একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার ষড়যন্ত্র করছে- বিজয়মঞ্চে মতিয়া চৌধুরী
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে আবারও ক্ষমতায় যাবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি প্রায় সবই সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছে এই সরকার।
এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করতে পারলে বাংলার জনগণ আবার তাদের পূর্ণ সমর্থন দেবে।মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত আওয়ামী লীগের ‘বিজয় মঞ্চে’ এমনই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন দলের নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি মোঃ মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এ্যাডভোকেট মোঃ রহমত আলী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, যেখানে সারাবিশ্ব খাদ্য ঘাটতিতে ভুগছে সেখানে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। যেখানে তারা বিশ্বের কাছে খাদ্যের জন্য সাহায্য প্রার্থনা করত সেখানে আজ তারা খাদ্য রপ্তানির স্বপ্ন দেখছে।তিনি বলেন, আজ যখন বিজয়ের ৪১ বছর পূরণ করে আমরা ৪২ বছরে পা রেখেছি তখন দেখছি একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তিরা আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হঠাৎ করে তো করছি না। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আর তাদের চাপেই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছি।
তিনি বলেন, এক কোটিরও বেশি তরুণ ও নবীন ভোটার, বাংলার যুবসমাজ, কৃষক-শ্রমিক সবাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে আমাদের ভোট দিয়েছে। তাদের অনেকেই হয়তো মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি। কিন্তু সে যুদ্ধের ইতিহাস তারা জেনেছে। তারা চায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার হয়ে বাংলার মানুষ কলঙ্কমুক্ত হোক।
মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, শেখ হাসিনা তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পন্ন করেছেন, সে বিচারের রায়ও কার্যকর করেছেন। জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারও শেষ প্রান্তে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি সম্পন্ন করতে না পারেন তবে বাংলার জনগণ তাঁকে প্রশ্ন করবে, তুমি তোমার পিতার হত্যার বিচার করেছ, কিন্তু আমার পিতা, আমার ভাই হত্যার বিচার কই? আমার মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিচার কই?
তিনি বলেন, জনগণের সে চাপের কথা চিন্তা করেই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে যাব। পাকিস্তানের কিংবা অন্য কোন বিদেশী রাষ্ট্রের মদদ নিয়ে কেউ এ বিচার বানচাল করতে পারবে না।
তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, তাঁরা নাকি ক্ষমতায় আসলে দেশকে সম্পূর্ণ বদলে দেবে। বদলে তারা দিতেই পারে, তবে কোন দিকে হবে তা বড় প্রশ্ন। আমরা খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেখে যাচ্ছি, তারা এসে এসব শেষ করবে। আমরা বিদ্যুত রেখে যাচ্ছি, তারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে দেবে, আমরা দুর্নীতি কমিয়ে যাচ্ছি আর তারা এসে দেশকে আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করবে। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করে যাচ্ছি, তারা নিজেরা যেমন অশিক্ষিত তেমনি দেশকেও অশিক্ষায় নিমজ্জিত করবে। আমরা বই দিয়ে যাচ্ছি তারা সেসব পুড়াবে। তিনি খালেদা জিয়াকে ধোঁকাবাজি, অত্যাচার, নিপীড়ন আর শোষণের রাজনীতির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত একটি মিথ্যাবাদী দল। তারা ইতিহাসকে বিকৃত করে তা প্রমাণ করেছে। জামায়াত শিবির তাদের মরণ কামড় দেয়ার জন্য এখন মাঠে নেমেছে। তাদের লোকবল আছে, অঢেল আর্থিক ক্ষমতা আছে। তাদের এখন শুধু সেøাগান দিয়ে পরাজিত করা যাবে না। তাদের জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় রাজপথে পরাজিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সামনে এখন মাত্র দুটি কাজ বাকি। এক. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা আর দুই. আগামী নির্বাচনে জয়লাভের প্রস্তুতি নেয়া। এই চার বছরে কি করলাম আর কি হারালাম তা হিসেব করার সময় এখন নয়। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন, আগামী বিজয়ের পর আমরা ধীরে সুস্থে আমাদের হিসেব বুঝিয়ে দেব।
No comments