দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে নির্ধারিত সময়ের আগেই- টানা দু’বছর ধরে বাজার স্থিতিশীল by তপন বিশ্বাস
নির্বাচনী ইশতেহারের প্রধান অঙ্গীকার ইতোমধ্যে পূরণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। অঙ্গীকারের নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। টানা প্রায় দুই বছর ধরে বাজার রয়েছে স্থিতিশীল।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা দীর্ঘমেয়াদী অঙ্গীকারও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অপর অঙ্গীকারটি ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ মানুষের পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত করার কার্যক্রমও এগিয়ে চলেছে। এ বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী ড. অবদুর রাজ্জাক জনকণ্ঠকে বলেন, ইতোমধ্যে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। পুষ্টিতেও অনতিবিলম্বে সাফল্য লাভ করব। নির্বাচনী অঙ্গীকার ছাড়াও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পরিকল্পিত কার্যক্রম পরিচালনা করায় ‘আইলা’র মতো প্রকৃতিক দুর্যোগও সহজে মোকাবেলা করেছে সরকার। মহাজোট সরকারের যাত্রার শুরুতে ২০০৯ সালে এই ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত করলে তখন বিরোধী দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, উপদ্রুত এলাকার মানুষ এবার না খেয়ে মরবে। কিন্তু সরকারের বলিষ্ঠ হস্তক্ষেপে তারা নিরাপদে থেকে শীঘ্রই এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে।খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকার খাদ্য নিরাপত্তামূলক নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে দেশের খাদ্য চাহিদা বেড়েই চলেছে। অপরদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের মাত্রা ও তীব্রতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ে তোলা এবং জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সরকার নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ে তুলেছে এবং জনগণের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছে। বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের মূল্য অস্থিরতা ও প্রয়োজনীয় সময়ে খাদ্যশস্যের সরবরাহ পাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সরকার দেশীয় উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কৌশল গ্রহণ করে। এ কৌশল গ্রহণ করায় ধারাবাহিকভাবে গত প্রায় তিন বছর দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গত অর্থবছর এবং চলতি অর্থবছরে সরকারকে চাল আমদানি করতে হয়নি। কিন্তু চাহিদার তুলনায় দেশে গমের উৎপাদন কম হওয়ায় শুধু প্রয়োজনীয় গম আমদানি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খোলাবাজারে চাল বিক্রি বা ওএমএস কর্মসূচী গ্রহণ করে। বিগত চার বছর সরকার স্বল্পমূল্যে খোলাবাজারে মোট ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৯ টন চাল বিতরণ করেছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকেই ওএমএস কর্মসূচী শুরু করা হয়। এ কর্মসূচীর আওতায় ২০০৮-৯ অর্থবছরে এক লাখ ৯৪ হাজার ৪৫৪ টন চাল বিক্রি করা হয়। ২০০৯-১০ অর্থবছরে সরকার সুলভমূল্য কার্ড চালু করে এবং তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্যও সুলভমূল্যে চাল বিতরণ কর্মসূচী গ্রহণ করে। ওএমএস, সুলভমূল্যকার্ড এবং তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের মধ্যে ২০০৯-১০ অর্থবছরে তিন লাখ আট হাজার ৫৬৯ টন চাল বিতরণ করা হয়। ২০১০-১১ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১১ লাখ ৮৫ হাজার ২৪৪ টন এবং ২০১১-১২ অর্থবছরে পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৮৭৮ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। সুলভমূল্য কার্ডের মাধ্যমে মহানগর, জেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রায় ৮২ লাখ স্বল্পআয়ের পরিবার এবং ৪র্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের মাঝে প্রতিমাসে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্যশস্য (চাল-গম) বিতরণ করা হচ্ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরের ২২ নবেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ২০ হাজার ৯০১ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে।
আটার বাজর উর্ধমুখী হওয়ায় সরকার গুদামে মজুদকৃত গম মিলারদের মাধ্যমে আটা তৈরি করে খোলাবাজারে বিক্রির কার্যক্রম গ্রহণ করে। মহানগর ও জেলা পর্যায়ের আটা ও ময়দাকলের নামে দুই লাখ ৬০ হাজার ১১৩ টন গম বরাদ্দ করে ফলিত আটা নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিকেজি আটার দাম ২০ টাকা। এ কর্মসূচীর মাধ্যমে নিম্নআয়ের জনগণ উন্নতমানের আটা কেনার সুযোগ পেয়েছে এবং বাজারে আটার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রয়েছে। এ কর্মসূচীতে ২০১০-১১ অর্থবছরে ৩৭ হাজার ৮৯০ টন, ২০১১-১২ অর্থবছরে ২২ হাজার ২২৩ টন এবং ২০১২-১৩ অর্থবছরের ২২ নবেম্বর পর্যন্ত ৮৯ হাজার ৭৩০ টন আটা বিক্রি করা হয়েছে। এ কর্মসূচীতে প্রতিকেজি আটা ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে বাজারে আটার মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে। একইসঙ্গে খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে শক্তিশালী করা হয়েছে। ফলে দেশে সকল শ্রেণীর জনগণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যশস্যের সরবরাহ ও প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণীর সরকারী কর্মচারী, গ্রাম পুলিশ বাহিনীর (চৌকিদার) সদস্য এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের মোট এক লাখ ৪৪ হাজার ৫৫৮টি পরিবার এ কর্মসূচীর আওতায় স্বল্পমূল্যে চাল পেয়েছে। এ কর্মসূচীতে মোট এক লাখ এক হাজার ৫০৬ টন চাল বিক্রি করা হয়েছে। ফলে নিম্নআয়ের সরকারী কর্মচারী এবং শ্রমজীবী গার্মেন্টস কর্মচারীদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটানো চ্যলেঞ্জিং হলেও অনতি বিলম্বে আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারব। তিনি বলেন, মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে দেশে দানা জাতীয় খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। বিভিন্ন ফলও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে। চাষের মাধ্যমে উৎপাদিত বিভিন্ন মাছ বাজারে স্বল্পমূল্যে সহজলভ্য। পর্যাপ্ত পরিমাণ মুরগিও বাজারে রয়েছে। এ গুলো দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটাচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদনে উপকরণ সহজলভ্য করে সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এ পর্যন্ত আমন ও বোরো মৌসুমসমূহে মোট সংগৃহীত চালের পরিমাণ ৪১ লাখ আট হাজার ৩৮২ টন। চাহিদার তুলনায় গমের উৎপাদন কমে যাওয়া সত্ত্বে অভ্যন্তরীণ উৎসকে অগ্রাধিকার এবং কৃষকদের সহায়ক মূল্য প্রদানের লক্ষ্যে এক লাখ ৮০ হাজার ৪৫৮ টন গম সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বাজার হতে গত চার বছরে ১৭ লাখ ৬৬ হাজার ১৩৭টন চাল এবং ১৯ লাখ ৭২ হাজার ৫২১ টন গম আমদানি করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাবছর খাদ্যশস্যের পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিতকরণ করেছে সরকার। নিরাপদ খাদ্যমজুদ হিসেবে সরকারী গুদামে সর্বক্ষণিক প্রায় ১০ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ থাকার কথা। মজুদকৃত এ খাদ্যশস্য সরকারী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থার আওতায় বিভিন্ন মাধ্যমসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা হিসেবেও এ খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়। বর্তমানে সরকারী খাদ্যগুদামে প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।
খাদ্যশস্য সংগ্রহের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী সমঝোতা স্মারক স¦াক্ষর করেছে সরকার। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে যথাক্রমে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৭৮১ টন ও দুই লাখ ১৬ হাজার ৬১১ টন চাল এবং ইউক্রেন থেকে এক লাখ ১৫ হাজার ৩০২টন গম আমদানি করা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে প্রয়োজনীয় সময়ে খাদ্যশস্য আমদানির সুযোগ নিশ্চিত হয়েছে।
বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণকালে দেশে সরকারী খাদ্যগুদামের ধারণক্ষমতা ছিল ১৪ লাখ টন। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ টন। আগামী জুন মাসের মধ্যে আরও দুই লাখ টন ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ে তোলার জন্য ১৪ লাখ টন ধারণক্ষমতা যথেষ্ট না হওয়ায় সরকার পুরনো ও ব্যবহার অনুপযোগী গুদাম মেরামত ও নতুন নতুন খাদ্যগুদাম নির্মাণ করার উদ্যোগ নেয়। নিম্নে নতুন গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো। ধারণক্ষমতা বাড়াতে দেশের বিভিন্ন এলকায় নতুন খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে (রাজশাহী বিভাগে) ১৫টি জেলায় এক লাখ ১০ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ১৪০টি খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২৪১ কোটি টাকা। এ প্রকল্পটি জুন ২০১২ তারিখে শেষ হয়েছে। এর পাাশাপাশি পুরনো খাদ্যগুদামও সংস্কার করেছে মহাজোট সরকার। বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের ১৫৮টি জরাজীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত খাদ্যগুদাম পুনর্নির্মাণ ও মেরামত করা হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি জুন ২০১১-এ শেষ হয়েছে। এর ফলে ১০ হাজার টন অব্যবহারযোগ্য খাদ্যগুদাম ব্যবহার উপযোগী হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে মোট ৯৪ হাজার টন ধারণক্ষমতা বেড়েছে।
চলমান কার্যক্রমের মধ্যে বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলায় জয়মনিরঘোলে ৫০ হাজার টন ধারণক্ষমতার কনক্রিট গ্রেইন সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। প্রকল্পের জন্য ৪২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চট্টগ্রামের হালিশহর সিএসডি এলাকায় ৮৪ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার ৯১টি খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৮ কোটি ৭১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ৯১টি খাদ্যগুদামের মধ্যে ৭৭টি এক হাজার টন ও ১৪টি ৫০০ টন ধারণ ক্ষমতার গুদাম। ইতোমধ্যে ৭৫টি গুদামের ছাঁদ ঢালাই শেষ হয়েছে। চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এ প্রকল্পের অগ্রগতির হার শতকরা ৫৩ ভাগ। অপর একটি প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে আরও এক লাখ ৩৫ হাজার টন ধারণক্ষমতার ১৭০টি নতুন খাদ্যগুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮৩ কোটি এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। প্রকল্পের অগ্রগতির হার শতকরা ৭৩ ভাগ। পোস্তগোলায় একটি আধুনিক ময়দা মিল স্থাপন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩০ কোটি ১৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। প্রকল্পটি ৮ মে ২০১২ তারিখ একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের পরামর্শক সংস্থা নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন আছে।
বগুড়ার সান্তাহারে ২৫ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার মাল্টিস্টোরেজ ওয়্যারহাউস নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২৮ আগস্ট ২০১২ তারিখে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। জানুয়ারি ২০১২ তারিখে জাইকা পরামর্শক সংস্থা নিয়োগ করে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের কাজ ৩০ জুন ২০১৫-এর মধ্যে শেষ হবে।
পাবলিক ফুড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম অটোমেশন করতে একটি পাইলট প্রকল্প নেয়া হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে দুই কোটি ১৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। ইতোমধ্যেই টাঙ্গাইল জেলার সব ক’টি উপজেলাকে ঢাকার আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতরের কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম সাইলো চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক, চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি খাদ্য অফিস এবং খাদ্য অধিদফতরের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগের জন্য ডিজিটাল নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকা আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, চট্টগ্রাম সাইলো, চট্টগ্রাম বন্দর ও টাঙ্গাইল জেলার সব ক’টি এলএসডিকে একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা বিনিয়োগ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালের মধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা বিনিয়োগ পরিকল্পনা (বিসিআইপি) ২০১০ প্রণীত হয়েছে। এ বিনিয়োগ পরিকল্পনায় ২০১৫ সাল পর্যন্ত নয় দশমিক এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে পাঁচ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেছে। অবশিষ্ট ৩.৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রাপ্তির প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। পরিকল্পনাটি ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ পরিকল্পনা গ্রহণের ফলে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী সুফল পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে।
বিসিআইপির আওতায় ১২টি প্রাধিকারভুক্ত কর্মসূচী রয়েছে, যার ৫টি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- টেকসই ও বহুমুখী কৃষি উন্নয়নে গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম, সেচের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন, কৃষি উপকরণের মান বৃদ্ধি ও জমির উর্বরতা সংরক্ষণ, মৎস্য ও পশুসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি।
No comments