'আহ্ কী যে গন্ধ!'
'বুবু, এই যে আমার নতুন বই। আমার আর চিন্তা নাই, আইজ থাইক্যাই পড়তে পারমু।' নতুন বই হাতে পাওয়ার পর দৌড়ে বড় বোনের কাছে ছুটে এসে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানায় শিশু রাতুল হাসান। সে গাজীপুরের পশ্চিম চন্দনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠেছে এবার।
'এই দ্যাখ, কত সুন্দর বই, কত সুন্দর ছবি। আর কী সুন্দর গন্ধ! খুব ভালো লাগছে।' বলছিল আরেক শিশু, রাজধানীর কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে বই হাতে পাওয়ার পর।
গতকাল মঙ্গলবার বছরের প্রথম দিন এভাবেই বই উৎসবে মেতেছিল ঢাকা, গাজীপুরসহ সারা দেশের শিশুরা। গতকাল মঙ্গলবার বই (পাঠ্যপুস্তক) উৎসব দিবসে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয় পাঠ্য বই। সকাল থেকেই সারা দেশের স্কুল-মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় জমে যায় সরকারিভাবে বিতরণ করা নতুন বই নিতে।
এ বছর প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের তিন কোটি ৬৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৭২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৬ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ১০৬টি বই বিনা মূল্যে বিতরণ করছে সরকার।
বই উৎসবের অনুষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজন করে পৃথকভাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানটি ছিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গুলশানের কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাজীপুরের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ অন্য অতিথিরা আসার সঙ্গে সঙ্গে স্কাউটের একটি সুসজ্জিত বাদক দল তাঁদের 'গার্ড অব অনার' দিয়ে নিয়ে যায় জাতীয় পতাকার রঙে সাজানো মূল মঞ্চে। অতিথিদের পরিয়ে দেওয়া হয় লাল-সবুজ কাপড়ের উত্তরীয়।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলে দেখা গেল দৃষ্টিনন্দন লাল-সবুজ মঞ্চের সামনে স্কুল পোশাকে বসা কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। সবার হাতে নতুন রঙিন বই। বাম হাতের কবজিতে বাঁধা সবুজ ফিতা, ডান হাতে ছোট্ট লাল পতাকা।
বই নববর্ষের উপহার : বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্য বই তুলে দিতে পারাকে নববর্ষের বিশেষ উপহার হিসেবে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বই বিতরণের সময় বলেন, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. নোমান উর রশীদ বলেন, ৬৮ হাজার গ্রামের ১৬ কোটি মানুষ এই উৎসবে অংশ নিয়েছে। এ জন্যই উৎসবটি সর্বজনীন।
রাশেদ খান মেনন এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'এ রকম অসাধারণ দিন আমাদের ছাত্রজীবনে পাইনি। কাজেই এ উৎসবকে বহুমাত্রিক মাত্রা দিয়ে নতুন জায়গায় পৌঁছাতে চাই।' তিনি আরো বলেন, 'জীবন এত সুন্দর, জীবন এত নান্দনিক- বই উৎসব না হলে বুঝতেই পারতাম না।' তিনি বলেন, 'নতুন বইয়ের ঘ্রাণে, নতুন বইয়ের মলাটে- জেগে উঠব আমরা।'
শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন স্বরচিত কবিতা। এর এক অংশে তিনি বলেন, 'আজ আমাদের কোটি কোটি হাতে আঁধার বিনাশী গ্রন্থ/আমরা সবাই বাংলার মাটি পতাকার জয়মন্ত্র।'
শিক্ষাসচিবের সভাপতিত্বে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের মূল অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তফা কামাল উদ্দিন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মোসলেহ উদ্দিন ভূঞা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শেখ আবরার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলে, 'নতুন বই পেয়েছি, এবার অনেক বেশি পড়ব এবং সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফল করব।'
এর আগে সকাল ৯টায় গুলশানের কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেল শত শত শিক্ষার্থী 'নীল ও সাদা পোশাকে শান্তির প্রতীক' হয়ে বসে আছে খেলার মাঠে। তারা সবাই পাঠ্য বইয়ের অপেক্ষায়। সকাল সাড়ে ৯টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. মো. আফসারুল আমিনসহ অন্য অতিথিরা কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বলেন, 'তোমরা প্রস্তুত হও, এই বাংলাদেশকে তোমরাই পরিবর্তন করবে।'
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বই দেওয়ার জন্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমিন স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে টঙ্গীর আ&
গতকাল মঙ্গলবার বছরের প্রথম দিন এভাবেই বই উৎসবে মেতেছিল ঢাকা, গাজীপুরসহ সারা দেশের শিশুরা। গতকাল মঙ্গলবার বই (পাঠ্যপুস্তক) উৎসব দিবসে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা মূল্যে বিতরণ করা হয় পাঠ্য বই। সকাল থেকেই সারা দেশের স্কুল-মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় জমে যায় সরকারিভাবে বিতরণ করা নতুন বই নিতে।
এ বছর প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের তিন কোটি ৬৮ লাখ ৮৬ হাজার ১৭২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৬ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ১০৬টি বই বিনা মূল্যে বিতরণ করছে সরকার।
বই উৎসবের অনুষ্ঠান শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজন করে পৃথকভাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানটি ছিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গুলশানের কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গাজীপুরের পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ অন্য অতিথিরা আসার সঙ্গে সঙ্গে স্কাউটের একটি সুসজ্জিত বাদক দল তাঁদের 'গার্ড অব অনার' দিয়ে নিয়ে যায় জাতীয় পতাকার রঙে সাজানো মূল মঞ্চে। অতিথিদের পরিয়ে দেওয়া হয় লাল-সবুজ কাপড়ের উত্তরীয়।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলে দেখা গেল দৃষ্টিনন্দন লাল-সবুজ মঞ্চের সামনে স্কুল পোশাকে বসা কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। সবার হাতে নতুন রঙিন বই। বাম হাতের কবজিতে বাঁধা সবুজ ফিতা, ডান হাতে ছোট্ট লাল পতাকা।
বই নববর্ষের উপহার : বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্য বই তুলে দিতে পারাকে নববর্ষের বিশেষ উপহার হিসেবে উল্লেখ করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বই বিতরণের সময় বলেন, বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানো শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. নোমান উর রশীদ বলেন, ৬৮ হাজার গ্রামের ১৬ কোটি মানুষ এই উৎসবে অংশ নিয়েছে। এ জন্যই উৎসবটি সর্বজনীন।
রাশেদ খান মেনন এমপি তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'এ রকম অসাধারণ দিন আমাদের ছাত্রজীবনে পাইনি। কাজেই এ উৎসবকে বহুমাত্রিক মাত্রা দিয়ে নতুন জায়গায় পৌঁছাতে চাই।' তিনি আরো বলেন, 'জীবন এত সুন্দর, জীবন এত নান্দনিক- বই উৎসব না হলে বুঝতেই পারতাম না।' তিনি বলেন, 'নতুন বইয়ের ঘ্রাণে, নতুন বইয়ের মলাটে- জেগে উঠব আমরা।'
শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন স্বরচিত কবিতা। এর এক অংশে তিনি বলেন, 'আজ আমাদের কোটি কোটি হাতে আঁধার বিনাশী গ্রন্থ/আমরা সবাই বাংলার মাটি পতাকার জয়মন্ত্র।'
শিক্ষাসচিবের সভাপতিত্বে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের মূল অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তফা কামাল উদ্দিন, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মোসলেহ উদ্দিন ভূঞা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শেখ আবরার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলে, 'নতুন বই পেয়েছি, এবার অনেক বেশি পড়ব এবং সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফল করব।'
এর আগে সকাল ৯টায় গুলশানের কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেল শত শত শিক্ষার্থী 'নীল ও সাদা পোশাকে শান্তির প্রতীক' হয়ে বসে আছে খেলার মাঠে। তারা সবাই পাঠ্য বইয়ের অপেক্ষায়। সকাল সাড়ে ৯টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. মো. আফসারুল আমিনসহ অন্য অতিথিরা কালাচাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বলেন, 'তোমরা প্রস্তুত হও, এই বাংলাদেশকে তোমরাই পরিবর্তন করবে।'
মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে বই দেওয়ার জন্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমিন স্থানীয় বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আছে টঙ্গীর আ&
No comments