আমরা বাঙালী পরাভব মানিনি, মানি না মানব না- একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনীতে প্রধানমন্ত্রী
অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের গর্ব। বাংলা
একাডেমীর বইমেলা সে গৌরবের ইতিহাসকেই প্রতিভাত করে।
জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে সকলকে প্রেরণা যোগায় বইমেলা। তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও
নতুন বইয়ের ঘ্রাণ মন ভরিয়ে দেয়। সকলের উচিত বেশি করে বই পড়া। আগামীতে মূল
মেলা বাংলা একাডেমী থেকে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার
পক্ষেও মত দেন প্রধানমন্ত্রী।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমী মঞ্চে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংষ্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও প্রবীণ প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। একাডেমীর সভাপতি এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। দেশের বরেণ্য লেখক, কবি, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক ও প্রকাশকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিটি পাকিস্তানের গণপরিষদ অধিবেশনে প্রথম তুলেছিলেন কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তাঁর প্রস্তাব অগ্রাহ্য হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিসসহ ছাত্র সমাজ যৌথভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে। ১১ মার্চকে বাংলা ভাষা দাবি দিবস ঘোষণা করা হয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর বাংলাকে বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যান। তিনি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেন। বাংলাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সবসময় জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন বলে জানান। বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাকে মা বলার অধিকার আদায়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল বাঙালি। এটি তাই বাঙালীর শোকের মাস। সেই সঙ্গে গর্বের। বইমেলা সে গৗরবের ইতিহাসকেই প্রতিভাত করে। বিডিনিউজে খবরে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাঙালী পরাভব মানিনি, পরাভব মানি না, আমরা পরাভব মানব না।’ তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তির যুগ। অনেক কিছু সহজ হয়ে গেছে। ই-বুক চালু হয়েছে। আইপ্যাড, নোটবুক আছে। এগুলোতেও বই পড়ার সুযোগ আছে। তবে নতুন বইয়ের গন্ধ শোকা, হাতে ছুঁয়ে বই পড়ার আনন্দ অনেক বেশি। জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বার্থে সকলেরই উচিত বেশি বেশি করে বই পড়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলায় লেখা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের অনুবাদ হওয়া জরুরী। তা না হলে বিশ্বের কাছে আমাদের অনেক কিছু পৌঁছবে না। একইভাবে বিদেশী ভাষার গুরুত্বপূর্ণ বই অনুবাদেরও পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমী আমার অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। এক সময় এখানে নিয়মিত আসতাম। আড্ডা দিতাম। একাডেমীর লাইব্রেরিটি খুব ব্যবহার করতাম। এর পর আক্ষেপের সুর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন কাজ অনেক বেশি। চাইলেও আর পারি না।
অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে বাংলা একাডেমী থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত করার পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমীতে কিছু গবেষণাধর্মী বইয়ের স্টল থাকতে পারে। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যেতে পারে। তবে মূল মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সকলে মিলে পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তিনি।
বাংলা একাডেমী পরিচালনার জন্য করা খসড়া নীতিমালা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি চূড়ান্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে দেবে সরকার। জাতীয় গ্রন্থ নীতিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় এটি পাস হয়েছে। জানি কিছুদিনের মধ্যে এটি সংসদে উপস্থাপিত হবে। এবারের সংসদেই আইনটি পাস করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এর পর বইমেলা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন ও বই কেনেন।
পরে সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় বইমেলা। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুক্রবার বিকেলে বাংলা একাডেমী মঞ্চে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংষ্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ ও প্রবীণ প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ। একাডেমীর সভাপতি এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। দেশের বরেণ্য লেখক, কবি, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক ও প্রকাশকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবিটি পাকিস্তানের গণপরিষদ অধিবেশনে প্রথম তুলেছিলেন কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। তাঁর প্রস্তাব অগ্রাহ্য হওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও তমদ্দুন মজলিসসহ ছাত্র সমাজ যৌথভাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে। ১১ মার্চকে বাংলা ভাষা দাবি দিবস ঘোষণা করা হয়। জাতির পিতা স্বাধীনতার পর বাংলাকে বিশ্ব অঙ্গনে নিয়ে যান। তিনি ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলায় ভাষণ দেন। বাংলাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সবসময় জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেন বলে জানান। বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাকে মা বলার অধিকার আদায়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল বাঙালি। এটি তাই বাঙালীর শোকের মাস। সেই সঙ্গে গর্বের। বইমেলা সে গৗরবের ইতিহাসকেই প্রতিভাত করে। বিডিনিউজে খবরে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাঙালী পরাভব মানিনি, পরাভব মানি না, আমরা পরাভব মানব না।’ তিনি বলেন, এখন প্রযুক্তির যুগ। অনেক কিছু সহজ হয়ে গেছে। ই-বুক চালু হয়েছে। আইপ্যাড, নোটবুক আছে। এগুলোতেও বই পড়ার সুযোগ আছে। তবে নতুন বইয়ের গন্ধ শোকা, হাতে ছুঁয়ে বই পড়ার আনন্দ অনেক বেশি। জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বার্থে সকলেরই উচিত বেশি বেশি করে বই পড়া। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলায় লেখা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের অনুবাদ হওয়া জরুরী। তা না হলে বিশ্বের কাছে আমাদের অনেক কিছু পৌঁছবে না। একইভাবে বিদেশী ভাষার গুরুত্বপূর্ণ বই অনুবাদেরও পরামর্শ দেন তিনি।
ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা একাডেমী আমার অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। এক সময় এখানে নিয়মিত আসতাম। আড্ডা দিতাম। একাডেমীর লাইব্রেরিটি খুব ব্যবহার করতাম। এর পর আক্ষেপের সুর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন কাজ অনেক বেশি। চাইলেও আর পারি না।
অমর একুশে গ্রন্থমেলাকে বাংলা একাডেমী থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত করার পক্ষে মত দিয়ে তিনি বলেন, বাংলা একাডেমীতে কিছু গবেষণাধর্মী বইয়ের স্টল থাকতে পারে। আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা যেতে পারে। তবে মূল মেলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সকলে মিলে পরামর্শ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানান তিনি।
বাংলা একাডেমী পরিচালনার জন্য করা খসড়া নীতিমালা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি চূড়ান্ত করতে একটি কমিটি গঠন করে দেবে সরকার। জাতীয় গ্রন্থ নীতিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সম্প্রতি মন্ত্রিসভায় এটি পাস হয়েছে। জানি কিছুদিনের মধ্যে এটি সংসদে উপস্থাপিত হবে। এবারের সংসদেই আইনটি পাস করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এর পর বইমেলা পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন ও বই কেনেন।
পরে সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয় বইমেলা। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
No comments