অতি উৎসাহী by একরামুল হক শামীম
কোনো কাজে অতি উৎসাহী হলে তাতে বিপত্তির আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনী যখন অতি উৎসাহী হয়, তখন বিপত্তি আরও বেশি হয়। নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আগের দিন সকালে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পেঁৗছে দেওয়ার কারণে থানায় যেতে হয়েছে শিক্ষকদের।
টাঙ্গাইলের সখীপুরের প্রতিভা স্কুল অ্যান্ড শিক্ষা পরিবারের প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচ শিক্ষককে আটক করেছে থানা পুলিশ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আতঙ্ক তৈরির বন্দোবস্তও হয়েছে। বিতরণ করা ১১ সেট বই শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে উদ্ধার করেছেন ওই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রফিকুল হক বাদল। 'পড়েছো মোগলের হাতে, খানা খেতে হবে একসাথে'_ এর মতো করে বুঝি বলাই যায় 'পড়েছো পুলিশের হাতে, বই ফেরত দিতে হবে একসাথে'। উদ্ধারকৃত বইগুলো ফেরত গেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে। এই 'চমৎকার দেখানো আনুষ্ঠানিকতা' শেষে নিশ্চয়ই পাঠ্যপুস্তক উৎসবের দিন নতুন করে সেসব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে। তাহলে মাঝখানের অতি উৎসাহী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে ভীতি সঞ্চারের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু ছিল?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবসের একদিন আগে গণভবনে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যের বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। হয়তো টাঙ্গাইলের সখীপুরের সেই স্কুলের শিক্ষকরা তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একদিন আগেই শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বই দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি এর জন্য তাদের এতটা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হবে। ১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বই উৎসব দিবস শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। টাঙ্গাইলের সখীপুরের সেই স্কুলের ঘটনা নিশ্চয়ই এই পরিকল্পনায় বড় কোনো আঁচড় কাটেনি! কিন্তু পুলিশ বাহিনী অতি উৎসাহী হয়ে তাদের গ্রেফতার করে ভীতির সঞ্চার করেছে। গ্রেফতারের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনে 'অভিপ্রায়' বা উদ্দেশ্যকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে 'মেনস রিয়া'কে যুক্ত করে বিবেচনায় নেওয়া হয়। সখীপুরের স্কুলের ঘটনায় খারাপ কোনো অভিপ্রায় ছিল বলে মনে হয় না। হয়তো শিক্ষার্থীদের আগ্রহে শিক্ষকরা নতুন বই দিয়েছেন। সেটা এমন বড় কোনো অপরাধ হয়ে যায়নি যে শিক্ষকদের গ্রেফতার করে থানায় আটক করে রাখতে হবে।
আলেকজান্ডারের সেই 'সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ' মনে হয় আমাদের জন্যও প্রযোজ্য। এখানে অনেক বড় বড় অপরাধের শাস্তি হয় না, অথচ সুযোগ পেলেই স্বল্পমাত্রার দোষে কাউকে কাউকে গ্রেফতার করে রাখা হয়। এই যে শিক্ষকদের গ্রেফতার করা হলো, এতে করে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের হেয় করা হয়েছে। এখন শ্রেণীকক্ষেও শিক্ষকরা মর্মবেদনায় ভুগবেন। আশার কথা, ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ বাহিনীর বোধোদয় হয়েছে। স্থানীয় জনগণের দাবির মুখে গ্রেফতারকৃত শিক্ষকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবসের সঙ্গে আনন্দের যোগ হয়েছে। এ বছর ২৬ কোটি ১৮ লাখের বেশি বই দেওয়া হয়েছে। ১৭ বছর পরে শিক্ষার্থীরা পেয়েছে নতুন পাঠ্যক্রম। পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সময় স্কুলে স্কুলে তৈরি হয় আনন্দের উৎসব। কিন্তু সখীপুরের সেই স্কুলের শিক্ষার্থীদের এই আনন্দ তেমনভাবে স্পর্শ করেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে বিষয়টিকে অন্যভাবেও সমাধান করতে পারত। সেখানে শিক্ষক গ্রেফতারের কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। কিন্তু কে বোঝাবে কাকে! আমাদের এখানে তো অতি উৎসাহী মানুষের অভাব নেই!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবসের একদিন আগে গণভবনে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়ে বিনামূল্যের বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন। হয়তো টাঙ্গাইলের সখীপুরের সেই স্কুলের শিক্ষকরা তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একদিন আগেই শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বই দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি এর জন্য তাদের এতটা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হবে। ১ জানুয়ারি সকাল ১১টায় শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে বই উৎসব দিবস শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। টাঙ্গাইলের সখীপুরের সেই স্কুলের ঘটনা নিশ্চয়ই এই পরিকল্পনায় বড় কোনো আঁচড় কাটেনি! কিন্তু পুলিশ বাহিনী অতি উৎসাহী হয়ে তাদের গ্রেফতার করে ভীতির সঞ্চার করেছে। গ্রেফতারের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, ওই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনে 'অভিপ্রায়' বা উদ্দেশ্যকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে 'মেনস রিয়া'কে যুক্ত করে বিবেচনায় নেওয়া হয়। সখীপুরের স্কুলের ঘটনায় খারাপ কোনো অভিপ্রায় ছিল বলে মনে হয় না। হয়তো শিক্ষার্থীদের আগ্রহে শিক্ষকরা নতুন বই দিয়েছেন। সেটা এমন বড় কোনো অপরাধ হয়ে যায়নি যে শিক্ষকদের গ্রেফতার করে থানায় আটক করে রাখতে হবে।
আলেকজান্ডারের সেই 'সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ' মনে হয় আমাদের জন্যও প্রযোজ্য। এখানে অনেক বড় বড় অপরাধের শাস্তি হয় না, অথচ সুযোগ পেলেই স্বল্পমাত্রার দোষে কাউকে কাউকে গ্রেফতার করে রাখা হয়। এই যে শিক্ষকদের গ্রেফতার করা হলো, এতে করে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের হেয় করা হয়েছে। এখন শ্রেণীকক্ষেও শিক্ষকরা মর্মবেদনায় ভুগবেন। আশার কথা, ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ বাহিনীর বোধোদয় হয়েছে। স্থানীয় জনগণের দাবির মুখে গ্রেফতারকৃত শিক্ষকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পাঠ্যপুস্তক উৎসব দিবসের সঙ্গে আনন্দের যোগ হয়েছে। এ বছর ২৬ কোটি ১৮ লাখের বেশি বই দেওয়া হয়েছে। ১৭ বছর পরে শিক্ষার্থীরা পেয়েছে নতুন পাঠ্যক্রম। পাঠ্যপুস্তক বিতরণের সময় স্কুলে স্কুলে তৈরি হয় আনন্দের উৎসব। কিন্তু সখীপুরের সেই স্কুলের শিক্ষার্থীদের এই আনন্দ তেমনভাবে স্পর্শ করেনি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে বিষয়টিকে অন্যভাবেও সমাধান করতে পারত। সেখানে শিক্ষক গ্রেফতারের কোনো প্রয়োজনীয়তা ছিল না। কিন্তু কে বোঝাবে কাকে! আমাদের এখানে তো অতি উৎসাহী মানুষের অভাব নেই!
No comments