আইনবিদদের অভিমত- ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন আপিল বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করবে by গোলাম রব্বানী
ট্রাইব্যুনাল আইনের প্রস্তাবিত সংশোধন আপিল বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করবে
বলে মনে করেন আইনবিদরা। তাদের মতে, মামলা নিষ্পত্তির জন্য সুনির্দিষ্টভাবে
সময় বেঁধে দেয়ার ঘটনা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
এতে সুবিচার বিঘিœত হবে। সরকারের এ উদ্যোগ সংবিধানসম্মত নয় বলেও তারা মন্তব্য করেন।
সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করতে
হবে আপিল বিভাগকে। তবে আপিল করার জন্য সময় আগের মতোই ৩০ দিন থাকছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই রায় দেন। যেকোনো সাজার বিরুদ্ধে আসামির আপিলের সুযোগ থাকলেও আইনানুযায়ী কোনো প্রকার সাজা বাড়াতে আপিলের সুযোগ নেই রাষ্ট্রপক্ষের। আসামি রায়ে কেবল বেকসুর খালাস পেলে আপিল করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।
ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের একটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আলাদাভাবে একটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করতে পারবে কি-না সে ব্যাপারে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কিন্তু তারপরও আপিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ইতোমধ্যে সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন আবদুল কাদের মোল্লা ও অন্যান্য জামায়াত নেতাদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে রাজধানীর শাহবাগে। সরকার এই আন্দোলনকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল আইনের আপিল সংক্রান্ত ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি খসড়া মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হচ্ছে। আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় সংশোধিত আইনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
মামলাসংক্রান্ত আইন সংশোধনের ব্যাপারে সংবিধানের ৩৫(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।’
নতুন করে আইন সংশোধনের উদ্যোগে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র একজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার যে সংশোধনী আনতে চাচ্ছে তাতেই তাদের উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে। এ ধরনের সংশোধনী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করবে। কোনো বিচারের ক্ষেত্রে আদালতকে সময় বেঁধে দেয়ার মতো নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। তিনি বলেন, সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে বিঘিœত করবে এবং তাতে সুবিচার পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে।
ট্রাইব্যুনালে ডিফেন্স টিমের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক গতকাল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, মামলায় রায় ঘোষণার পর সেই মামলার আইন পরিবর্তন করা সংবিধান সম্মত নয়। তিনি বলেন, বিচারাধীন মামলার আইন সংশোধন করা যেতে পারে, তবে তা সংবিধান সম্মত হতে হবে। কেউ নিজেদের প্রয়োজনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আইন পরিবর্তন করলে তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে।
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘পুরো বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে নিজেদের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহারের জন্য তারা এই সংশোধনী আনার চেষ্টা করছে। এই সংশোধনী দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই রায় দেন। যেকোনো সাজার বিরুদ্ধে আসামির আপিলের সুযোগ থাকলেও আইনানুযায়ী কোনো প্রকার সাজা বাড়াতে আপিলের সুযোগ নেই রাষ্ট্রপক্ষের। আসামি রায়ে কেবল বেকসুর খালাস পেলে আপিল করতে পারবে রাষ্ট্রপক্ষ।
ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগের একটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। আলাদাভাবে একটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করতে পারবে কি-না সে ব্যাপারে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। কিন্তু তারপরও আপিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। ইতোমধ্যে সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন আবদুল কাদের মোল্লা ও অন্যান্য জামায়াত নেতাদের ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে রাজধানীর শাহবাগে। সরকার এই আন্দোলনকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাইব্যুনাল আইনের আপিল সংক্রান্ত ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। গতকাল এ সংক্রান্ত একটি খসড়া মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়।
আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হচ্ছে। আজ সোমবার মন্ত্রিসভায় সংশোধিত আইনের প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
মামলাসংক্রান্ত আইন সংশোধনের ব্যাপারে সংবিধানের ৩৫(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অপরাধের দায়যুক্ত কার্যসংঘটনকালে বলবৎ ছিল, এরূপ আইন ভঙ্গ করিবার অপরাধ ব্যতীত কোনো ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা যাইবে না এবং অপরাধ-সংঘটনকালে বলবৎ সেই আইনবলে যে দণ্ড দেওয়া যাইতে পারিত, তাহাকে তাহার অধিক বা তাহা হইতে ভিন্ন দণ্ড দেওয়া যাইবে না।’
নতুন করে আইন সংশোধনের উদ্যোগে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র একজন আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার যে সংশোধনী আনতে চাচ্ছে তাতেই তাদের উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে। এ ধরনের সংশোধনী সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করবে। কোনো বিচারের ক্ষেত্রে আদালতকে সময় বেঁধে দেয়ার মতো নজির বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। তিনি বলেন, সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে তা স্বাধীন বিচারব্যবস্থাকে বিঘিœত করবে এবং তাতে সুবিচার পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাবে।
ট্রাইব্যুনালে ডিফেন্স টিমের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক গতকাল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, মামলায় রায় ঘোষণার পর সেই মামলার আইন পরিবর্তন করা সংবিধান সম্মত নয়। তিনি বলেন, বিচারাধীন মামলার আইন সংশোধন করা যেতে পারে, তবে তা সংবিধান সম্মত হতে হবে। কেউ নিজেদের প্রয়োজনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য আইন পরিবর্তন করলে তাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে।
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘পুরো বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে নিজেদের উদ্দেশ্য পূরণে ব্যবহারের জন্য তারা এই সংশোধনী আনার চেষ্টা করছে। এই সংশোধনী দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।’
No comments