
দাবি তুলেছেন। এই অনুচ্ছেদটি সংশোধন হলে রাষ্ট্রপতি মানবতাবিরোধী অপরাধের
অভিযোগে অভিযুক্ত কোন আসামিকে খালাসের আদেশ থেকে বিরত থাকবেন।
বঙ্গবন্ধু ও মানবতাবিরোধীদের ক্ষমা করেননি। প্রসিকিউশন পক্ষের অন্যতম প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জনকণ্ঠকে এ কথা বলেছেন।
৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অভিযুক্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হবার পরও তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করে। এরপর থেকে সারাদেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ছাত্র জনতা তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ৬টি অভিযোগের মধ্যে একটি অভিযোগে কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়া হয়। সরকার ঐ খালাসের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবে। ইতোমধ্যে আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন আইনের সংশোধনের দাবি জানান।
প্রসিকিউশন পক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেছেন, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদে কমপ্লিট জাস্টিসের বিধান রেখে নতুন করে কোন দ-াদেশ দেন, তবে তা রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকারের আওতা বহির্ভূত করতে হলে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ ‘কোন আদালত ট্রাইব্যুনাল বা অত্র কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন দ-ের মার্জনা বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোন দ- হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।’ ফলে জন আকাক্সক্ষার আলোকে ১৯৭৩ সালের আইনের ৩(২) ধারার উল্লেখিত দ-াদেশ প্রাপ্তদের আপীল বিভাগের কর্তৃক চূড়ান্ত হবার পর যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না করার বিষয় কার্যকর এবং প্রতিভাত করতে হয় তবে সে ক্ষেত্রে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধনী প্রয়োজন।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম আরও বলেন, ১৯৭৩ সালের আইনে ২১ ধারায় আপীল সংক্রান্ত যে বিষয় আছে তাতে ‘সমতার নীতি’ অনুসরণ করা হয়নি। আইনের চোখে সবাই সমান। আপীলের অধিকার সাজাপ্রাপ্ত আসামি পক্ষ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে এই আইনের ২১ ধারা যেভাবে উল্লেখিত আছে প্রসিকিউশন পক্ষকে শুধুই একুইটাল (খালাস)-এর বিরুদ্ধে আপীল করার সীমিত অধিকার দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত সাজার ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ প্রসিকিউশন পক্ষকে আপীল অধিকার দেয়া হয়নি। ফলে এ অংশের সংশোধনটি যথার্থ এবং যথার্থভাবে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ কার্যকর সংশোধনীর কথা বলেছেন।
সংশোধনী যেহেতু পদ্ধতিগত বিষয় ফলে ভূতাপেক্ষতা নীতি অনুযায়ী এই সংশোধনী প্রশ্নবিদ্ধ হবার কোন সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, একাত্তর সালে সংঘটিত অপরাধসমূহের গণহত্যাজনিত অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষত গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, দেশান্তর, ধর্মান্তর করা এমনকি উল্লেখিত উদ্দেশ্যে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, ইত্যকার অপরাধসমূহ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু কোনভাবেই সাধারণ ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত করেননি। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু ’৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ৩(২) ধারায় উল্লেখিত অপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা করেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দালাল আইন (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) গঠন করেন। এতে করে সারাদেশে ৭৩টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। দালাল আইন জারির পর ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশ থেকে ৩৭ হাজার ৪১৭ দালালকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় রাজাকার আলবদর আলশামসদের বিচার। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৮৪৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। তার মধ্যে ৭৫২ জন দ-িত হয়। খালাস পায় ২ হাজার ৯৬ জন। সাধারণ ক্ষমায় ৩৭ হাজারের মধ্যে ২৬ হাজার ছাড়া পেয়েছিলেন। ১১ হাজারের বেশি ব্যক্তি আটক ছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি সায়েম ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার দালাল আইন বাতিল করে। ফলে এই ১১ হাজার ব্যক্তির পক্ষে আপীল করে জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে।
৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ অভিযুক্ত জামায়াতের শীর্ষ নেতা আব্দুল কাদের মোল্লাকে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হবার পরও তাকে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রদান করে। এরপর থেকে সারাদেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। ছাত্র জনতা তার ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। ৬টি অভিযোগের মধ্যে একটি অভিযোগে কাদের মোল্লাকে খালাস দেয়া হয়। সরকার ঐ খালাসের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবে। ইতোমধ্যে আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি, আইনজীবী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন আইনের সংশোধনের দাবি জানান।
প্রসিকিউশন পক্ষের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেছেন, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদে কমপ্লিট জাস্টিসের বিধান রেখে নতুন করে কোন দ-াদেশ দেন, তবে তা রাষ্ট্রপতি ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকারের আওতা বহির্ভূত করতে হলে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ ‘কোন আদালত ট্রাইব্যুনাল বা অত্র কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোন দ-ের মার্জনা বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোন দ- হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।’ ফলে জন আকাক্সক্ষার আলোকে ১৯৭৩ সালের আইনের ৩(২) ধারার উল্লেখিত দ-াদেশ প্রাপ্তদের আপীল বিভাগের কর্তৃক চূড়ান্ত হবার পর যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না করার বিষয় কার্যকর এবং প্রতিভাত করতে হয় তবে সে ক্ষেত্রে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধনী প্রয়োজন।
প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম আরও বলেন, ১৯৭৩ সালের আইনে ২১ ধারায় আপীল সংক্রান্ত যে বিষয় আছে তাতে ‘সমতার নীতি’ অনুসরণ করা হয়নি। আইনের চোখে সবাই সমান। আপীলের অধিকার সাজাপ্রাপ্ত আসামি পক্ষ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে এই আইনের ২১ ধারা যেভাবে উল্লেখিত আছে প্রসিকিউশন পক্ষকে শুধুই একুইটাল (খালাস)-এর বিরুদ্ধে আপীল করার সীমিত অধিকার দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত সাজার ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ প্রসিকিউশন পক্ষকে আপীল অধিকার দেয়া হয়নি। ফলে এ অংশের সংশোধনটি যথার্থ এবং যথার্থভাবে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ কার্যকর সংশোধনীর কথা বলেছেন।
সংশোধনী যেহেতু পদ্ধতিগত বিষয় ফলে ভূতাপেক্ষতা নীতি অনুযায়ী এই সংশোধনী প্রশ্নবিদ্ধ হবার কোন সুযোগ নেই। তিনি আরও বলেন, একাত্তর সালে সংঘটিত অপরাধসমূহের গণহত্যাজনিত অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে বিশেষত গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, দেশান্তর, ধর্মান্তর করা এমনকি উল্লেখিত উদ্দেশ্যে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, ইত্যকার অপরাধসমূহ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু কোনভাবেই সাধারণ ক্ষমার অন্তর্ভুক্ত করেননি। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু ’৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের ৩(২) ধারায় উল্লেখিত অপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা করেননি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দালাল আইন (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) গঠন করেন। এতে করে সারাদেশে ৭৩টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। দালাল আইন জারির পর ১৯৭৩ সালের ৩০ নবেম্বর পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশ থেকে ৩৭ হাজার ৪১৭ দালালকে গ্রেফতার করা হয়। শুরু হয় রাজাকার আলবদর আলশামসদের বিচার। ১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার ৮৪৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। তার মধ্যে ৭৫২ জন দ-িত হয়। খালাস পায় ২ হাজার ৯৬ জন। সাধারণ ক্ষমায় ৩৭ হাজারের মধ্যে ২৬ হাজার ছাড়া পেয়েছিলেন। ১১ হাজারের বেশি ব্যক্তি আটক ছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি সায়েম ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকার দালাল আইন বাতিল করে। ফলে এই ১১ হাজার ব্যক্তির পক্ষে আপীল করে জেল থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ ঘটে।
No comments