আসক্ত বন্ধুদের কাছে যাওয়া যাবে না
১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় ধানমন্ডির ডব্লিউভিএ মিলনায়তনে পরামর্শ সহায়তা ৩৩-এর আসর অনুষ্ঠিত হয়। আসরে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মনোরোগ চিকিৎসক আহমেদ হেলাল, মেখলা সরকার, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সহকারী পরিচালক ইকবাল মাসুদ ও মনোরোগ চিকিৎসক ফারজানা রহমান।
মনোরোগ চিকিৎসক আহমেদ হেলাল সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, মাদকাসক্ত একটা কঠিন রোগ। এটা কখনো ভালো হয় না। তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েন। হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের জন্য এখন বিজ্ঞানভিত্তিক চিকিৎসা রয়েছে। অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, সঠিক পরিচর্যা এবং সময় নিয়ে চিকিৎসা করলে তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে। আমি বলব, আশাহত হবেন না। আপনাদের সন্তান, নিকটজন যে-ই হোন না কেন, তাকে উপযুক্ত চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসুন। সে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে।’
প্রশ্ন: আমি একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিলাম। সেখানকার চিকিৎসার পদ্ধতি খারাপ। এ জন্য বেশি দিন চিকিৎসা নিতে পারিনি। এখন আমার করণীয় কী?
উত্তর: এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। কিছু কিছু নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদারির অভাব রয়েছে। সব নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদার চিকিৎসক নেই। আবার অনেকে ব্যবসায়িক মানসিকতা নিয়ে নিরাময়কেন্দ্র দিয়েছেন। যে কারণে রোগীরা অনেক সময় প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। সব রোগীর জন্য চিকিৎসা-পদ্ধতি সমান নয়। প্রত্যেক রোগীর শারীরিক-মানসিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে তার চিকিৎসার পদ্ধতি। প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে হয়। মাদকাসক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কোন নিরাময়কেন্দ্রের চিকিৎসা ভালো না খারাপ, সেটা অভিভাবকদের খোঁজখবর নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য মাদকাসক্ত রোগীদের সঙ্গে সবাইকে যুক্ত করতে হয়। যাতে সবাই দেখে-বুঝে রোগীকে একটি ভালো জায়গায় ভর্তি করাতে পারেন। কারণ, দেশের সব নিরাময়কেন্দ্রের মান সমান নয়। অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, রোগী নিরাময়কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার অবস্থা অগের তুলনায় বেশি খারাপ হয়। এ জন্য নিরাময়কেন্দ্রে রোগী ভর্তি করার আগে তাদের সেবার গুণগত মান যাচাই করে ভর্তি করাতে হবে। তা না হলে অর্থ, সময়—সবই নষ্ট হবে।
প্রশ্ন: আমি একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিলাম। সেখানে খাওয়াদাওয়ার মান খারাপ। পরিবেশ খারাপ। এ বিষয়ে আপনাদের অভিমত কী?
উত্তর: মাদকাসক্ত রোগীরা প্রথম দিকে তেমন খেতে পারে না। কারণ, তখন মাদকের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল থাকেন। এ সময় ক্ষুধা কম থাকে। কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা হলে ধীরে ধীরে নির্ভরশীলতা কমে আসে। তখন তাদের ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং বেশি খাবারের প্রয়োজন হয়। কোনো নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদার চিকিৎসক না থাকলে তাঁরা এ বিষয়গুলো ধরতে পারেন না। ফলে ভারসাম্য খাবারের অভাবে দুর্বলতা তৈরি হতে পারে।
অভিভাবকদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মাদকাসক্ত রোগীদের অনেক দুর্ভোগ হয়। যেমন অভিভাবকেরা তাড়াহুড়ো করে হাতের কাছে যেখানে পান, সেখানে ভর্তি করান। ফলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপের দিকে চলে যায়। এ জন্য মাদকাসক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হয়। যাতে সবাই খোঁজখবর নিয়ে একটি ভালো জায়গায় ভর্তি করাতে পারেন। কারণ, দেশে অনেক নিরাময়কেন্দ্র আছে। সব নিরাময়কেন্দ্রের চিকিৎসার মান সমান নয়। কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, নিরাময়কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় রোগীর অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়। এ জন্য অবশ্যই রোগীকে কোথাও ভর্তি করার আগে সেই প্রতিষ্ঠানের সেবার গুণগত মান সম্পর্কে জেনে-শুনে ভর্তি করাতে হবে। অন্যথায় সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
প্রশ্ন: আমরা কীভাবে বুঝব কোন নিরাময়কেন্দ্র ভালো? এ ক্ষেত্রে আপনারাও কোনো দিকনির্দেশনা দেন না।
উত্তর: চেষ্টা করলে নিজেরাই খুঁজে বের করতে পারবেন কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। আমরা প্রায়ই লক্ষ করে থাকি, অভিভাবকেরা খুব একটা খোঁজখবর করেন না। হাতের কাছে যেখানে পান, তাড়াহুড়ো করে সেখানেই ভর্তি করান। একটা বিষয় ভাবতে হবে, মাদকাসক্ত রোগীর ক্ষেত্রে কোনো প্রকার তাড়াহুড়ো করা যাবে না। ঠিকভাবে জেনে-বুঝে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে মাদকের চিকিৎসা হয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ ছাড়া দেশের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে আসতে পারেন। সর্বোপরি যেখানেই আপনার সন্তান, আত্মীয়স্বজন বা নিকটজন, যাকেই চিকিৎসা করান না কেন, জেনেশুনে চিকিৎসা করান। কারও যদি পায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা বা হাত-পা ভেঙে যায় বা যা-ই হোক না কেন, তিনি নিশ্চয়ই খোঁজখবর নিয়ে ভালো জায়গায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। তেমনি মাদকাসক্ত রোগীর বেলায় আরও বেশি খোঁজখবর নেওয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন: আমার সন্তান একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিল। কয়েক মাস চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু সেখানে ভালো হয়নি। সে এখন বাসায় আছে। এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি?
উত্তর: সে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় এসেছে কি না, আমরা জানি না। সব ক্ষেত্রে যে হাসপাতালের সমস্যা তা কিন্তু নয়। রোগীরা অনেক সময় চিকিৎসকদের পরামর্শমতো চলাফেরা করেন না। ঠিকমতো ওষুধ খান না। অধিকংশ রোগীই নিরাময়কেন্দ্রে থাকতে চান না। কারণ, এখানে বাইরের মতো অবাধ ঘোরাফেরা করতে পারে না। মাদক গ্রহণ করতে পারেন না। খারাপ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিশতে পারে না। তারা চায় নিরাময়কেন্দ্রের বাইরে থাকতে। যে কারণে কেন্দ্র সম্পর্কে অভিভাবকদের অনেক মিথ্যা কথা বলে। আর আপনি যে কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করলেন আমাদের জানামতে, এ কেন্দ্রটি দেশে দীর্ঘদিন ধরে ভালো সেবা দিয়ে আসছে। মাদকাসক্ত রোগীরা বারবার ভালো হয়, আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ধৈর্যশীল হতে হয়। নিশ্চয়ই হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় চিকিৎসকেরা তাকে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। চিকিৎসকদের নির্দেশনা ঠিকমতো মেনে চলার ব্যবস্থা করুন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
প্রশ্ন: আমার সন্তান চার মাস নিরাময়কেন্দ্রে ছিল। ভালো হয়ে বাসায় এসেছে। আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছি। কিন্তু কিছুদিন পর লক্ষ করি, সে আবার মাদক গ্রহণ শুরু করেছে। এখন কী করব?
উত্তর: একটা বিষয় বারবার বলে থাকি। নিরাময়কেন্দ্র বা হাসপাতাল থেকে বেরোলেই রোগীর চিকিৎসা শেষ হয় না। অধিকাংশ অভিভাবকেরা মনে করেন, হাসপাতাল থেকে ভালো হয়ে ফিরেছে মানে রোগী সুস্থ হয়েছে। এ ধারণাটি হয়তো অন্য রোগের ক্ষেত্রে ঠিক কিন্তু মাদকাসক্ত রোগীর ক্ষেত্রে মোটেই ঠিক নয়। একজন মাদকাসক্ত রোগীর সম্পূর্ণ ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এই সময়টা তাকে এক ধরনের চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হয়। রোগীকে নিরাময়কেন্দ্রে মাদক দেওয়া হয় না। তা ছাড়া মাদকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। এসব কারণে নিরাময়কেন্দ্রে ভালো থাকে। কিছুদিন নিরাময়কেন্দ্রে রাখলে চিকিৎসা শেষ হয় না। বাইরে মাদক গ্রহণের নানা ধরনের সুযোগ থাকে। নিরাময়কেন্দ্রে এ সুযোগ থাকে না। নিরাময়কেন্দ্রে মাদকমুক্ত থাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রশ্ন: একজন মাদকাসক্ত রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর: এটা নির্ভর করে রোগী কত দিন ধরে মাদক গ্রহণ করছে। তার শারীরিক, মানসিক অবস্থা কোন পর্যায় তার ওপর। কারও সময় কিছু কম লাগে, আবার কারও বেশি। তবে সাধারণত আমাদের দেশে যেসব রোগী দেখা যায়, তাদের সম্পূর্ণ ভালো হতে দুই বছরের মতো সময় লাগে। কিন্তু এখানে শর্ত আছে। চিকিৎসার পর দুই বছরের মধ্যে সে আর মাদক গ্রহণ করতে পারবে না। দুই বছরের মধ্যে যদি মাদক গ্রহণ করে তাহলে তার সময় আরও বেশি লাগবে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি একাধারে দুই বছর মাদক গ্রহণ না করে, তাহলে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করা যায়।
প্রশ্ন: একজন মাদকাসক্ত রোগীকে কি দুই বছর হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে?
উত্তর: না। দুই বছর একটা দীর্ঘ সময়। প্রতিটি হাসপাতালের একটি নিজস্ব চিকিৎসার প্রক্রিয়া আছে। এ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিলে সাধারণত দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোগী মাদকমুক্ত হয়। প্রতিটি হাসপাতালের এক ধরনের খরচও আছে। যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তাঁরা ইচ্ছে করলে বেশি দিন রাখতে পারেন। অনেকের বেশি দিন হাসপাতালের খরচ বহন করার ক্ষমতা থাকে না। তাঁরা রোগীকে বাসায় বা বাড়ি নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু একটা কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে রোগীর চিকিৎসা শেষ হয়ে যায়নি। দুই বছরের মধ্যে চার মাস হাসপাতালে চিকিৎসা হলে অবশিষ্ট ২০ মাস বাসায় বা বাড়িতে চিকিৎসা নিতে হবে। কেউ ছয় মাস থাকলে তিনি বাসায় বা বাড়িতে বাকি ১৮ মাস চিকিৎসা নেবেন। এভাবে চলতে থাকবে।
প্রশ্ন: বাড়িতে কীভাবে চিকিৎসা করবে? এর পদ্ধতি কী?
উত্তর: বাসায় বা বাড়িতে চিকিৎসার পদ্ধতি খুবই সহজ। প্রত্যেক রোগীই একসময় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়। হাসপাতাল থেকে আসার সময় চিকিৎসকেরা তাকে কিছু ওষুধপত্র দেন। কিছু নির্দেশনা দেন। বাসায় বা বাড়িতে আসার পর এ ওষুধগুলো নিয়মিত খেতে হয়। চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। নির্দেশনার মধ্যে একটা বড় বিষয় থাকে নিয়মিত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। দুই বছর ধরে চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারলে এবং ওষুধ খেতে পারলে শতকরা ১০০ ভাগ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগীর চলাফেরা সম্পর্কে চিকিৎসকদের বিশেষ কিছু নির্দেশনা থাকে। যেমন, দুই বছরের মধ্যে তার কাছে টাকা দেওয়া যাবে না। মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। মাদকাসক্ত বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া যাবে না। যেসব জায়গায় মাদক গ্রহণ করত, সেসব জায়গায় যাওয়া যাবে না। মাদকের ছবি দেখা যাবে না। চিনি বা পাউডার সামনে আনা যাবে না।
প্রশ্ন: অনেকে সিগারেট এবং গাঁজাকে ক্ষতিকর মনে করে না। তারা বলে এগুলো খেলে কিছু হয় না। এ ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কী?
পরামর্শ: অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যারা মাদকাসক্ত হয়েছে, তারা প্রায় প্রত্যেকেই ধূমপান দিয়ে নেশা শুরু করেছে। অর্থাৎ ধূমপান করতে গিয়ে একসময় মাদকে জড়িয়ে গেছে। যদি সে ধূমপান না করত, তাহলে মাদক গ্রহণের আশঙ্কা খুব কম থাকত। তা ছাড়া ধূমপানেরই মারাত্মক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশে ৫৭ হাজার মানুষ ধূমপানের কারণে মারা যায়। সে হিসাবে প্রতিদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ১৫৬ জন। কোনো বাবা যদি ধূমপান করেন, তাহলে তাঁর স্ত্রীর ফুসফুসে ক্যানসার হতে পারে। সন্তানের শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ (ব্রঙ্কাইটিস) হতে পারে, সন্তান বিকলাঙ্গ হতে পারে। ধূমপানের উল্লেখযোগ্য কিছু ক্ষতিকর দিক হলো, ফুসফুসে ক্যানসার, মুখে ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ, স্ট্রোক, বিকলাঙ্গ ইত্যাদি। এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মুখের ক্যানসার হয় বাংলাদেশে। এবং সেটা ধূমপানের কারণে হয়। এর পরও ধূমপান করবেন কি না, সিদ্ধান্ত নিন।
গাঁজার মধ্যে ৬০ প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য আছে। ধোঁয়ার মাধ্যমে গাঁজা টানে। গাঁজার ধোঁয়া ফুসফুসে রক্ত এবং মাথার মধ্য দিয়ে কোষে প্রবেশ করে। ৬০ প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যে একটা রাসায়নিক দ্রব্য আছে খুবই ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। এটাকে বলে টিএইচসি (টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনওয়েড)। এটা যদি একবার স্নায়ুকোষের মধ্যে ঢোকে, তাহলে এক বছর থকে এবং বিভিন্নভাবে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে। অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে। ঘুম, আচরণ ও যৌন সমস্যাসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। সন্দেহপ্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে স্ত্রীসহ বাসার মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। স্বামী-স্ত্রীর ডিভোর্সের একটা বড় কারণ গাঁজা সেবন। এ জন্য গাঁজাকে কোনোভাবেই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। বরং এটা অন্য যেকোনো মাদকের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পলা আজিজা।
গ্রন্থণা: আশফাকুজ্জামান
প্রশ্ন: আমি একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিলাম। সেখানকার চিকিৎসার পদ্ধতি খারাপ। এ জন্য বেশি দিন চিকিৎসা নিতে পারিনি। এখন আমার করণীয় কী?
উত্তর: এ রকম অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। কিছু কিছু নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদারির অভাব রয়েছে। সব নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদার চিকিৎসক নেই। আবার অনেকে ব্যবসায়িক মানসিকতা নিয়ে নিরাময়কেন্দ্র দিয়েছেন। যে কারণে রোগীরা অনেক সময় প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। সব রোগীর জন্য চিকিৎসা-পদ্ধতি সমান নয়। প্রত্যেক রোগীর শারীরিক-মানসিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে তার চিকিৎসার পদ্ধতি। প্রত্যেকের জন্য আলাদা আলাদাভাবে পরিকল্পনা করতে হয়। মাদকাসক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। কোন নিরাময়কেন্দ্রের চিকিৎসা ভালো না খারাপ, সেটা অভিভাবকদের খোঁজখবর নেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য মাদকাসক্ত রোগীদের সঙ্গে সবাইকে যুক্ত করতে হয়। যাতে সবাই দেখে-বুঝে রোগীকে একটি ভালো জায়গায় ভর্তি করাতে পারেন। কারণ, দেশের সব নিরাময়কেন্দ্রের মান সমান নয়। অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, রোগী নিরাময়কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় তার অবস্থা অগের তুলনায় বেশি খারাপ হয়। এ জন্য নিরাময়কেন্দ্রে রোগী ভর্তি করার আগে তাদের সেবার গুণগত মান যাচাই করে ভর্তি করাতে হবে। তা না হলে অর্থ, সময়—সবই নষ্ট হবে।
প্রশ্ন: আমি একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিলাম। সেখানে খাওয়াদাওয়ার মান খারাপ। পরিবেশ খারাপ। এ বিষয়ে আপনাদের অভিমত কী?
উত্তর: মাদকাসক্ত রোগীরা প্রথম দিকে তেমন খেতে পারে না। কারণ, তখন মাদকের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল থাকেন। এ সময় ক্ষুধা কম থাকে। কিন্তু ঠিকমতো চিকিৎসা হলে ধীরে ধীরে নির্ভরশীলতা কমে আসে। তখন তাদের ক্ষুধা বৃদ্ধি পায় এবং বেশি খাবারের প্রয়োজন হয়। কোনো নিরাময়কেন্দ্রে পেশাদার চিকিৎসক না থাকলে তাঁরা এ বিষয়গুলো ধরতে পারেন না। ফলে ভারসাম্য খাবারের অভাবে দুর্বলতা তৈরি হতে পারে।
অভিভাবকদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে মাদকাসক্ত রোগীদের অনেক দুর্ভোগ হয়। যেমন অভিভাবকেরা তাড়াহুড়ো করে হাতের কাছে যেখানে পান, সেখানে ভর্তি করান। ফলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপের দিকে চলে যায়। এ জন্য মাদকাসক্ত রোগীদের ক্ষেত্রে সমন্বিত পরিকল্পনা করতে হয়। যাতে সবাই খোঁজখবর নিয়ে একটি ভালো জায়গায় ভর্তি করাতে পারেন। কারণ, দেশে অনেক নিরাময়কেন্দ্র আছে। সব নিরাময়কেন্দ্রের চিকিৎসার মান সমান নয়। কিছু ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায়, নিরাময়কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার সময় রোগীর অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়। এ জন্য অবশ্যই রোগীকে কোথাও ভর্তি করার আগে সেই প্রতিষ্ঠানের সেবার গুণগত মান সম্পর্কে জেনে-শুনে ভর্তি করাতে হবে। অন্যথায় সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে।
প্রশ্ন: আমরা কীভাবে বুঝব কোন নিরাময়কেন্দ্র ভালো? এ ক্ষেত্রে আপনারাও কোনো দিকনির্দেশনা দেন না।
উত্তর: চেষ্টা করলে নিজেরাই খুঁজে বের করতে পারবেন কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। আমরা প্রায়ই লক্ষ করে থাকি, অভিভাবকেরা খুব একটা খোঁজখবর করেন না। হাতের কাছে যেখানে পান, তাড়াহুড়ো করে সেখানেই ভর্তি করান। একটা বিষয় ভাবতে হবে, মাদকাসক্ত রোগীর ক্ষেত্রে কোনো প্রকার তাড়াহুড়ো করা যাবে না। ঠিকভাবে জেনে-বুঝে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে মাদকের চিকিৎসা হয়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এ ছাড়া দেশের অন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে আসতে পারেন। সর্বোপরি যেখানেই আপনার সন্তান, আত্মীয়স্বজন বা নিকটজন, যাকেই চিকিৎসা করান না কেন, জেনেশুনে চিকিৎসা করান। কারও যদি পায়ে ব্যথা, মাথাব্যথা বা হাত-পা ভেঙে যায় বা যা-ই হোক না কেন, তিনি নিশ্চয়ই খোঁজখবর নিয়ে ভালো জায়গায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। তেমনি মাদকাসক্ত রোগীর বেলায় আরও বেশি খোঁজখবর নেওয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন: আমার সন্তান একটি নিরাময়কেন্দ্রে ছিল। কয়েক মাস চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু সেখানে ভালো হয়নি। সে এখন বাসায় আছে। এ অবস্থায় আমি কী করতে পারি?
উত্তর: সে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় এসেছে কি না, আমরা জানি না। সব ক্ষেত্রে যে হাসপাতালের সমস্যা তা কিন্তু নয়। রোগীরা অনেক সময় চিকিৎসকদের পরামর্শমতো চলাফেরা করেন না। ঠিকমতো ওষুধ খান না। অধিকংশ রোগীই নিরাময়কেন্দ্রে থাকতে চান না। কারণ, এখানে বাইরের মতো অবাধ ঘোরাফেরা করতে পারে না। মাদক গ্রহণ করতে পারেন না। খারাপ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে মিশতে পারে না। তারা চায় নিরাময়কেন্দ্রের বাইরে থাকতে। যে কারণে কেন্দ্র সম্পর্কে অভিভাবকদের অনেক মিথ্যা কথা বলে। আর আপনি যে কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করলেন আমাদের জানামতে, এ কেন্দ্রটি দেশে দীর্ঘদিন ধরে ভালো সেবা দিয়ে আসছে। মাদকাসক্ত রোগীরা বারবার ভালো হয়, আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক বেশি ধৈর্যশীল হতে হয়। নিশ্চয়ই হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় চিকিৎসকেরা তাকে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। চিকিৎসকদের নির্দেশনা ঠিকমতো মেনে চলার ব্যবস্থা করুন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
প্রশ্ন: আমার সন্তান চার মাস নিরাময়কেন্দ্রে ছিল। ভালো হয়ে বাসায় এসেছে। আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছি। কিন্তু কিছুদিন পর লক্ষ করি, সে আবার মাদক গ্রহণ শুরু করেছে। এখন কী করব?
উত্তর: একটা বিষয় বারবার বলে থাকি। নিরাময়কেন্দ্র বা হাসপাতাল থেকে বেরোলেই রোগীর চিকিৎসা শেষ হয় না। অধিকাংশ অভিভাবকেরা মনে করেন, হাসপাতাল থেকে ভালো হয়ে ফিরেছে মানে রোগী সুস্থ হয়েছে। এ ধারণাটি হয়তো অন্য রোগের ক্ষেত্রে ঠিক কিন্তু মাদকাসক্ত রোগীর ক্ষেত্রে মোটেই ঠিক নয়। একজন মাদকাসক্ত রোগীর সম্পূর্ণ ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগে। এই সময়টা তাকে এক ধরনের চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হয়। রোগীকে নিরাময়কেন্দ্রে মাদক দেওয়া হয় না। তা ছাড়া মাদকের ওপর নির্ভরশীলতা কমানের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। এসব কারণে নিরাময়কেন্দ্রে ভালো থাকে। কিছুদিন নিরাময়কেন্দ্রে রাখলে চিকিৎসা শেষ হয় না। বাইরে মাদক গ্রহণের নানা ধরনের সুযোগ থাকে। নিরাময়কেন্দ্রে এ সুযোগ থাকে না। নিরাময়কেন্দ্রে মাদকমুক্ত থাকার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রশ্ন: একজন মাদকাসক্ত রোগীর সম্পূর্ণ সুস্থ হতে কত দিন সময় লাগে?
উত্তর: এটা নির্ভর করে রোগী কত দিন ধরে মাদক গ্রহণ করছে। তার শারীরিক, মানসিক অবস্থা কোন পর্যায় তার ওপর। কারও সময় কিছু কম লাগে, আবার কারও বেশি। তবে সাধারণত আমাদের দেশে যেসব রোগী দেখা যায়, তাদের সম্পূর্ণ ভালো হতে দুই বছরের মতো সময় লাগে। কিন্তু এখানে শর্ত আছে। চিকিৎসার পর দুই বছরের মধ্যে সে আর মাদক গ্রহণ করতে পারবে না। দুই বছরের মধ্যে যদি মাদক গ্রহণ করে তাহলে তার সময় আরও বেশি লাগবে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি একাধারে দুই বছর মাদক গ্রহণ না করে, তাহলে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করা যায়।
প্রশ্ন: একজন মাদকাসক্ত রোগীকে কি দুই বছর হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে?
উত্তর: না। দুই বছর একটা দীর্ঘ সময়। প্রতিটি হাসপাতালের একটি নিজস্ব চিকিৎসার প্রক্রিয়া আছে। এ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা নিলে সাধারণত দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে রোগী মাদকমুক্ত হয়। প্রতিটি হাসপাতালের এক ধরনের খরচও আছে। যাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তাঁরা ইচ্ছে করলে বেশি দিন রাখতে পারেন। অনেকের বেশি দিন হাসপাতালের খরচ বহন করার ক্ষমতা থাকে না। তাঁরা রোগীকে বাসায় বা বাড়ি নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু একটা কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে যে রোগীর চিকিৎসা শেষ হয়ে যায়নি। দুই বছরের মধ্যে চার মাস হাসপাতালে চিকিৎসা হলে অবশিষ্ট ২০ মাস বাসায় বা বাড়িতে চিকিৎসা নিতে হবে। কেউ ছয় মাস থাকলে তিনি বাসায় বা বাড়িতে বাকি ১৮ মাস চিকিৎসা নেবেন। এভাবে চলতে থাকবে।
প্রশ্ন: বাড়িতে কীভাবে চিকিৎসা করবে? এর পদ্ধতি কী?
উত্তর: বাসায় বা বাড়িতে চিকিৎসার পদ্ধতি খুবই সহজ। প্রত্যেক রোগীই একসময় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায়। হাসপাতাল থেকে আসার সময় চিকিৎসকেরা তাকে কিছু ওষুধপত্র দেন। কিছু নির্দেশনা দেন। বাসায় বা বাড়িতে আসার পর এ ওষুধগুলো নিয়মিত খেতে হয়। চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চলতে হয়। নির্দেশনার মধ্যে একটা বড় বিষয় থাকে নিয়মিত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা। দুই বছর ধরে চিকিৎসকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করতে পারলে এবং ওষুধ খেতে পারলে শতকরা ১০০ ভাগ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোগীর চলাফেরা সম্পর্কে চিকিৎসকদের বিশেষ কিছু নির্দেশনা থাকে। যেমন, দুই বছরের মধ্যে তার কাছে টাকা দেওয়া যাবে না। মোবাইল ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। মাদকাসক্ত বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দেওয়া যাবে না। যেসব জায়গায় মাদক গ্রহণ করত, সেসব জায়গায় যাওয়া যাবে না। মাদকের ছবি দেখা যাবে না। চিনি বা পাউডার সামনে আনা যাবে না।
প্রশ্ন: অনেকে সিগারেট এবং গাঁজাকে ক্ষতিকর মনে করে না। তারা বলে এগুলো খেলে কিছু হয় না। এ ব্যাপারে আপনাদের অভিমত কী?
পরামর্শ: অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যারা মাদকাসক্ত হয়েছে, তারা প্রায় প্রত্যেকেই ধূমপান দিয়ে নেশা শুরু করেছে। অর্থাৎ ধূমপান করতে গিয়ে একসময় মাদকে জড়িয়ে গেছে। যদি সে ধূমপান না করত, তাহলে মাদক গ্রহণের আশঙ্কা খুব কম থাকত। তা ছাড়া ধূমপানেরই মারাত্মক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর বাংলাদেশে ৫৭ হাজার মানুষ ধূমপানের কারণে মারা যায়। সে হিসাবে প্রতিদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ১৫৬ জন। কোনো বাবা যদি ধূমপান করেন, তাহলে তাঁর স্ত্রীর ফুসফুসে ক্যানসার হতে পারে। সন্তানের শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ (ব্রঙ্কাইটিস) হতে পারে, সন্তান বিকলাঙ্গ হতে পারে। ধূমপানের উল্লেখযোগ্য কিছু ক্ষতিকর দিক হলো, ফুসফুসে ক্যানসার, মুখে ক্যানসার, শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহ, স্ট্রোক, বিকলাঙ্গ ইত্যাদি। এক জরিপে দেখা গেছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মুখের ক্যানসার হয় বাংলাদেশে। এবং সেটা ধূমপানের কারণে হয়। এর পরও ধূমপান করবেন কি না, সিদ্ধান্ত নিন।
গাঁজার মধ্যে ৬০ প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য আছে। ধোঁয়ার মাধ্যমে গাঁজা টানে। গাঁজার ধোঁয়া ফুসফুসে রক্ত এবং মাথার মধ্য দিয়ে কোষে প্রবেশ করে। ৬০ প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যের মধ্যে একটা রাসায়নিক দ্রব্য আছে খুবই ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। এটাকে বলে টিএইচসি (টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনওয়েড)। এটা যদি একবার স্নায়ুকোষের মধ্যে ঢোকে, তাহলে এক বছর থকে এবং বিভিন্নভাবে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে থাকে। অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে। ঘুম, আচরণ ও যৌন সমস্যাসহ নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। সন্দেহপ্রবণতা বেড়ে যায়। ফলে স্ত্রীসহ বাসার মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। স্বামী-স্ত্রীর ডিভোর্সের একটা বড় কারণ গাঁজা সেবন। এ জন্য গাঁজাকে কোনোভাবেই হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। বরং এটা অন্য যেকোনো মাদকের চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন পলা আজিজা।
গ্রন্থণা: আশফাকুজ্জামান
No comments