সংসদে এসে কথা বলুন
রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান সংসদ বর্জন, সংঘাত ও নৈরাজ্যের পথ পরিহারের জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “আপনাদের যাবতীয় অভিযোগ, প্রস্তাব, সুপারিশ ও মতামত সংসদের ভেতরে এসে বলুন এবং গণতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করুন।
” রাষ্ট্রপতি রবিবার নবম জাতীয় সংসদের ১৬তম উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন। তাঁর এ বক্তব্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাঁদের ন্যূনতম বিশ্বাস রয়েছে, তাঁরা কেউই রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করবেন না। বস্তুত সংসদীয় গণতন্ত্রে কারও পক্ষেই সংসদকে পাশ কাটিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। সংসদকে কার্যকর করতে সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে বিরোধীদলীয় নেত্রী ও তাঁর দলীয় সাংসদরা সংসদের অধিবেশনে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকছেন। সংসদ যে বিষয়ে সমাধান দিতে পারে- সেখানে না গিয়ে বিরোধী দল হরতাল, ধর্মঘট ও ভাংচুরের মাধ্যমে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ। রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে বলেছেন, “আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে ও সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আগামীতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সংসদীয় নির্বাচন দিতে সক্ষম হব।”বস্তুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা অপরিসীম। গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে আসছে বিরোধী দল। সেনা সমর্থিত অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সেই ভয়াবহ দুঃশাসনের দিনগুলো মানুষ ভুলেনি। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছিল দেশকে রাজনীতি শূন্য করতে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বদলে স্বৈরশাসন কায়েম করতে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশে দুই প্রধান নেত্রী ও রাজনীতিকরা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। তাই প্রধান বিরোধী দল বিএনপির উচিত প্রতিটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসা। সুস্থ রাজনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখতে হলে আলোচনার কোন বিকল্প নেই। দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে; তা না হলে গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে। তখন ক্ষতি হবে সবার।
No comments