পিছু তাকাতে চান না মিচু
এখন পর্যন্ত এই মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পরিসংখ্যান দেখলে আপনার ভ্রূ কুঁচকেও যেতে পারে। রুনি, ফন পার্সি, আগুয়েরো, তেভেজ, তোরেসদের কেউ নন; সর্বোচ্চ ১৩ গোল করেছেন সোয়ানসি সিটির একজন, নাম যার মিচু! বলতেই পারেন, এই মিচুটা আবার কে? তিনি যে আসলেই অচেনা-অখ্যাত।
আরও অবাক করা ব্যাপার, তারকাদের ভিড়ে অখ্যাত হয়েও সর্বোচ্চ গোলদাতা বনে যাওয়া মিচু আবার স্ট্রাইকারও নন, একজন মিডফিল্ডার! তার ওপর যখন জানবেন, ২০১১-১২ মৌসুমের আগে কোনো শীর্ষ লিগের খেলার অভিজ্ঞতাই ছিল না, মাত্র এক মৌসুমের অভিজ্ঞতা পুঁজি করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো কঠিন সাগরে বুক চিতিয়ে সাঁতার কাটছেন; চোখ কপালেও উঠে যেতে পারে বৈকি!একের পর এক বিস্ময় উপহার দেওয়া মিচুই এখন প্রিমিয়ার লিগের আলোড়ন। সামনের মৌসুমেই তাঁকে দলে ভেড়ানোর জন্য কাড়াকাড়ি শুরু হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। অথচ এই মৌসুমের শুরুতে সোয়ানসি কোচ মাইকেল লাউড্রপ তাঁকে প্রায় জলের দরে কিনেছেন, মোটে ২০ লাখ ইউরো খরচ করে। খোদ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনই তিন দিন আগে স্বীকার করেছেন, সোয়ানসির হয়ে মাঠে নামার আগে মিচুর নামই শোনেননি। নিজের পরিচয়টা স্যার ফার্গিকে বেশ ভালোভাবেই দিয়েছেন স্পেনের এই ২৬ বছর বয়সী। ওই ম্যাচে ইউনাইটেডকে ২ পয়েন্ট হারাতে বাধ্য করেছেন তিনিই। মিচুর গোলেই সোয়ানসি রুখে দিয়েছে ইউনাইটেডকে।
মিচুর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় আসলে আগের মৌসুমে সেল্টা ভিগো থেকে রায়ো ভায়েকানোতে নাম লেখানোর পরই। গত মৌসুমে দুর্দান্তই খেলেছিলেন লা লিগায়। এর আগে মূলত দ্বিতীয় সারির ফুটবলে খেলে আসা মিচু গতবার লা লিগায় অভিষেকেই করেছিলেন ১৫ গোল। ভায়েকানো অবনমন এড়াতে পেরেছিল মিচুর কল্যাণেই। তখন থেকে হয়তো লাউড্রপ তক্কে তক্কে ছিলেন। হীরাকে যে কাচ ভেবে ভুল করেননি, সেটা তো এখন দেখাই যাচ্ছে। সেই হীরাও তিনি কিনেছেন প্রায় মুফতে! লাউড্রপ এখন তাঁকে খেলাচ্ছেন ‘ফলস নাইন’ হিসেবে। ঠিক প্রথাগত স্ট্রাইকার নন, আবার মিডফিল্ডারও নন।
ধারাবাহিকতার একটা পুরস্কার এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন। ৬ ফেব্রুয়ারি উরুগুয়ের সঙ্গে স্পেনের প্রীতি ম্যাচ। সেই ম্যাচের জন্য প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন দলে। স্বপ্নের মতো সময়ই কাটাচ্ছেন মিচু! এখন আর পিছু তাকাতে রাজি নন। ছুটতে চান কেবলই সামনে। ইংল্যান্ডে একটাই সমস্যা হচ্ছে। ভাষাটা বড্ড খটোমটো লাগছে। তবে যখন বুটজোড়া কথা বলে, মুখে কথা বলারই বা কী দরকার! ওয়েবসাইট, রয়টার্স।
No comments