আগামীর তারকা সাবিনে লিসিস্কি by মোঃ রায়হান কবির
বছরের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট ‘অস্ট্রেলিয়ান ওপেন’ শুরুর আগে যে কয়েকটি গা-গরমের টেনিস আসর অনুষ্ঠিত হয়, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনাল।’ এ আসরে মেয়েদের বিভাগে সোমবার প্রথম রাউন্ডে প্রত্যাশিত জয় কুড়িয়ে নিয়েছেন জার্মানির সাবিনে লিসিস্কি। ৩৭ নম্বর র্যাঙ্কধারী সাবিনে প্রতিপক্ষ চেক প্রজাতন্ত্রের লুসি সাফারোভাকে হারান ৬-২, ৬-৪ গেমে।
এ জয়ে তিনি উন্নীত হন দ্বিতীয় রাউন্ডে। ম্যাচের শুরু থেকেই প্রাধান্য বিস্তার করে খেলার চেষ্টা করেন সাবিনে। তাতে তিনি সফল, সেটা পরিষ্কার স্কোরলাইনেই। সাবিনে ভাসিলিয়েভনা ক্যাথারিনা লিসিস্কি। জার্মানির এই উদীয়মান তরুণী টেনিস খেলোয়াড় সর্বশেষ শিরোপা জিতেছেন ২০১১ সালের ২৭ আগস্ট। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে অনুষ্ঠিত ‘টেক্সাস টেনিস ওপেন’-এর ফাইনালে ফ্রান্সের আরাভানে রেজাইকে পরাভূত করে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডব্লিউটিএ টাইটেল জিতে নেন। এর আগে ওই বছরের ১৩ জুন লন্ডনের বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত ‘এয়িগন ক্লাসিক’-এর শিরোপা করায়ত্ত করেন। ফাইনালে হারিয়ে দেন সেøাভাকিয়ার প্রতিপক্ষ দানিয়েলা হান্তুচোভাকে (এছাড়াও দুটি আইটিএফ শিরোপাও জিতেছেন তিনি)। পেশাদার টেনিসে প্রবেশ করেন ২০০৬ সালে। তখন তাঁর বয়স ১৬। ৫ ফুট ১০ ইঞ্চির অধিকারী সাবিনের খেলার ধরন হচ্ছে ডানহাতি (দু’হাতে ব্যাকহ্যান্ড)। যখন তাঁর বয়স ৭, তখন টেনিসে হাতেখড়ি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত টেনিস একাডেমী ‘নিক বলতেয়েরি’তে টেনিস প্রশিক্ষণ নেন তিনি। ২০০৮ সালে স্বীয় নৈপুণ্যগুণে তিনি টেনিসবিশ্বের নজরে আসেন। সেবার একটি ডব্লিউটিএ আসরে একে একে হারান লিন্ডসে ড্যাভেনপোর্ট, আনা চাকভেতাজ ও দিনারা সাফিনার মতো ডাকসাইটে খেলোয়াড়দের। এ টুর্নামেন্ট শেষ হতেই র্যাঙ্কিংয়ের ২৩৭ নম্বর থেকে এক লাফে ৫৪ নম্বরে উন্নীত হন। ২০০৯ সালে চার্লেস্টন ওপেনে ক্যারোলিন ওজনিয়াকিকে হারিয়ে শিরোপা জিতে আবারও আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এ আসরের সর্বকনিষ্ঠ শিরোপাধারীতে পরিণত হন। তাঁর এ সাফল্যে জার্মান টিনেজারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। তারা আগ্রহী হয়ে ওঠে টেনিসে। চার্লেস্টন ওপেনের পরের সপ্তাহেই তিনি ভেনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে আবারও অঘটন ঘটান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৯। কোচ হিসেবে রেখেছেন বাবা রিচার্ড লিসিস্কিকে। ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার গতিতে সার্ভ করে সাবিনে এখন অনেক বাঘা বাঘা খেলোয়াড়কেই নাস্তানাবুদ করে চলেছেন। আদর্শ খেলোয়াড় হিসেবে মানেন স্বদেশী স্টেফি গ্রাফকে। ক্যারিয়ারের স্বার্থে এখন পরিবারের সঙ্গে বাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাডেন্টন, ফ্লোরিডায়। তাঁর পরিবার হচ্ছে পোলিশ ইমিগ্রান্ট। স্টেফি গ্রাফের বিদায়ের পর আর কোন জার্মান তরুণী সেভাবে টেনিসবিশ্ব মাতাতে পারছেন না। জুলিয়া জর্জেস, আন্দ্রেয়া পেতকোভিচ, ক্রিস্টিনা ব্যারোয়িস, এঞ্জোলিকো কারবাররা আছেন। কিন্তু এদের বয়স লিসিস্কির চেয়ে বেশি। গ্রাফের পর্যায়ে যেতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে তাঁকে। তবে সে সামর্থ্য তাঁর আছে বলেই দৃঢ় বিশ্বাস করেন জার্মানরা। এখন দেখার বিষয়, ভবিষ্যতে কোন্ পর্যায়ে উপনীত হতে পারেন সাবিনে। তবে তার আগে জিততে চান ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনালের শিরোপা।
No comments